Tips & Tricks

সাদা স্রাব বন্ধ করার উপায়❤️(ঘরোয়া পদ্ধতি + ডাক্তারি)

লিউকোরিয়া (সাদা স্রাব) কি?

লিউকোরিয়া (সাদা স্রাব) হচ্ছে একটি স্বচ্ছ তরল বা শ্লেষ্মা’র নিঃসরণ, যা যোনিকে আর্দ্র এবং পিচ্ছিল রাখে, এবং যোনিতে সংক্রমণে বাধা দেয়। এটি একটি অ-যৌন এবং যৌন সংক্রমণ সংক্রমণ।

লিউকোরিয়া (সাদা স্রাব) এর উপসর্গ

সাধারণত, লিউকোরিয়া (সাদা স্রাব) সংক্রমণ হলে এর পরিমাণ, ঘনত্ব এবং রঙ বিভিন্ন রকমের হয়। এর সাথে অন্য উপসর্গও থাকতে পারে, যেমন:

  • সাধারণত দেখতে পাবেন যে ঘন, সাদা, হলুদ বা হালকা সবুজ রঙের স্রাব।
  • এছাড়াও রয়েছে, মাছের মত কড়া দুর্গন্ধ।
  • যৌনাঙ্গের অঞ্চলে লালচে ভাব এবং চুলকানি।
  • প্রস্রাবে জ্বালা আর ব্যথা।
  • যৌন মিলনের পর রক্তপাত।
  • দুইটি মাসিকের মধ্যকালীন সময়ে রক্তক্ষরণ বা স্পটিং
Ways to stop white discharge in Bangla
Ways to stop white discharge in Bangla

লিউকোরিয়া বা সাদা স্রাব বন্ধ করার ঘরোয়া চিকিৎসা প্রাকৃতিক উপায়

সমাধান ১ঃ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার দিয়ে চিকিৎসা

সাদাস্রাব রোধ করতে প্রথমত আপনাকে ব্যবহার করতে বলব- অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার দেহের প্রাকৃতিক পিএইচ ভারসাম্য রাখে এবং এটির এসিডিক ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যৌনাঙ্গের এসিডিক মান ঠিক রাখে ও অন্যান্য সমস্যা রোধ করে।

  • ১। পরিমাণ মতো বিশুদ্ধ জল নিয়ে তার সাথে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। তারপর সেই জল দিয়ে প্রতিদিন দুবার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করুন।
  • ২। আপনি চাইলে একগ্লাস বিশুদ্ধ জলের সাথে ১ চামচ খাঁটি অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন ১ বার পান করুন।

সমাধান 2: কলা দিয়ে চিকিৎসা

সাদাস্রাব সমস্যা রোধ ছাড়াও কলা হজমশক্তির সমস্যাও রোধ করে থাকে।

  • ১। প্রতিদিন দুটো পাকা কলে খেয়ে নিন সাদাস্রাব সমস্যা রোধ করার জন্য।

২। কলার মোচার জুস বানিয়ে তার সাথে মিছরি মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন।

সমাধান ৩: ঢেড়স দিয়ে চিকিৎসা- সাদা স্রাব বন্ধ করার উপায় (সেরা ঘরোয়া পদ্ধতি সহ)

ঢেড়স সবুজ সবজি এবং সাদাস্রাব সমস্যা রোধ করতে সহায়ক।

  • ১। একশত গ্রাম ঢেড়স নিয়ে ভালোমতো পরিষ্কার করে ছোট ছোট করে কেটে নিন।
  • ২। পরিমাণ মতো জল নিয়ে ঢেড়সগুলো ২০ মিনিট সিদ্ধ করে নিন।
  • ৩। এই পানীয়টি ৩ ভাগ করে নিন।
  • ৪। পানীয়টি একটি গ্লাসে পরিমাণ মতো নিয়ে সামান্য মধু মিশিয়ে নিন ও পান করুন। এভাবে দিনে ৩ বার পান করুন।
  • ৫। সাদাস্রাব সমস্যা পুরোপুরি রোধ না হওয়া পর্যন্ত এই পদ্ধতিটি মেনে চলুন।

Female-2

সমাধান ৪: সাদা স্রাব বন্ধ করার ডাক্তারি চিকিৎসা

এখন আমরা কিছু ডাক্তারি কথাবার্তা বলব, ওই অনুযায়ী ডাক্তার সাধারণত ওষুধ দিয়ে থাকেন। মাইক্রোবিয়াল বিরোধী ওষুধের সংক্ষিপ্ত কোর্সে দিয়ে লিউকোরিয়ার চিকিৎসা করা যেতে পারে। যোনি থেকে স্রাবের অস্বাভাবিক নির্গমনের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ধরনের উপর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করবে। ক্যানডিডার সংক্রমণের ক্ষেত্রে ছত্রাক-বিরোধী ওষুধের একটি কোর্স দেওয়া হয়। বি-ভি’র উপসর্গগুলি কোন চিকিৎসা ছাড়াই ঠিক হয়ে যায়। হারপিসের কোন নিরাময় নেই। ভাইরাস-বিরোধী ওষুধ  রোগের প্রাদুর্ভাব কম করতে পারে। বর্তমানে, হারপিস বিরোধী কোন ভ্যাকসিন নেই, যদিও বিভিন্ন ক্লিনিকাল পরীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে।

আপনার খাবারে মেথি, শুকনো ধনে, পাকা কলা হাল্কা লিউকোরিওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। “পিপ্পল” গাছ, ফিকাস রাসেমোসা এবং থেস্পিয়া‘র মত আয়ুর্বেদিক ওষুধগুলি স্রাবের নিঃসরণ হ্রাস করতে পারে।

সমাধান 5: জীবনধারার পরিবর্তন

ওষুধ এবং ভেষজ চিকিৎসার সাথে সাথে সঠিক স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলাই সর্বোত্তম উপায়।

  • কৃত্রিম কাপড়ের তৈরি অন্তর্বাস পড়া এড়িয়ে চলুন। সূতির বা লিনেনের পান্টি পড়ুন। জ্বালা-মুক্ত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। যৌনাঙ্গের এলাকা অতিরিক্ত ধুয়ে ফেলবেন না কারণ এটি পি-এইচ ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে এবং ব্যাকটেরিয়ার অত্যধিক বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
  • ডাম্প গ্রহণের পরে যোনিতে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ধোয়ার সময় এক বার সামনের দিকে তার পরের বার পিছনের দিকে যান।
  • প্রতিবার প্রস্রাবের পরে যোনি অঞ্চল পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
  • শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলি বার করে দিতে প্রতি দিন 10 থেকে 12 গ্লাস জল পান করুন।
  • হাঁটা, জগিং, যোগ ব্যায়াম, ধ্যানের মত হাল্কা ব্যায়াম করুন, কারণ ভারী ব্যায়ামগুলি লিউকোরিয়ার বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
  • শুধু মাত্র একজন সঙ্গীর সাথে যৌন সম্পর্ক রাখুন।
  • প্রতিটি যৌন কার্যকলাপের সময় ল্যাটেক্স কনডম ব্যবহার করুন।

সাদা স্রাব প্রতিরোধে করনীয়ঃ

  • ১. কখনও খালি পেটে থাকা যাবে না।
  • ২. খুব বেশি জরায়ূ চুলকালে কুসুম গরম পানিতে লবন দিয়ে, জরায়ূরর মুখ ভালো করে ধুতে হবে।
  • ৩. জরায়ূরর মুখ সব সময় পরিষ্কার এবং শুকনো রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে জরায়ূর মুখ ভেজা থাকে বলেই বেশি ইনফেকশন হয়।
  • ৪. স্যানিটারি ন্যাপকিন ৫ ঘণ্টা অন্তর বদলাতে হবে।
  • 5) প্রতিদিন ২ চামচ টক দই খান।
  • 6. ভাজাপোড়া খাওয়া একদমই বাদ দিতে হবে।
  • 7) অ্যালার্জি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।

জীবন যাত্রায় পরিবর্তনঃ

  • ১. রাতে কম পক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
  • ২. বেশি রাত জাগা যাবে না।
  • ৩. ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।

সাদাস্রাব দূর করতে উপরোক্ত সবগুলো নিয়ম মেনে চললে আশা করি আপনাদের এই রোগ সহজে দূর হবে ও বন্ধ হবে.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!