Books

বিমান সেনা গাইড Pdf Download

বিমান সেনা গাইড Pdf Download free – Bangla Pdf 

আরও পড়ুনঃ
বইয়ের নাম: ইরেজার ভূত
লেখক: সত্যজিৎ বিশ্বাস
প্রকাশনী: প্রিয়মুখ প্রকাশন
প্রকাশকাল: ২০১৯
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ: আহসান হাবীব
প্রকাশক: ফারুক আহমেদ
মুদ্রণ: প্রিয়মুখ প্রিন্টিং প্রেস অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ সলিউশন
ধরন: শিশু কিশোর বই
ISBN – 978-984-92408-8-4
🔗🔗ছোটবেলায় নানা নানী, দাদা দাদুর কাছ থেকে কত ভূতের গল্প শুনেছি আমরা সবাই!! সে মাঝে মাঝে হয় হার হিম করা ভূতের গল্প, আবার সেটা হয় মজার এবং ইন্টারেস্টিং। চলুন দেখা যাক ” ইরেজার ভূত” বইটি হার হিম করা ভূতের গল্প! না মজার ভূতের গল্প!!…..
একটা ছেলে কিভাবে খারাপ থেকে ভালো হয়ে উঠলো তারই একটি গল্প। কে তাকে পুরোপুরি লেখা পড়ায় ফিরিয়ে আনল?
সে কি পুরোপুরি ভালো হয়ে গেছে?
নাকি কোনো ভূত তাকে লেখা পড়ায় ফিরিয়ে দিয়েছে!
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
বইটি শিশুদের নিয়ে লেখা হলেও বইটিতে শিক্ষণীয় অনেক কিছু রয়েছে।
সোহান নামে একটি ছেলে যে লেখা পড়া করে না। দুষ্টুমি করে, প্রথম সাময়িক এবং দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায়, ভালো রেজাল্ট করেনি,
কিভাবে সে পরিবর্তন হয়ে গেলো, সে মন দিয়ে লেখা পড়া করছে, পড়া পারছে, ফাইনাল পরীক্ষা এও সেরা দশ জনের মধ্যে রয়েছে!!! সে কিভাবে তার মনের জোর ফিরে পেলো, সেটা জানতে আপনার পড়তে হবে ” ইরেজার ভূত ” বইটি।
বইয়ের বিবরণ:-
সোহান নামে একটি ছেলে, সে পড়াশোনায় মন বসতেই চায় না! বই খুললেই মনে হয়, তাকে সাইকেল, ক্রিকেট, ইত্যাদি সবাই তাকে ডাকছে, কিন্তু পড়া লেখা তাকে ডাকছে না! এ জন্য সে বাবার কাছে খুব করে বকুনি খায়। তবে তার মা তাকে সব সময় আদর করে, মার ধর করে না।
সোহান লিখতে গেলে তার অনেক বানান ভুল হয়, খালি ইরেজার দিয়ে মুছতে হয়, তার একটা লাল রঙের প্রিয় ইরেজার আছে। সে ভাবে, বানান ভুল হয় পেন্সিলের জন্য, সব দোষ পেন্সিলের!
একদিন সন্ধায়, সে ইরেজার দিয়ে ভুল মুছছিল, এমন সময় কে যেনো তাকে ডেকে উঠলো, এরকম আরো একবার হওয়ার পর, সোহান জানতে পারে, যে ডাকছিল সে নাকি ভূত, ভালো ভূত!! তারা আলাপ পর্ব শেষ করলো, ভূত নাকি এসেছে, সোহানকে পড়া লেখায়মনোযোগী করে তোলবার জন্যে। সেই ভূতের নাম হলো ভূতুল। সে প্রায় সময় সোহানকে ভালো ভালো উপদেশ দিতে থাকে, সু- মন কু- মন সম্পর্কে বোঝাতে থাকে, সোহান প্রমিজ করে সে আগামী কল থেকে লেখা পড়া করবে, ভালো হয়ে চলবে, দুষ্টুমি করবে না। আগামী কাল সোহানের মা বাবা চমকে উঠলো!! যে সোহান লেখাপড়ায় মন বসায় না সে আজকে মন দিয়ে পড়ছে, বাবাকে টপাটপ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে, যে সোহান দুধ খায় না সে আজকে নিজেই দুধ খেতে চাইছে। দেখতে দেখতে তার ফাইনাল পরীক্ষা চলে এলো, মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করায় সে ভালোভাবেই পরীক্ষা দিল। এখন সোহান আর ভুতুল গল্প করে মজা করে, এমনি করে করে, রেজাল্টের দিন চলে আসে, সোহান ভুতুলকে জিজ্ঞেস করে ,কাল কি রেজাল্ট হবে, সে পরপর প্রথম টার্ম, সেকেন্ড টার্ম পরীক্ষায় ফেল করে, এবার না জানি কি হয়, পরদিন রেজাল্ট আনতে গিয়ে সবাই হতভম্ভ। সোহান পাশ করেছে, এবং সেরা দশ জনের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে!!
এবার ভুতুল সোহানের কাছ থেকে বিদায় নিতে চাইলো! সোহান এবং ভুতুল খুবই দুঃখ পেলো। ভুতুল বলে,” তার মত এরকম আরো ছেলে আছে যারা মন দিয়ে পড়ালেখা করে না তাদের কেও পড়ালেখায় ফিরিয়ে আনতে হবে।”
তবে প্রতি মাসে একবার করে ভুতুল সোহানের সাথে দেখা করবে। ঠিক এই সময়ে তার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে এবং এরপরই তার লাল ইরেজার কে আর দেখতে পাচ্ছে না। মা পেছন থেকে এসে বলে কি খুঁজছিস? সোহান কোনো কথা না বলে মা কে জড়িয়ে কাদতে থাকে, মাও কাদতে থাকে, বাবা পাশের ঘর থেকে নানা রকম মিষ্টি নিয়ে সোহানের ঘিরে ঢোকে। কিছু ক্ষণ পর বাবা বলে ” পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে কেউ কাদে! আজকালকার ছেলে পেলেরা যে কেমন সেটা বুঝি না!
সোহান মনে মনে বলে, আমি ভূতুলের কথা কাউকে বলবে না। প্রমিজ।
বইয়ের কিছু অংশ:
গত অক্টোবর মাসে জন্মদিনে গুনে গুনে নয়টা মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়েছে সোহান। নয় প্লাস সোহানের প্রিয় কাজ মোবাইলে গেম খেলা আর চকোলেট খাওয়া। আর অপ্রিয়, অসহ্যকর কাজ হলো পড়ার বই খোলা। বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, সমাজ, বিজ্ঞান প্রতিটা বিষয়ের বইয়ের কথা মনে হলেই জ্বর আসে। সোহান মনে মনে ভাবে, কার্টুনের বইগুলোর প্রচ্ছদ এত সুন্দর হয়! দেখলেই ইচ্ছা করে হাত বোলাতে, গাল ঘষতে।
আর কী অদ্ভুত কাণ্ড, স্কুলে পড়ার একটা বইয়ের প্রচ্ছদও সুন্দর না যে দেখতে ইচ্ছা করবে, কাছে ইচ্ছা করবে।আর কী অদ্ভুত কাণ্ড, স্কুলে পড়ার একটা বইয়ের প্রচ্ছদও সুন্দর না যে দেখতে ইচ্ছা করবে, কাছে টানতে ইচ্ছা করবে। মলাটের ভেতরের অবস্থা তো আরো খারাপ। বাংলা যুক্তাক্ষরগুলোকে মনে হয় টাইটানিক সিনেমার ডুবো পাহাড়। উচ্চারণের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই। ওগুলো যেন তৈরি হয়েই আছে বই খুললেই আক্রমণ করবে বলে। ইংরেজি কঠিন বানানগুলো যেনো ছোট বাচ্চাদের হিবি জিবি আঁকা, ছোট বাচ্চারা যেমন হামাগুড়ি দিতে দিতে হঠাৎ কলম পেলে কাগজে ইচ্ছেমতো আঁকে, সে আঁকা বোঝার সাধ্য কারো থাকে না- ইংরেজি বানানগুলো ঠিক তেমনই। সবগুলো বর্ণ একসঙ্গে মিলিয়ে শব্দ সঠিক উচ্চারণ করা কি যেই সেই কথা?অঙ্ককে যতটা ভয় লাগে, নামতাটাকেও তাই। কে যে অঙ্কের মতো বিদঘুটে বিষয়টা আবিষ্কার করল কে জানে? অঙ্ক কি শিখতে হয় খাতাকলমে? মুখে মুখেই তো অঙ্ক করা যায়। এই যেমন, আমার কাছে ১০টা কলা আছে। কেউ চারটা খেয়ে নিলে আরো ছয়টা থাকবে। অথবা আমার ১০টা চকোলেট আছে। মা আরো ১০টা চকোলেট দিলে মোট কয়টা চকলেট হবে? উত্তর হবে- ২০টা চকোলেট। ইসস, বইয়ের সব অঙ্ক যদি এমনই থাকত।সোহানকে মা একটু বেশিই আদর করে। বাবা পড়ার জন্য বকা দিলে মা অনেক কষ্ট পায়। বাবার একটা বড় দোষ হলো বাবা গল্প করে, বুঝিয়ে পড়াতে পারে না। পড়াতে বসলে শুধু বানান জিজ্ঞাসা করে। ভয়ে তখন সোহানের চোখে জল জমতে শুরু করে। এমনই বানানগুলোকে জিলাপির প্যাঁচের মতো মনে হয়, তখন তো আরো হিজিবিজি হিজিবিজি মনে হয়। একটা বানান ভুল হলে বাবা তখন প্রতিটা বানান ২০ বার করে লেখায়। পেন্সিল দিয়ে এতবার করে লিখতে গিয়ে হঠাৎ ভুল করে ফেললে আবার ইরেজার নিয়ে ডলাডলি শুরু করতে হয়।কিন্তু সে কথা সোহানের বাবা বুঝলে তো?
এমনই এক রাতে ভুল হওয়া কঠিন বানানগুলো লিখছিল সোহান। মন না থাকায় বার বার ভুল হয়ে যাচ্ছিল। অথচ ভুরু কুঁচকে পেন্সিলটার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছিল যেন সব দোষ পেন্সিলের। লাল রঙের ইরেজারটা দিয়ে যেই না মুছতে গেল ওমনি একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। কে যেন ফিক করে হেসে দিল। সোহান চট করে মাথা ঘুরিয়ে দেখে ঘরে তো কেউ নেই। তাহলে?মনের ভুল ভেবে আবার লিখতে বসল। আবারো যখন বদমাশ পেন্সিলটা ভুল বানান লিখল, ইরেজারটা দিয়ে মুছতে যেতেই কে যেন ফিক করে হেসে উঠল। হাসির শব্দটা খুব কাছ থেকে এলো। সোহান মাথা ঘুরিয়ে শব্দের উৎস খুঁজতে যেতেই লাল রঙের ইরেজার থেকে কে যেন ডেকে উঠল, এই সোহান, তুমি আমার বন্ধু হবে?কী ব্যাপার, ইরেজার কোনোদিন কথা বলতে পারে? সোহান ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো, কে? কে আমার এত পছন্দের লাল টুকটুকে ইরেজারের ভেতর? অমনি আবার কে জানি বলে উঠল, আগে প্রমিজ করো, আমার কথা কাউকে বলবে না। তারপর বলব, আমি কে? আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, যদি আমার কথা কাউকে বলে দাও, তাহলে তোমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার অনেক বড় ক্ষতি হবে।সঙ্গে সঙ্গেই সোহান প্রমিজ করল, না, কাউকে বলব না। এমনকি আমার সবচেয়ে আদরের, প্রিয় মাকেও বলব না। এবার বলো, তুমি কে? ইরেজার থেকে আবার সেই কণ্ঠ ভেসে এলো, আমি হলাম ভালো ভূতের ছেলে। আমার নাম ভুতুল। সোহান ভয়ে ভয়ে বলল, তুমি ভূ -উ-উ-উ-ত? ইয়ে মানে আমি ভূত খুব ভয় পাই। প্লিজ আমাকে মেরে ফেলো না। আমি তো তোমার কোনো ক্ষতি করিনি।
হা, হা, হা করে হাসতে হাসতে সেই কণ্ঠ বলল, তুমি শোনোনি আমি কী বলেছি? আমি উপকারী ভূত বংশের ছেলে। কারো অনিষ্ট করার রেকর্ড আমার নেই। সোহান ভুরু কুঁচকে বলে, তাই কখনো হয়? ভূত কখনো ভালো হয়? হাসিমাখা কণ্ঠ আরো জোরে হেসে বলল, তোমরা মানুষেরা সবাই কি ভালো? ভালো মানুষ, খারাপ মানুষ আছে না? তাই যদি থাকে তবে ভালো ভূত, খারাপ ভূত থাকবে না কেন? যখন দেখি তোমার মতো কোনো বাচ্চার বিশেষ সাহায্যের প্রয়োজন, তখনই আমি তার কাছে যাই। তোমাকে দেখে আমার খুব কষ্ট লেগেছে সোহান। তুমি যখন অঙ্ক পারো না কিংবা বানান পারো না আমার খুব খারাপ লাগে। টিচাররা যখন তোমাকে বকে তখনো খুব খারাপ লাগে। সোহান অবাক হয়ে বলে, তুমি সব জানো? ভুতুল বলে চলে, তোমার ফার্স্ট টার্ম, সেকেন্ড টার্মের রেজাল্টও ভালো না। ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট গত অক্টোবর মাসে জন্মদিনে গুনে গুনে নয়টা মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়েছে সোহান। নয় প্লাস সোহানের প্রিয় কাজ মোবাইলে গেম খেলা আর চকোলেট খাওয়া। আর অপ্রিয়, অসহ্যকর কাজ হলো পড়ার বই খোলা। বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, সমাজ, বিজ্ঞান প্রতিটা বিষয়ের বইয়ের কথা মনে হলেই জ্বর আসে। সোহান মনে মনে ভাবে, কার্টুনের বইগুলোর প্রচ্ছদ এত সুন্দর হয়! দেখলেই ইচ্ছা করে হাত বোলাতে, গাল ঘষতে।
আর কী অদ্ভুত কাণ্ড, স্কুলে পড়ার একটা বইয়ের প্রচ্ছদও সুন্দর না যে দেখতে ইচ্ছা করবে, কাছে টানতে ইচ্ছা করবে। মলাটের ভেতরের অবস্থা তো আরো খারাপ। বাংলাযুক্তাক্ষরগুলোকে মনে হয় টাইটানিক সিনেমার ডুবো পাহাড়। উচ্চারণের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই। ওগুলো যেন তৈরি হয়েই আছে বই খুললেই আক্রমণ করবে বলে। ইংরেজি কঠিন বানানগুলো যেন ছোট বাচ্চাদের হিবিজিবি আঁকা। ছোট বাচ্চারা যেমন হামাগুড়ি দিতে দিতে হঠাৎ কলম পেলে কাগজে ইচ্ছেমতো আঁকে, সে আঁকা বোঝার সাধ্য কারো থাকে না- ইংরেজি বানানগুলো ঠিক তেমনই। সবগুলো বর্ণ একসঙ্গে মিলিয়ে শব্দ সঠিক উচ্চারণ করা কি যেই সেই কথা?
অঙ্ককে যতটা ভয় লাগে, নামতাটাকেও তাই। কে যে অঙ্কের মতো বিদঘুটে বিষয়টা আবিষ্কার করল কে জানে? অঙ্ক কি শিখতে হয় খাতাকলমে? মুখে মুখেই তো অঙ্ক করা যায়। এই যেমন, আমার কাছে ১০টা কলা আছে। কেউ চারটা খেয়ে নিলে আরো ছয়টা থাকবে। অথবা আমার ১০টা চকোলেট আছে। মা আরো ১০টা চকোলেট দিলে মোট কয়টা চকলেট হবে? উত্তর হবে- ২০টা চকোলেট। ইসস, বইয়ের সব অঙ্ক যদি এমনই থাকত।সোহানকে মা একটু বেশিই আদর করে। বাবা পড়ার জন্য বকা দিলে মা অনেক কষ্ট পায়। বাবার একটা বড় দোষ হলো বাবা গল্প করে, বুঝিয়ে পড়াতে পারে না। পড়াতে বসলে শুধু বানান জিজ্ঞাসা করে। ভয়ে তখন সোহানের চোখে জল জমতে শুরু করে। এমনই বানানগুলোকে জিলাপির প্যাঁচের মতো মনে হয়, তখন তো আরো হিজিবিজি হিজিবিজি মনে হয়। একটা বানান ভুল হলে বাবা তখন প্রতিটা বানান ২০ বার করে লেখায়। পেন্সিল দিয়ে এতবার করে লিখতে গিয়ে হঠাৎ ভুল করে ফেললে আবার ইরেজার নিয়ে ডলাডলি শুরু করতে হয়। যত ডলাডলি করা হয়, ততই লেখাটাও কষ্ট পায়, ইরেজারও কষ্ট পায়। সোহানেরও হাত ব্যথা শুরু হয়। কিন্তু সে কথা সোহানের বাবা বুঝলে তো?
এমনই এক রাতে ভুল হওয়া কঠিন বানানগুলো লিখছিল সোহান। মন না থাকায় বার বার ভুল হয়ে যাচ্ছিল। অথচ ভুরু কুঁচকে পেন্সিলটার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছিল যেন সব দোষ পেন্সিলের। লাল রঙের ইরেজারটা দিয়ে যেই না মুছতে গেল ওমনি একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। কে যেন ফিক করে হেসে দিল। সোহান চট করে মাথা ঘুরিয়ে দেখে ঘরে তো কেউ নেই। তাহলে?মনের ভুল ভেবে আবার লিখতে বসল। আবারো যখন বদমাশ পেন্সিলটা ভুল বানান লিখল, ইরেজারটা দিয়ে মুছতে যেতেই কে যেন ফিক করে হেসে উঠল। হাসির শব্দটা খুব কাছ থেকে এলো। সোহান মাথা ঘুরিয়ে শব্দের উৎস খুঁজতে যেতেই লাল রঙের ইরেজার থেকে কে যেন ডেকে উঠল, এই সোহান, তুমি আমার বন্ধু হবে?
সঙ্গে সঙ্গেই সোহান প্রমিজ করল, না, কাউকে বলব না। এমনকি আমার সবচেয়ে আদরের, প্রিয় মাকেও বলব না। এবার বলো, তুমি কে? ইরেজার থেকে আবার সেই কণ্ঠ ভেসে এলো, আমি হলাম ভালো ভূতের ছেলে। আমার নাম ভুতুল। সোহান ভয়ে ভয়ে বলল, তুমি ভূ -উ-উ-উ-ত? ইয়ে মানে আমি ভূত খুব ভয় পাই। প্লিজ আমাকে মেরে ফেলো না। আমি তো তোমার কোনো ক্ষতি করিনি।
হা, হা, হা করে হাসতে হাসতে সেই কণ্ঠ বলল, তুমি শোনোনি আমি কী বলেছি? আমি উপকারী ভূত বংশের ছেলে। কারো অনিষ্ট করার রেকর্ড আমার নেই। সোহান ভুরু কুঁচকে বলে, তাই কখনো হয়? ভূত কখনো ভালো হয়হাসিমাখা কণ্ঠ আরো জোরে হেসে বলল, তোমরা মানুষেরা সবাই কি ভালো? ভালো মানুষ, খারাপ মানুষ আছে না? তাই যদি থাকে তবে ভালো ভূত, খারাপ ভূত থাকবে না কেন? যখন দেখি তোমার মতো কোনো বাচ্চার বিশেষ সাহায্যের প্রয়োজন, তখনই আমি তার কাছে যাই। তোমাকে দেখে আমার খুব কষ্ট লেগেছে সোহান। তুমি যখন অঙ্ক পারো না কিংবা বানান পারো না আমার খুব খারাপ লাগে। টিচাররা যখন তোমাকে বকে তখনো খুব খারাপ লাগে। সোহান অবাক হয়ে বলে, তুমি সব জানো? ভুতুল বলে চলে, তোমার ফার্স্ট টার্ম, সেকেন্ড টার্মের রেজাল্টও ভালো না। ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট খুব ভালো না হলে তোমাকে ওপরের ক্লাসে ওঠার পারমিশন দেয়া হবে না। ঠিক কিনা বলো? সোহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, হুম। তোমরা মানুষেরা সারাজীবন তো ভূতদের দোষই দিয়ে গেলে, ভূতদের ভালো কিছু দেখলে না। আমার মা যেভাবে তোমাকে সাহায্য করার জন্য কয়েকদিনের জন্য তোমার কাছে পাঠাল, তোমরা পাঠাতে? তোমার বাবা এমনিই গরম মেজাজের, তার ওপর পড়া না পারলে তোমাকেকেমন বকা দেয় বলো? আমি নিজের কানে শুনেছি তোমাকে কানমলা দিয়ে বলতে, ‘ইচ্ছে করে পড়াশোনায় মন দাও না, তাই না? যদি শক্ত মার দেই, এখনই মাথা থেকে দুষ্টুমির ভূত নেমে যাবে।’ শুনে আমি আর আমার মা-বাবা সবাই অনেক হাসলাম। যে নিজেই রেগে ভূত হয়ে যায়, সে কী করে ছেলেকে আবার ভূত তুলে গালি দেয়?
বইটি কেনো পড়বেন এবং কিনবেন?
বইটি ছোটদের নিয়ে লেখা হলেও, এর মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় কিছু রয়েছে, যেমন: কিভাবে পড়াশোনায় মন বসাতে হয়, সু- মন কু – মন সম্পর্কে ধারণা, ইত্যাদি। পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন কেনো আমি বলছি, বইটি থেকে ছোটরা অনেক কিছু শিখতে পারবে। একটি ছেলে কিভাবে খারাপ থেকে ভালো হয়ে যায়, তার একটি গল্প নিয়ে করা হয়েছে এই বইটি। সুতরাং, বইটি আপনারা নির্দ্বিধায় পড়তে পারেন।
 প্রচ্ছদ এবং প্রোডাকশন কোয়ালিটি:
এ বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন বিখ্যাত কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব।
ছোটদের জন্য সুন্দর ভাবে সাজানো হয়েছে এ বইটি, এ বইটির প্রোডাকশন কোয়ালিটি দেখতে গেলে বইটি বেশ ভালো করা হয়েছে, আশা করি আপনাদেরও খুব ভালো লাগবে বইটি এবং বিশেষ করে শিশু কিশোরদের।
 সোহান: তার বয়স ৯ বছর। নয় প্লাস সোহানের প্রিয় কাজ মোবাইলে গেম খেলা আর চকোলেট খাওয়া। আর অপ্রিয়, অসহ্যকর কাজ হলো পড়ার বই খোলা। বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক, সমাজ, বিজ্ঞান প্রতিটা বিষয়ের বইয়ের কথা মনে হলেই জ্বর আসে। সোহান মনে মনে ভাবে, কার্টুনের বইগুলোর প্রচ্ছদ এত সুন্দর হয়! দেখলেই ইচ্ছা করে হাত বোলাতে, গাল ঘষতে।
ভুতুল (অর্থাৎ ইরেজার ভূত): বইটির অন্যতম চরিত্র ভুতুল, একটি বাচ্চা ভূত, ভালো মনের ভূত, দুষ্টু নয়, খারাপ নয়। যে সবাইকে ভালো উপদেশ দেয়।
চরিত্র বিশ্লেষণ:
বইটিতে বিশেষ ভাবে দুটি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে, প্রথমটি হলো সোহান, যে পড়া লেখায় মোটেও মনোযোগী নয়, প্রথম সাময়িক এবং দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে নি, অন্যদিকে, তার ভূত বন্ধু ভুতুল যে একটু বাচ্চা ভূত, সে সোহানকে পুরোপুরি লেখা পড়ায় ফিরিয়ে আনে।
গল্পে এই দুটি চরিত্র বেশি উঠে এসেছে। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্র ও তুলে ধরা হয়েছে। যেমন: বাবা, মা, শিক্ষক, বন্ধু
ইত্যাদি।
বইটিতে যে লাইন গুলো শিক্ষণীয় :-
(১) মন দিয়ে পড়লে কেউ কোনোদিন পড়া ভোলে না। কাল সকাল থেকে চেষ্টা করে দেখো। পড়াকে ভালোবাসলে পড়াও তোমাকে ভালোবাসবে। আরো একটা কথা, বাবা তোমাকে বকা দেয় তো তোমার ভালোর জন্যই। তাই বাবার ওপর মনে মনে রাগ পুষে রেখো না বন্ধু
(২) পড়াকে ভালোবাসলে পড়াও তোমাকে ভালোবাসবে।
(৩) ভালো কোনো শিক্ষা নিজের ঘর থেকেই শিখতে হয়।
(৪) মন দুই প্রকার। একটা হলো সু-মন। আরেকটা কু-মন।
(৫) সু- মনের কাজ হলো মন দিয়ে পড়ালেখা করা, টিচারদের, মুরব্বিদের কথা শোনা, সম্মান করা, কারো সঙ্গে বেয়াদবি না করা, বড়দের সঙ্গে দেখা হলে প্রথমেই সালাম দেয়া, খাওয়ার সময় খাওয়া, খেলার সময় খেলা করা, সবসময় খেলার কথা মাথায় না আনা, সব সময় ভিডিও গেম, টেলিভিশন না দেখা, অলসতা না করা, পড়ার ভয়ে বেশি বেশি না ঘুমানো আর সব সময় হাসি- খুশি থাকা
(৬) একজন ভালো হবে না খারাপ হবে সেটা আর কেউ ঠিক করে না, ঠিক করে হলো মন।
(৭)তবে একটা কথা সব সময় মনে রাখবে, যুদ্ধ করুক আর মারামারি কাটাকাটি যা-ই করুক সু-মন, কু-মন দুজনেই কিন্তু তোমার চাকর। তুমি তাদের মালিক। ওরা তোমারটা খায় তোমারটা ই পড়ে।
 বইটিতে ইন্টারেস্টিং, মজা এবং প্রিয় যে লাইন গুলো:-
(১)সবারই তো শখ থাকে, তাই না? তাহলে বলো তো- শখ কয় প্রকার প্রশ্ন শুনে অনেক ভেবেও উত্তর খুঁজে পায় না ভুতুল। সোহান হাসতে হাসতে বলে শখ দুই প্রকার। এক নম্বর হলো ভূতে পাওয়া শখ। দুই নম্বর অদ+ভূত শখ। দুজনেই হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে।
(২) এখন থেকে সত্যি দুষ্টুমি কমিয়ে দেব আর সু-মনের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করবো।
(৩) এবার বল তো, আলোর গতি বেশি না শব্দের গতি বেশি? লাফ দিয়ে উঠে সোহান বলে, আলোর গতি বেশি। ভুতুল হা, হা, হা করে উঠতেই রেগে যায় সোহান। হাসছো কেন? বিজ্ঞান বইয়ে লেখা আছে তো, আলোর গতি বেশি। সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল।
(৪)ভুতুল হাসতে হাসতে বলে, তাই নাকি? ঊল তো এরচেয়েও গতি বেশি কার? সোহান চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞাসা করে- কার?
মনের গতি।
(৫) সোহানের আব্বু বলে, রেজাল্ট ভালো হলে কারো এত মন খারাপ হয়- এই প্রথম দেখলাম। আজকালকার ছেলেপুলেগুলো যে কেমন, কিছুই বুঝি না।
গল্পের শুরু এবং এন্ডিং:
গল্পের শুরুতে দেখা যায় সোহান নামে। একটি ছেলে পড়া লেখায় বাজে, পড়া শোনায় ভালো নয়, এবং এন্ডিং এ দেখা যায়, সোহান পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করেছে, এর মধ্যে রহস্য টা কি!
একটা বাচ্চা ভূত তাকে পড়া লেখায় ফিরিয়ে এনেছে, তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে, সুন্দর সুন্দর কথা, যুক্তি, উক্তি দিয়ে। তারা বেশ মজাও করেছে, সব মিলিয়ে বইটি মজার, শিক্ষনীয়, এবং সুন্দর একটি বই।
বইটির উৎসর্গ:
” তিন রাজকন্যাকে
স্বস্তিকা, অনুশকা, রুদ্রনী
 কারা কারা বই টি পড়তে পারবে?
বইটি যেহেতু শিক্ষণীয় এবং মজার, সেজন্য আমি বলবো, ৬ বা ৭ বছর থেকে ১১ বা ১২ বছর বয়স পর্যন্ত সবাই পড়তে পারবে, এছাড়াও ১৩ থেকে বাকি সবাই বইটি বেশ ভালো ভাবে পড়তে ও উপভোগ করতে পারবে বলে আশা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!