Books
তারাপদ রায় Pdf All(গল্প সমগ্র+কবিতা) – Tarapada Roy PDF Books Download
বাল্য অবস্থা থেকেই কবিতা রচনা করে গেছেন তিনি। তার প্রথম কবিতার বই ‘তোমার প্রতিমা’ প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে। তার প্রকাশিত কবিতা সহস্রাধিক।- তারাপদ রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা pdf – তারাপদ রায় গল্প সমগ্র কবিতার পাশাপাশি লিখতেন রম্যরচনা। তাছাড়াও লিখেছেন অজস্র গল্প, ছোট উপন্যাস ও শিশু সাহিত্য। তিনি রসসাহিত্যে ও শিশু সাহিত্যে বেশ গতিশীল ছিলেন। Tarapada Roy All PDF Books :
তারাপদ রায় এর সকল বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
দাদা সমগ্র pdf তারাপদ রায় Dada Samagra pdf by Rarapod Ray
রমরমা pdf তারাপদ রায় Ramroma – Ratapod Ray
বুদ্ধিশুদ্ধি [রম্য রচনা সংকলন] pdf তারাপদ রায় Buddhi Suddhi by Tarapod Ray pdf
সরস গল্প সমগ্র pdf তারাপদ রায় Saros Golpo Samogro by Tarapod Roy pdf
সরস প্যাসেঞ্জার – তারাপদ রায় Saros Passenger pdf by Rarapod Ray
একটি কুকুরের উপাখ্যান – তারাপদ রায় Ekti Kukurer Upakhyan – Tarapada Roy pdf
মাতাল সমগ্র – তারাপদ রায় Matal samagra by Tarapada Roy
রম্যরচনা ৩৬৫ pdf তারাপদ রায় Rommorachona 365 – Tarapada Roy pdf
জলাঞ্জলি – তারাপদ রায় Jalanjali by Tarapada Roy
বিদ্যাবুদ্ধি – তারাপদ রায় Biddhabuddi by Tarapada Roy pdf
খাঁচা ছাড়া -pdf তারাপদ রায় Khacha Chara by Tarapada Roy
ভদ্রলোক – তারাপদ রায় Vodrolok by Tarapada Roy pdf
জলভাত – তারাপদ রায় Jol Vat by Tarapada Roy pdf
কখগঘ pdf তারাপদ রায় Tarapada Roy Ka Kha Ga Gha
আবার ডোডো তাতাই – তারাপদ রায় Abar Dodo Tatai by Tarapada Roy
আখের গুড়ে শালুকডাঁটা – তারাপদ রায় Akher GURE SALUKDATA
মারাত্মক pdf তারাপদ রায় Marattok by Tarapado Roy pdf
মেলামেশা pdf তারাপদ রায় Mela Mesha pdf by Tarapad Roy
হাজব্যাণ্ড ওয়াইফ তারাপদ রায় বই রিভিউ:
স্বামীকে ‘হাজব্যান্ড’ বলা এবং স্ত্রীকে ‘ওয়াইফ’ বলা বাঙালী সংস্কৃতির একটা বড় ব্যাপার। সবাই যে এরকম উচ্চ রুচির পরিচয় দেন এমন নয়, তবে অনেকেই স্বামীকে স্বামী বা বর এবং স্ত্রীকে স্ত্রী কিংবা বৌ হিসেবে উল্লেখ করতে রীতিমত সঙ্কোচ বোধ করেন, তাঁরা ইংরেজির সাহায্যে এই লজ্জাকর শব্দ দুটি এড়িয়ে যান।
সে যা হোক, স্বামী-স্ত্রী, বর-বৌ কিংবা ঐ মার্জিত হাজব্যাণ্ড ওয়াইফ যাই হোক না কেন, দাম্পত্য বিষয়, বিশেষত স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক মধুর সম্পর্ক নিয়ে হাসির গল্পের কোনো শেষ নেই । প্রতিদিন প্রতি সংসারে এই সম্পর্ক নিয়ে নতুন, নতুনতর গল্প রচনা হচ্ছে।
আমরা দৈনন্দিন ঘর গেরস্থালির আটপৌরে গল্পের মধ্যে উঁকি দেবো না, সেটা গর্হিত কাজ হবে; অন্যের সংসারে মাথা গলানো ভদ্রলোকের উচিত নয় ৷
আবার রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে উপন্যাসে কিংবা বঙ্কিমচন্দ্রে বিষবৃক্ষে, শরৎচন্দ্রের গৃহদাহে দাম্পত্য সম্পর্কের যে জটিলতা বিবৃত হয়েছে, জ্ঞানগম্যির কলমে, এই শখের পানসিতে ওসব ভারি বোঝা তোলা সঙ্গত হবে না।
আমরা সরাসরি সোজা গল্পে যাই। স্বামী-স্ত্রী একটা রেস্তোরাঁয় খেতে গেছেন। খাওয়ার পরে দাম মিটিয়ে মৌরি চিবোতে চিবোতে বাইরে ফুটপাথে এসে মহিলার খেয়াল হলো তাঁর রুমালটা হারিয়েছেন, বোধহয়, ঐ খাওয়ার টেবিলের ওখানেই ফেলে এসেছেন। স্বামীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে স্ত্রী দ্রুত রেস্তোরাঁয় ঢুকলেন, টেবিলের কাছে গিয়ে দেখলেন, রুমালটা টেবিলের ওপরে অথবা চেয়ারে পড়ে নেই । মহিলা তখন নিচু হয়ে টেবিলের বা চেয়ারের তলায় দেখতে গেলেন রুমালটা পাওয়া যায় কি না । একজন বেয়ারা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলো, সে তাড়াতাড়ি এসে বললো, ‘না, ওখানে টেবিলের তলায় নয়, আপনার স্বামী ঐ বাইরের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’
স্বামীরা কোথায় থাকতে পারেন স্ত্রীরা তাঁদের কোথায় কোথায় খোঁজেন, দেখা যাচ্ছে ঐ বেয়ারাটির এ বিষয়ে ভালো জ্ঞান আছে, কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর প্রত্যক্ষ সম্পর্কের গল্প এটা নয়, সে গল্পগুলো সাধারণত খুবই মারকুটে।
বলা বাহুল্য এ ধরনের মারকুটে গল্পে চিরকাল স্ত্রীর হাতেই স্বামীর নিগৃহীত হওয়ার গল্প শোনা গেছে এবং সেটা শুনে লোকে মজা পেয়েছে । উলটো ব্যাপারটা অর্থাৎ স্বামীর হাতে স্ত্রীর নিগৃহীত হওয়া, সে একটা নিষ্ঠুর ব্যাপার, তার মধ্যে মজার কিছু নেই। তবে বহুদিন আগের একটা কাহিনী মনে পড়ছে, সেটা তেমন নিষ্ঠুর নয়, কিঞ্চিৎ কৌতুকময় ব্যাপারটা ।
স্বামী বেচারা আদালতে সোপর্দ হয়েছেন স্ত্রীকে প্রহার করার দায়ে ।
ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব তাঁর কাছে জানতে চাইছেন, ‘আপনি হঠাৎ আপনার স্ত্রীকে মারতে গেলেন কেন ?
আসলে এ ব্যাপারটা এক ছোট মফঃস্বল শহরের, যেখানে সবাই সবাইকে চেনে। বহিরাগত ম্যাজিস্ট্রেটও শহরের সমস্ত ব্যাপারটাই অল্পদিনের মধ্যে জেনে গিয়েছিলেন। তিনি জানতেন যে এই ভদ্রলোক, যিনি আজ স্ত্রীকে প্রহার করার দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন, সদাসর্বদা তাঁর রণরঙ্গিনী স্ত্রীর দ্বারা তাড়িত, সদাসর্বদা পত্নীর ভয়ে কাবু হয়ে থাকেন । তাঁর কি করে এত সাহস হলো, এমন দুর্মতি হলো পত্নীকে প্রহার করার, ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের স্বভাবতই কৌতূহল হলো প্রকৃত কারণটা জানার জন্যে।
প্রশ্ন করার পর কাঠগড়ায় হাত কচলিয়ে স্বামী বললেন, ‘ধর্মাবতার। আমার খুব ইচ্ছে ছিলো না, আমার খুব সাহসও নেই যে স্ত্রীকে প্রহার করি । কিন্তু সেদিন কি যে হলো। আমার স্ত্রী আমার ওপরে রাগারাগি করতে করতে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে ছাদের ঝুল ঝাড়ছিলেন, এদিকে আমার হাতের কাছেই দেওয়ালের সঙ্গে ঠেস দিয়ে রাখা ছিলো একটা মোটা বাঁশের ঝাঁটা, আর সামনে বাইরের দরজাটা ছিলো খোলা । হঠাৎ মাথার মধ্যে কি যে হয়ে গেলো, ধাঁ করে মনে হলো, এই একবার, অন্তত এই একবার । নিজেকে আর সংবরণ করতে পারলুম না ঝটাং করে ঝাঁটাটা তুলে, পিছন থেকে এক বাড়ি মেরে এক দৌড়ে বাইরের দরজা দিয়ে বেরিয়ে সোজা বড় রাস্তায়।’
ঘটনার কার্যকারণ শুনে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব ঠোঁটের ফাঁকে হেসেছিলেন এবং আসামীকে ওয়ারনিং দিয়ে ছেড়ে দেন ।
স্বামীর জেলখাটার আর একটা গল্প আছে কিন্তু সেটা একটু অন্যরকম ! এক ভদ্রলোক তাঁর বিয়ের পঞ্চম বার্ষিকীতে বন্ধুবান্ধবদের বলছিলেন তাঁর বিয়ের কথা, ‘দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর চলে গেলো । জীবনটা কেমন নীরস হয়ে গেলো, অথচ বিয়ে করতে আমি মোটেই রাজি ছিলাম না।
একজন প্রশ্ন করলেন, ‘তাহলে দাদা আপনি বিয়ে করতে গেলেন কেন ?’
দাদা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললেন, ‘বাধ্য হয়ে করতে হয়েছিলো ভাই । তোমার বৌদির সঙ্গে সামান্য ভালবাসাবাসি হয়েছিলো । একেবারে আলগা আলগা । হঠাৎ এরই মধ্যে ভদ্রমহিলা একদিন চেপে ধরলেন, বিয়ে করতেই হবে । রীতিমতো নাছোড়বান্দা। আমি যত এড়াতে যাই, তত চেপে ধরে।’
‘বৌদি চাপ দিলেন বলেই আপনি তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য হলেন, অবাক কাণ্ড !’
এই মন্তব্যের জবাবে ভদ্রলোক আরো পরিষ্কার হলেন, বললেন, ‘আরে না, শুধু চাপ কেন, ভদ্রমহিলা স্পষ্ট বললেন তাঁকে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন । এবং লিখে যাবেন যে তাঁর মৃত্যুর জন্যে আমিই দায়ী । আমি ভেবে দেখলাম আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে পাঁচ বছর জেল খাটতে হবে। ভদ্রলোকের ছেলে আমার চৌদ্দ পুরুষে কেউ জেল খাটেনি । ভয়ে ভয়ে বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে বসলাম ।’
এরপর একটি ব্যাকুল নিঃশ্বাস ছেড়ে ভদ্রলোক স্বগতোক্তি করলেন, ‘কি ভুলই যে করেছিলাম ।
এবার সকলে জিজ্ঞাসা করলো, ‘কেন ভুলটা কি হলো ?
ভদ্রলোক করুণকণ্ঠে বললেন, ‘আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে জেলে গেলে পাঁচ বছর পরে আজ তো খালাস হতাম, মুক্ত মানুষ হতাম । এ জীবনে আমার আর খালাস হওয়া হলো না।’
দাম্পত্য বিষয়ে সবচেয়ে মর্মান্তিক কথা বলেছিলেন আমার এক প্রৌঢ় প্রতিবেশী, যিনি নিজে বিবাহিত নন । এই অবিবাহিত ভদ্রলোককে একদিন কথায় কথায় প্রশ্ন করেছিলাম, ‘আচ্ছা মশায়, আপনি কেন বিয়ে করেননি ?’
মশায় বললেন, ‘সাহস পাইনি ।’
আমি আবার প্রশ্ন করি, ‘কি রকম ?”
মশায় বললেন, ‘ব্যাপারটা খুলেই বলি । হয়তো বুঝতে পারবেন । সে অনেক কাল আগের কথা। তখন আমার নবীন যৌবন। এক বিয়েবাড়িতে গেছি মেয়ের সাতপাক খাওয়ানো হচ্ছে, ছাঁদনাতলায় খুব ভিড় । সেই ভিড়ের মধ্যে আমি এক ভদ্রমহিলার বেনারসী শাড়ির আঁচল পা দিয়ে মাড়িয়ে ফেললাম। মহিলা ঘুরে দাঁড়িয়ে অকথ্য গালিগালাজ করতে লাগলেন, “স্টুপিড, ইডিয়েট, গবেট, চোখের মাথা নেই, অকর্মার ধাড়ি”, ইত্যাদি তীক্ষ্ণ বিশেষণে আমাকে জর্জরিত করতে করতে হঠাৎ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে জিব কাটলেন, তারপর বললেন, “সর্বনাশ ! আমি ভেবেছি আমার স্বামী বুঝি আমার আঁচলটা মাড়িয়ে দিয়েছে। আপনি দয়া করে কিছু মনে করবেন না, সরি।”
গল্পটা বলা শেষ করে প্রতিবেশী ভদ্রলোক আমাকে ম্লান হেসে বললেন, ‘আমি কিছু মনে করিনি। বিয়েও আর করিনি।’