Bengali to English Translation Book Pdf Download (All)

মন ও তার নিয়ন্ত্রণ Pdf Download

বইয়ের নামঃ মন নিয়ন্ত্রণ
লেখকের নামঃ বিদ্যুৎ মিত্র।
ক্যাটাগরি: আত্ম উন্নয়ন ও মোটিভেশন বই
পাবলিকেশন্সঃ সেবা প্রকাশনী
ফাইল ফরম্যাট: Pdf free Download(পিডিএফ ডাউনলোড)

 

মন নিয়ন্ত্রণ Pdf Download link: click here.

বিশ্রাম: রিল্যাকসেশন, বিশ্রাম বা শরীর-মন শিথিল করে দেয়া বলতে আমরা ঠিক কি বুঝব, জেনে রাখা ভাল। সারাদিনের কাজকর্ম, ব্যস্ততা ও খাটাখাটনির শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরলেন, কিংবা বাচ্চাদের খাইয়ে-দাইয়ে জামাকাপড় পরিয়ে স্কুলে পাঠালেন, বাজার-রান্না, সাহেবের অফিসে ভাত পাঠানাে সব সেরে ধপাস করে বসলেন আরাম কেদারায়, বিরাট একটা হাঁফ ছাড়লেন-এটাই কি বিশ্রামাবস্থা বা শরীর-মন শিথিল করে দেয়া? না।

কিছুটা আরাম পাচ্ছেন বটে, কিন্তু আপনার ডান-মস্তিষ্ককে চালু করে অবচেতন মনের সঙ্গে যােগাযােগের জন্যে যতটা দরকার, ততখানি আরাম হচ্ছে না। আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, পেশী, গ্ল্যাণ্ড ও টিশুর মধ্যে সারাদিনের খাটাখাটনি ও উদ্বেগের চাপ রয়ে গেছে এখনও। এইসব চাপ থেকে মুক্ত হতে হবে আপনাকে। একবার ঠিকমত শিখে নিতে পারলে দেখবেন চাপমুক্ত অবস্থাটা কত ভাল লাগে। অনেটা টনিকের কাজ দেবে এটা আপনার শরীরের জন্যে। শরীরের এই টেনশন দূর করা যাবে কি করে? উত্তরটা সহজঃ আপনার মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে শরীরটাকে, আর আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মস্তিষ্ককে। অর্থাৎ মস্তিষ্ককে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে শিথিল আরামের অবস্থায় পৌছতে পারবেন। কিভাবে, সেটা দেখা যাক। বাম হাতে ধরুন বইটা, ডান হাত খালি থাকবে। মুঠি পাকান। আপনার ডান হাতটা এখন মুঠি পাকানাে অবস্থায় আছে। কি করে? এই পৃষ্ঠার লেখা থেকে মুঠি পাকানাের ধারণাটা পেয়েছে আপনার ব্রেন এবং নির্দেশটা হাতের কাছে পৌছে দিয়েছে স্নায়ুতন্ত্রী ও পেশীর মাধ্যমে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার পাকানাে মুঠি শক্ত করবার নির্দেশ দেব আমি, আরও শক্ত, আরও; তারপর ঢিল করে দেবেন হাতটা। শরীরের কোন অঙ্গ শিথিল বা ঢিল করে দিলে ঠিক কেমন অনুভূতি হয় সেটা দেখানাের জন্যেই এই অনুশীলন।

অনুভূতিটা মনে রাখবার চেষ্টা করবেন আপনি। ঠিক যে-মুহূর্তে আপনি হাতটা ঢিল করবেন তখুনি অনুভব করবেন আপনি শিথিল-আরাম। হাত ঢিল করবার পাঁচ সেকেণ্ড পরে নয়, ঢিল করবার মুহূর্তে যা অনুভব করবেন, সেটাই হচ্ছে শিথিল-আরামের অনুভূতি বা ফীলিং অভ রিল্যাকসেশন। পরিষ্কার? তৈরি হােন এবার। মুঠি শক্ত করুন। আরও শক্ত করুন। আরও। আরও। এবার ঢিল দিন। বেশ ভাল লাগল না? এটাই বিশ্রামাবস্থা বা শিথিল আরামের অনুভূতি। মনে মন-নিয়ন্ত্রণ  রাখুন। ভবিষ্যতে যখনই আপনাকে বিশ্রাম-অবস্থায় যেতে বলা হবে, ঠিক এই রকম অনুভূতি হলে বুঝবেন সেখানে পৌঁছেছেন। ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলােও এবার একে একে শক্ত ও ঢিল করুন। পা থেকে শুরু করতে পারেন—পা দুটো লম্বা করে আঙুলগুলাে সামনের দিকে তাক করে চাপ সৃষ্টি করুন, আরও শক্ত, তারপর ঢিল দিন। উরু শক্ত করুন, ঢিল দিন। কোমর, পিঠ, বুক, কাঁধ, ঘাড়—একে একে সবগুলাে পেশীর ওপর চাপ সৃষ্টি করুন, তারপর ঢিল দিন। দাঁতে দাঁত চেপে চোয়াল শক্ত করে ফেলুন, আরও শক্ত•••এবার ঢিল দিন। চমৎকার লাগছে না? এই বিষয়ে পরবর্তী পরিচ্ছেদে আরও বিস্তারিত আলােচনা করব আমরা।

মনে রাখবেনঃ

এক ॥ শরীরটা শিথিল আরামের অবস্থায় পৌছলে মনটাও চাপমুক্ত হয়।

দুই ॥ মনটা চাপমুক্ত হলে ব্রেন-ওয়েভের কম্পন বা ফ্রিকোয়েন্সি কমে আসে।

তিন ॥ ব্রেন-ওয়েভ কমে গেলে সচল হয় আপনার ডান-মস্তিষ্ক।

চার ॥ ডান-মস্তিষ্কের মাধ্যমেই যােগাযােগ হবে আপনার অবচেতন মনের সঙ্গে। যেখানে হাইয়ার ইন্টেলিজেন্স ও সৃজনশীলতার বাস। এবং

পাঁচ ॥ অবচেতন মন দিয়েই স্পর্শ করবেন আপনি আপনার মহাপ্রভুকে।

অর্থাৎ, টেলিফোন করতে হলে যেমন রিসিভার তুলে ডায়াল করতে হয়, তেমনি অবচেতন মনের সাহায্য পেতে হলে শরীর-মন শিথিল করতে পারাটা আবশ্যিক। আগামী চার সপ্তাহের ট্রেনিং আপনাকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবে সাফল্যের দিকে। প্রথম সপ্তাহে আপনার কী করতে হবে এখুনি তার আভাস দেব, তারপর জানাব বিস্তারিত ভাবে। অনুশীলনগুলাে দিনে তিনবার চর্চা করতে হবে আপনার, সকালে দুপুরে রাতে। সকালে ঘুম থেকে উঠে (প্রয়ােজন হলে জরুরী বাথরুম সেরে নিয়ে ফিরে আসুন) বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে চোখ বুজে ১০০-৯৯-৯৮ এইভাবে উল্টোদিক থেকে গুনে আসতে হবে আপনার ১ পর্যন্ত। পরের সপ্তাহে অবশ্য কম গুনলেও চলবে। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে, বাসায় থাকুন বা অফিসে, একটা আরামদায়ক চেয়ারে বসে শরীর-মন শিথিল করে বিশেষ কয়েক রকম দিবাস্বপ্ন দেখতে হবে আপনার। রাতে কাজকর্মের পালা চুকিয়ে নিরুপদ্রব অবস্থায় নিশ্চিন্তে বসবেন আপনি আরাম কেদারায়, শরীর- -মন শিথিল করে দিয়ে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখার অভ্যাস করবেন। সকাল দুপুর ও রাতে এই যে অল্প কিছুক্ষণের জন্যে অনুশীলন করবেন আপনি, একটি সপ্তাহ যেতে না যেতেই টের পাবেন তার সুফল; নিজেই বুঝবেন আয়ত্তে চলে আসছে বিদ্যাটা। শিথিল-আরামের শারীরিক বিশ্রাম, আলফা লেভেলে পৌছানাে, অথবা অবচেতন মনের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপন—সবই ধীরে ধীরে সহজ হয়ে আসবে। শুধু নির্দেশ মেনে চর্চা চালিয়ে যান। এবার তিনটি ভাগে আপনাকে জানানাে হবে প্রথম সাতদিন কী করতে হবে ১৪ মন-নিয়ন্ত্রণ  সকালে, দুপুরে এবং রাতে। তারপর পরিচ্ছেদের শেষে চার্ট তৈরি করে দেয়া হবে আপনার সুবিধের জন্য, যাতে একনজরেই দেখতে পান কবে কখন কী করতে

প্রথম সপ্তাহ

আগামী সাত দিন ঘুম থেকে উঠে বালিশটা ঠিকঠাক করে নিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। বাথরূমে যাওয়ার প্রয়ােজন হলে সেরে আসুন, কিন্তু ঘুম ঘুম আমেজটা নষ্ট হতে দেবেন না। চোখ বুজে ঢিল করে দিন শরীরটা। তারপর ধীর ছন্দে শ্বাস- প্রশ্বাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উল্টো ভাবে গুনে ১০০ থেকে নেমে আসুন ১ পর্যন্ত । উল্টো ভাবে শুনলে মনে একটা বিশ্রামের ভাব আসে, সােজাসুজি গুনলে মনে হয় কর্মতৎপরতার প্রস্তুতি হচ্ছেঃ ওয়ান-টু-থ্রী-গাে! উল্টো গুনতে বলা হচ্ছে ব্রেন- ওয়েভকে ধীর করবার জন্যে। জাগ্রত অবস্থায় সাধারণত আমাদের মস্তিষ্কের কম্পন থাকে সেকেণ্ডে ১৪ থেকে ২১ সাইকেল। একে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন বিটা লেভেল। বিশ্রাম অবস্থায় কমে আসে ব্রেন-ওয়েভ-প্রতি সেকেণ্ডে ৭ থেকে ১৪ সাইকেল। একে বলে আলফা লেভেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!