West Bengal Book Pdf Download (All)

West Bengal Board Class 11 English book PDF

Chhaya Prakashani West Bengal Board Class 11 English book PDF free download link in google drive:

Download English Book for Class 11 link


আরো পড়ুন:
বই: চতুরঙ্গের অশ্বারোহী
লেখক: সিদ্দিক আহমেদ
❝শুধু তাই না, চারটা পক্ষও থাকতো সেখানে। মডার্ন দাবায় তো দুটো পক্ষ মাত্র। তখন ছিল চারটা পক্ষ। বাকি তিনজনের একজনকে ধরা হত মিত্র হিসেবে বাকিরা ছিল অমিত্র। মিত্র, অমিত্র যাকেই জয় করেন না কেন, প্রতিটা বিজয়ের আলাদা নাম ছিল।অমিত্র দুজনের কাউকে জয় করলে তাকে বলা হয় সিংহাসন জয়। আমার সবচেয়ে প্রিয় জেতার নাম হচ্ছে চতুরাজি। এ জয়টা খুব দুঃসাধ্য ছিল। কারণ এতে দুই অমিত্র শুধু না মিত্রকেও জয় করতে হত। এখান থেকেই চাতুর্য কথাটা এসেছে কিন্তু।❞
|| কাহিনী সংক্ষেপ ||
খুলনা শহরের আন্ডারওয়ার্ল্ডের উপাখ্যান চতুরঙ্গের অশ্বারোহী। শহরের দুই প্রান্তের দুই ডন, তৃতীয় পক্ষ আর ধূসর চরিত্রের পুলিশের ইঁদুড়-বেড়াল দৌঁড় কাহিনী এ বই। তবে তৃতীয় পক্ষের পরিচয়টা সবার অজানা। একে একে শহরে দোজখ কায়েম করছে চতুরঙ্গে পারদর্শী তৃতীয় পক্ষ। সাব ইন্সপেক্টর হাদী আর তার এসিস্ট্যান্ট কাম কাছের বন্ধু বাবুল কিনারা করতে পারছে কোন কিছুর। থামাতে হবে অবশ্যম্ভাবী গ্যাং ওয়ার। তবে তৃতীয় পক্ষ তার চতুরঙ্গে ‘শাহমাত’ করতে ব্যস্ত, সিদ্ধহস্তও বটে। ফলাফল কী দাঁড়াবে শেষমেশ?
|| চরিত্র ||
প্রথমেই বলি হাদী আর বাবুলের জুটি ছিল বইয়ের প্রাণ। প্রতিটা ক্যারেক্টারই ছিল ওয়েল ডেভেলপড। দাদা চরিত্র বই শেষেও অন্ধকারে রয়ে গেছে। লেখক বই যেই নোটে শেষ করেছেন তাতে বোঝাই যাচ্ছে দ্বিতীয় কিস্তি আসছে।
গ্যাং লর্ড মোজাফফর আর জামশেদ চরিত্রগুলো মোটাদাগে ঠিকঠাক।
এছাড়া ক্রিকেটার সরফরাজ, সাংবাদিক সামিয়ার চরিত্রগুলোও বেশ ছিল। তবে পুরো বইয়ে দাদা চরিত্রের উপস্তিতি সবচেয়ে বেশি থাকলেও তিনি আপাতত অন্ধকারেই রয়ে গেলেন।
|| আলোচনা ||
বইটা একটা স্লো বার্নার। চ্যাপ্টার টু চ্যাপ্টার টুইস্ট দিয়ে ডোপামিন রিলিজে সাহায্য করবে না বইটা। ধীর সুস্থ সাসপেন্স থ্রিলার পাঠকদের জন্য মোক্ষম একটা বই।
বইটা লিখতে লেখক বেশ রিসার্চ করেছেন। এমনিতেও খুলনা শহরে ডনদের উৎপাত নিয়ে জানেন অনেকেই যারা পত্রিকা পড়েন নিয়মিত। লেখক বিলকুল অতিরঞ্জন করেননি। সত্যটাকে তথ্যের সমাহারে কাল্পনিক কাহিনীতে উপস্থাপন করেছেন মাত্র। চরিত্রগুলোও বাস্তবিক ও বাহুল্যবর্জিত। এছাড়াও বইয়ের ওপেনিং সিনটাও দারুন ছিল। ক্রিকেট জুয়াড়িদের ব্যাপারে বেশ কিছু চলে এসেছে বইয়ের প্রথমেই।
ক্যারেক্টার ডেভেলপমেন্ট খুবই জোশ। ভাল-খারাপ ট্যাগ কারও গায়ে লাগানো সম্ভব না। ক্যারেক্টার সবাই কমবেশি ডার্ক বা গ্রে।
হাদী আর বাবুলের কেমিস্ট্রির কারণে হিউমারের উপস্থিতি ছিল। বাবুলের ‘সব অসল্য কাম খালি আমারে দিয়ে করান লাগবি আপনার’ ডায়লগটা বেশ কয়েকবার হাসিয়েছে।
পাঞ্চিং ডায়লগের উপস্থিতি ছিল বইয়ে বেশ। ‘বুদ্ধি খরচ করলে বুলেট খরচ করা লাগে না’ এর মাঝে বেশ লেগেছে আমার।
দাবার সাথে পুরো গল্পের মিশেলটা একটা দারুন তড়কা হিসেবে কাজে দিয়েছে। বইয়ের শেষ দিকের অ্যানালজিটা তুখোড় ছিল।
প্রচ্ছদ বেশ লেগেছে। ইউনিক পুরো।
অবসরের বই পড়ে শান্তি কারণ আঁতশ কাচ দিয়ে খুঁজেও বানান বা সম্পাদনার ত্রুটি বের করা যায় না। এদিকটায় তারা ভালোই নজর দেন।
|| সমালোচনা ||
এই বইয়ের কাহিনীর বুনন বেশ শক্ত থাকলেও কিছু বিষয় বলতে চাই।
বইয়ে চরিত্রের সংখ্যা অনেক। প্রথমেই যখন প্রতি অধ্যায়ে অজস্র চরিত্র হাজির হচ্ছে সেগুলো মনে রাখা কঠিন হচ্ছিল। তবে কিছু সময় পর এটা আর তেমন ভোগায়নি।
হাদী যখন হাইপোথিসিস দেয় যে শহরে তৃতীয় পক্ষ থাকলেও থাকতে পারে তখন সেটা একটা ধারনা হিসেবেই উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরের পাতাতেই দেখা যায় হাদী আর বাবুল এমনভাবে আলাপ করছে যেন তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতির ব্যাপারে তারা এক পৃষ্ঠার ব্যবধানেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। অথচ তখনও ঐটা কেবল হাইপোথিসিস ছিল।
বইটার শেষ কয়েকটা অধ্যায় বাদে পুরোটাই বেশ স্লো। এটা নেগেটিভ না অবশ্য। তবে অনেক পাঠকের জন্য এটা টার্ন অফ হতে পারে তাই জানিয়ে রাখা। স্লো বার্নার এমনিতে ভাল লাগলেও অনেকের এটা পছন্দ না-ও হতে পারে।
যদিও এ বইয়ের সম্পাদনা এবং প্রুফ বেশ সলিড তবুও বইয়ের দামের তুলনায় প্রোডাকশনে প্রিমিয়াম লুক আনা উচিত বলে মনে করি। বাইন্ডিং ডিসেন্ট হলেও আরও উন্নতি আনা যায়।
মোটাদাগে খুবই এঞ্জয়েবল একটা বই। লেখক নিরাশ করেন নি বরং আরও পরিপক্কতার প্রমাণ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!