Booksবিখ্যাত মনীষীদের জীবন কাহিনী - (Biography Bangla)

কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী PDF + প্রশ্ন-উত্তর (সকল তথ্য) – Kazi Nazrul Islam jiboni book Pdf Download

সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আজকে নিয়ে এলাম কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী PDF Download – Kazi nazrul islam life story bangla:

বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তনে তাকে এই উপাধি প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিতে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয় একুশে পদক বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানসূচক পদক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

নজরুলের প্রথম গদ্য রচনা ছিল “বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী“। ১৯১৯ সালের মে মাসে এটি সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সৈনিক থাকা অবস্থায় করাচি সেনানিবাসে বসে এটি রচনা করেছিলেন। এখান থেকেই মূলত তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটেছিল। এখানে বসেই বেশ কয়েকটি গল্প লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে: “হেনা, ব্যথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে”। ১৯২২ সালে নজরুলের একটি গল্প সংকলন প্রকাশিত হয় যার নাম ব্যথার দান– এছাড়া একই বছর প্রবন্ধ-সংকলন যুগবাণী প্রকাশিত হয়।

এই পোষ্টের মাধ্যমে যা যা জানতে পারবেন তার তালিকা- 

  • কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
  • বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
  • কাজী নজরুল ইসলাম pdf
  • কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাপিডিয়া
  • কাজী নজরুল ইসলাম এর ছবি
  • কাজী নজরুল ইসলাম প্রবন্ধ
  • কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস
  • কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
  • কাজী নজরুল ইসলাম pdf
  • কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাপিডিয়া
  • কাজী নজরুল ইসলাম এর ছবি
  • এক নজরে কাজী নজরুল ইসলাম এই নিয়ে সকল প্রশ্ন উত্তর (questions for bcs, job, exam)

Kazi Nazrul Islam jiboni book pdf download

বিংশ শতাব্দীর বাঙালির মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশে তাকে “জাতীয় কবি“ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তার কবিতা ও গানের জনপ্রিয়তা বাংলাভাষী পাঠকের মধ্যে তুঙ্গস্পর্শী। তার মানবিকতা, ঔপনিবেশিক শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দ্রোহ, ধর্মীয়গোঁড়ামির বিরুদ্ধতা বোধ এবং নারী-পুরুষের সমতার বন্দনা গত প্রায় একশত বছর যাবৎ বাঙালির মানসপীঠ গঠনে ভূমিকা রেখে চলেছে।

Kazi Nazrul Islam jiboni book pdf download link-

 Direct কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী বই PDF

Faq about Kazi Nazrul Islam

  প্রশ্ন: কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে?

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের প্রতি মানুষের অত্যাচার, অবিচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। বিশেষ করে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে তার “বিদ্রোহী” কবিতাটি প্রকাশিত হওয়ার পর সমগ্র ভারতে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এবং তখন থেকেই তিনি বিদ্রোহী কবি হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেন।

প্রশ্ন: কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নাম কি?

উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী প্রমীলা নজরুল, তিনিই কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমিকা। শোনা যায় প্রমীলা দেবী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাতিজি, আবার কোথাও কোথাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি বলেও শোনা যায়। নার্গিস আসার খানম বর্তমান কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার দৌলতপুর গ্রামের খাঁ বাড়ির আসমাতুন্নেসার মেয়ে। তার পিতার নাম মুন্‌শী আবদুল খালেক। নার্গিসের মামা আলী আকবর খান নজরুলের সাথে কলকাতায় পাশাপাশি থাকতেন। তিনি নজরুলকে তার বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যান ১৯২১ সালে, উদ্দেশ্য ছিল তার পরিবারের কোন মেয়ের সাথেই নজরুলের বিয়ের ব্যবস্থা করা। নজরুলও নার্গিসকে পছন্দ করেন এবং বিয়েতে রাজি হন। কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমিকার নাম.

কাজী নজরুল ইসলামের শ্বশুরের নাম কি?
কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বশুর শ্রী বসন্ত কুমার সেনগুপ্ত। আর, কাজী নজরুল ইসলাম এর শ্বাশুড়ী – শ্রীমতি গিরিবালা দেবী।
কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস কবে?
কাজী নজরুল ইসলাম এর প্রয়াণ দিবস ১২ ভাদ্র।

এক নজরে কাজী নজরুল ইসলাম এই নিয়ে সকল প্রশ্ন উত্তর (for bcs, job, exam)

প্রশ্নঃ কাজী নজরুল কবে, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তরঃ ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ (২৪ মে ১৮৯৯) খ্রি:) চুরুলিয়া গ্রাম, আসানসোল, বর্ধমান পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশ্নঃ তিনি মৃত্যুবরণ করেন কবে?
উত্তরঃ ২৯ আগষ্ট, ১৯৭৬; ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ।
১। বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে নজরুলকে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনয়ন করা হয় কত সালে?
-১৯৭২সালের ২৪মে
২। নজরুলকে কবে বাংলাদেশের সরকার নাগরিকত্ব প্রদান করে ?
– ১৯৭৬সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী
৩। নজরুল কবে মস্তিষ্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত হন ?
– ১৯৪২সালের ১০ ই অক্টোবর ৪৩বছর বয়সে ।
৪। নজরুলকে কবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডি. লিট উপাধি দেয় ?
– ১৯৭৪সালে
৫। রবীন্দ্রভারতী কবে ডি. লিট উপাধি দেয় ?
-১৯৬৯সালে
৬। ভারত সরকার তাঁকে কবে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেন ?
– ১৯৬০
৭। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবে থাকে জগত্তারিণী পুরস্কার প্রদান করেন ?
– ১৯৪৫সালে ।
৮। কত সালে নজরুল ২১শে পদক পান ?
– ১৯৭৬সালে‘।
৯। কতসালে তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার পান ?
– ১৯৭৭সালে
১০। বিবিসির বাংলা বিভাগ কর্তৃক জরিপকৃত (২০০৪) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় নজরুলের অবস্থান কত ?
– ৩য়
১১.। বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে কবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ?
-১৯৭২সালের ২৪মে স্বীকৃতি (সাংবিধানিক স্বীকৃতি এখনও দেওয়া হয়নি।
১২। নজরুল কতবার ঢাকায় আসেনে ?
– ১৩বার । প্রথম ১৯২৬
১৩। নজরুল কত বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ?
– ৫বার
১৪। নজরুল কোন চলচ্চিত্রে নারদ চরিত্রে অভিনয় করেন ?
– ধ্রুব
১৫। নজরুলের প্রথম
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম কী?
উত্তরঃ ব্যথার দান (প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯২২)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত রচনার নাম কী?
উত্তরঃ বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী (প্রকাশ: জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬; সওগাত)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কবিতার নাম কী?
উত্তরঃ মুক্তি (প্রকাশ: শ্রাবণ ১৩২৬)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থের নাম কী?
উত্তরঃ ব্যথার দান (প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯২২)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উত্তরঃ অগ্নি-বীণা (সেপ্টেম্বর, ১৯২২)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাসের নাম কি?
উত্তরঃ বাঁধনহারা (১৯২৭)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধের নাম কী?
উত্তরঃ তুর্কমহিলার ঘোমটা খোলা (প্রকাশ: কার্তিক ১৩২৬)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ কোনটি?
উত্তরঃ যুগবাণী (অক্টোবর ১৯২২)।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম প্রকাশিত নাটকের নাম কী?
উত্তরঃ ঝিলিমিলি (১৩৩৪, নওরোজ)।
প্রশ্নঃ প্রথম প্রকাশিত নাট্য গ্রন্থ কী?
উত্তরঃ ঝিলিমিলি (১৩৩৭)। এই গ্রন্থে মোট তিনটি নাটক আছে।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রথম বাজেয়াপ্ত গ্রন্থের নাম কী?
উত্তরঃ বিষের বাঁশী (প্রকাশ: আগষ্ট ১৯২৪/ বাজেয়াপ্ত: ২৪ অক্টোবর ১৯২৪)।
১৫। ভোর হল দোর খোল
খুকু মণি উঠো রে —- পঙক্তিটি কার লেখা ?
– কাজী নজরুল ইসলাম ।
১৬। বাংলা সাহিত্যের মুক্তক ছন্দের প্রবর্তক কে?
– কাজী নজরুল ইসলাম।
১৭। কাজী নজরুলে বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত?
– ময়মনসিংহের ত্রিশালে
১৮। নজরুল মঞ্চ কোথায় অবস্থিত ?
– বাংলা একাডেমিতে
১৯। বিশ্বকে দেখবো আমি আপন হাতের মুঠায় করে
পঙক্তিটি কার লেখা ?
২০। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুতে শোকার্ত কাজী নজরুল ইসলাম কোন কবিতাটি লিখেছিলেন?
– রবি-হারা
২১। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কাব্যগ্রন্থ কয়টি?
– ২৩টি
২২। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
-নির্ঝর
২৩।ঝিঙেফুল ও সাতভাই চম্পা কি?
– কাজী নজরুলের ছোটদের কাব্যগ্রন্থ
২৪। কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত তিনটি পত্রিকার নাম কী?
উত্তরঃ ধূমকেতু (১৯২২), লাঙ্গল (১৯২৫), দৈনিক নবযুগ (১৯৪১)
২৫। বার্ধক্য তাহাই যাহা পুরাতনকে , মিথ্যাকে , মৃত্যুকে আকড়াইয়া পড়িয়া থাকে ‘’’– কার কথা?
– –কাজী নজরুল ইসলামের।
২৫।–কাজী নজরুল ইসলামের ৩টি অনুবাদ গ্রন্থ
— কাব্যে আমপারা , রুবাইয়াত্ -ই- হাফিজ, রুবাইয়াত্ -ই- ওমর খৈয়াম।
২৬। ব্যথারদান , রিক্তের বেদন ও শিউলিমালা এগুলো কি?
– গল্পগ্রন্থ
২৭। বিয়ের পর নজরুলের স্ত্রী আশালতা সেন গুপ্তের নাম রাখা হয়
– প্রমীলা
২৮। চল্ চল্ চল্ সঙ্গীতকে কবে বাংলাদেশ পদাতিক বাহিনীর ‘রণসঙ্গীত’ হিসেবে গ্রহণ করা হয় ?
– ১৯৯৬সালে।
২৯। নজরুল প্রতিভা কার লেখা ?
– কাজী আবদুল ওয়াদুদ।
৩০। কাজী নজরুল ইসলাম কবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে সাক্ষাত্ করেন ?
– ১৯২১সালের অক্টোম্বর মাসে
৩১। নজরুলের গজলগুলোকে বলা হয়
– নজরুলিয়া । (তিনিই প্রথম বাংলা গজল লেখেন। )
৩২। প্রথম বাঙালি মুসলমান চলচ্চিত্রকার কে?
– কাজী নজরুল েইসলাম্
৩৩। কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় সমাহিত করা হয় ?
– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে।
৩৪। নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কয়েকটি দর্শনীয় স্থান
— ত্রিশাল , ময়মনসিংহ, দৌলতপুর , কুমিল্লা , কার্পাসডাঙা, চুয়াডাঙ্গা ।
৩৫। কাজী নজরুলকে নিয়ে কোন দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে ?
– কানাডা
৩৬।জীবন বন্দনা কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?
– ৬মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে।
৩৭। ’সঞ্চিতা’ কাব্যগ্রন্থ নজরুল কাকে উত্সর্গ করেন ?
– রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরকে
৩৮। অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থ নজরুল কাকে উত্সর্গ করেন ?
– বারীন্দ্র কুমার ঘোষকে
৩৯।বাঁধন হারা ‘ উপন্যাস নজরুল কাকে উত্সর্গ করেন ?
-নলিনীকান্ত সরকারকে
৪০। বসন্ত গীতিনাট্য নজরুল কাকে উত্সর্গ করেন ?
-রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরকে।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের পিতার নাম কী?
উত্তরঃ কাজী ফকির আহমদ।
প্রশ্নঃ নজরুলের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বর্ণনা।
উত্তরঃ দশ বছর বয়সে গ্রামের মক্তব থেকে নিম্ন প্রাইমারী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ (১৯০৯) হন্ এরপর
১৯১৪ সালের ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে, ১৯১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জ শিয়ারশোল রাজস্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকে ১৯১৭ সালে দশম শ্রেণী প্রি-টেস্ট পরীক্ষার সময় লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
প্রশ্নঃ বার বছর বয়সে তিনি কোথায় যোগ দেন?
উত্তরঃ লেটোর দলে এবং দলে ‘পালা গান’ রচনা করেন।
প্রশ্নঃ নজরুল বাংলা সাহিত্যে কী নামে পরিচিত?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল বাংলাদেশের কোন সঙ্গীতের রচয়িতা?
উত্তরঃ রণসঙ্গীত।
প্রশ্নঃ রণসঙ্গীত হিসাবে মূল কবিতাটির কত চরণ গৃহীত?
উত্তরঃ ২১ চরণ।
প্রশ্নঃ রণসঙ্গীত কী শিরোনামে সর্বপ্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ নতুনের গান শিরোনামে ঢাকার শিখা পত্রিকায় ১৯২৮ (১৩৩৫ বঙ্গাব্দে) বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের কোন গ্রন্থে এই সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত আছে?
উত্তরঃ সন্ধ্যা কাব্য গ্রন্থে।
প্রশ্নঃ ‘বিদ্রোহী’ কবিতা প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ ‘সাপ্তাহিক বিজলী’র ২২ পৌষ (১৩২৮) সংখ্যায়।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল কোন দৈনিক পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন?
উত্তরঃ ‘সান্ধ্য দৈনিক নবযুগ’ (১৯২০)-এর।
প্রশ্নঃ এই পত্রিকার সঙ্গে আর কোন দুজন রাজনৈতিক নেতা যুক্ত ছিলেন?
উত্তরঃ কমরেড মুজাফফর আহমদ ও
শেরে বাংলা ফজলুল হক।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের সম্পদনায় কোন
অর্ধসাপ্তাহিক পত্রিকা বের হত?
উত্তরঃ ‘ধূমকেতু’ (১৯২২)।
প্রশ্নঃ ধূমকেতু পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের কোন বাণী ছাপা হয়?
উত্তরঃ ‘আয় চলে আয়, রে ধূমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু-’।
প্রশ্নঃ কোন কবিতা প্রকাশিত হলে তিনি গ্রেফতার হন?
উত্তরঃ ধূমকেতু’র পূজা সংখ্যায় (১৯২২) ‘আনন্দময়ীর আগমনে’।
প্রশ্নঃ রবীন্দ্রনাথ তাঁর কোন গীতিনাট্য নজরুলকে উৎসর্গ করেন?
উত্তরঃ বসন্ত।
প্রশ্নঃ হুগলি জেলে কর্মকর্তাদের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে নজরুল অনশন করলে রবীন্দ্রনাথ
নজরুলকে কী লিখে টেলিগ্রাফ পাঠান?
উত্তরঃ Give up hunger strike. Our literature claims you.
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল জেল থেকে মুক্তি পান কবে?
উত্তরঃ ১৯২৩-এর ১৫ অক্টোবর।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম কংগ্রেসের রাজনীতিতে যোগ দেন কখন?
উত্তরঃ ১৯২৫-এ ফরিদপুর কংগ্রেসের প্রাদেশিক সম্মেলনে।
প্রশ্নঃ নজরুল সম্পাদিত ‘লাঙ্গল’ পত্রিকার প্রকাশকাল কত?
উত্তরঃ ১৯২৫ সাল।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুলকে জাতীয় সংবর্ধনা দেয়া হয় কোথায় এবং কখন?
উত্তরঃ ১৯২৯-এর ১৫ ডিসেম্বর কলকাতার অ্যালবার্ট হলে।
প্রশ্নঃ নজরুলের মোট কয়টি গ্রন্থ বাজেয়াপ্ত হয়,
কী কী?
উত্তরঃ ৫টি। বিশের বাঁশী, ভাঙার গান, প্রলয় শিখা, চন্দ্রবিন্দু, যুগবাণী।
প্রশ্নঃ জেলে বসে লেখা জবানবন্দির নাম কী?
উত্তরঃ রাজবন্দির জবানবন্দি। রচনার তারিখ:
৭/১/১৯২৩
প্রশ্নঃ ‘দারিদ্র্য’ কবিতাটি নজরুল ইসলামের কোন কাব্যের অন্তর্গত?
উত্তরঃ সিন্ধু হিন্দোল কাব্যের।
প্রশ্নঃ কোন কবিতা রচনার জন্য কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীনা’ কাব্য নিষিদ্ধ হয়?
উত্তরঃ রক্তাম্বরধারিনী মা।
প্রশ্নঃ ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কবি নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তরঃ অগ্নি-বীণা।
প্রশ্নঃ অগ্নি-বীণা কাকে উৎসর্গ করা হয়?
উত্তরঃ বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে।
প্রশ্নঃ অগ্নি-বীণার প্রথম কবিতা কোনটি?
উত্তরঃ প্রলয়োল্লাস।
প্রশ্নঃঅগ্নিবীণাতে কয়টি কবিতা আছে?
– ১২টি
প্রশ্নঃ।সঞ্চিতাতে কয়টি কবিতা আছে?
– ৭৮টি কবিতা
প্রশ্নঃ নজরুলের কোনটি পত্রোপন্যাসের পর্যায়ভুক্ত।
উত্তরঃ বাঁধনহারা।
প্রশ্নঃ কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলো কী কী?
উত্তরঃ ‘অগ্নি-বীণা’ (১৯২২), বিষের বাঁশি (১৯২৪),
ভাঙার গান (১৯২৪), সাম্যবাদী (১৯২৫),
সর্বহারা (১৯২৬), ফণি-মনসা (১৯২৭), জিঞ্জির
(১৯২৮), সন্ধ্যা (১৯২৯), প্রলয় শিখা (১৯৩০)
ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ জীবনী কাব্যগুলো কী কী?
উত্তরঃ ‘চিত্তনামা’ (১৯২৫) ও মরু-ভাস্কর (১৯৫০)।
প্রশ্নঃ চিত্তনামা ও মরু-ভাস্কর কার জীবনভিত্তিক কাব্য?
উত্তরঃ চিত্তনামা : দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ: মরু-ভাস্কর: হয়রত মুহম্মদ।
প্রশ্নঃ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর জীবনী গ্রন্থ কোনটি?
উত্তরঃ মরু ভাস্কর।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাসগুলোর নাম উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ‘বাঁধনহারা’ (১৯২৭), মৃত্যুক্ষুধা (১৯৩০) ও কুহেলিকা (১৯৩১)।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত গল্পগ্রন্থগুলোর নাম কর।
উত্তরঃ ব্যথার দান (১৯২২), রিক্তের বেদন (১৯২৫), শিউলিমালা (১৯৩১)।
প্রশ্নঃ সংগীত বিষয়ক গ্রন্থাবলীর উল্লেখ কর।
উত্তরঃ চোখের চাতক, নজরুল গীতিকা, সুর সাকী, বনগীতি প্রভৃতি।
প্রশ্নঃ বাল্যকাল তিনি কী নামে পরিচিত ছিলেন?
উত্তরঃ দুখু মিয়া।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম কী নামে খ্যাত?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি।
প্রশ্নঃ বাংলা ভাষায় কে প্রথম ইসলামী গান ও গজল রচনা করেন?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম ১৯১৭ সালে কত নং বাঙালি পল্টনে যোগ দেন।
উত্তরঃ ৪৯ নং
প্রশ্নঃ আদালতে প্রদত্ত কবি নজরুলের রচনার নাম কী?
উত্তরঃ রাজবন্দীর জবানবন্দি
প্রশ্নঃ ১৯৩৩ সালে প্রকাশিত ‘বিষের বাঁশী’
কাব্যগ্রন্থ কার নামে উৎসর্গ করেন।
উত্তরঃ মিসেস এম রহমান
প্রশ্নঃ ‘চন্দ্রবিন্দু’ কাজী নজরুল ইসলামের কোন ধরনের রচনা?
উত্তরঃ গল্প
প্রশ্নঃ ‘ভাঙ্গার গান’ কাজী নজরুল ইসলামের কোন ধরনের রচনা?
উত্তরঃ কাব্যগ্রন্থ।
প্রশ্নঃ নারী কবিতাটি কে লিখেছেন ?
–কাজী নজরুল ইসলাম ।
প্রশ্নঃ আবুল মনসুর আহমদ এর কোন গ্রন্থে কাজী নজরুল ইসলাম ভূমিকা রচনা করেছেন?
উত্তরঃ আয়না
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের তিনটি নাটকের নাম করুন।
উত্তরঃ ঝিলমিলি, আলেয়া, পুতুলের বিয়ে ।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নি-বীণা’ কাব্যের প্রথম কবিতাটি কোনটি?
উত্তরঃ প্রলয়োল্লাস।
প্রশ্নঃ ১৯৩০ সালে কোন কবিতার জন্য নজরুল ইসলাম ৬ মাসের জন্য কারাবরণ করেন?
উত্তরঃ প্রলয় শিখা
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রেমমূলক রচনা কোনটি?
উত্তরঃ শিউলীমালা
প্রশ্নঃ ‘সাম্যবাদী’ কাজী নজরুলের কোন জাতীয় রচনা? কত সালে কোথায় প্রথম প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ কবিতা, ১৩৩২ বঙ্গাব্দে ১লা পৌষ ‘লাঙ্গল’
পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।
প্রশ্নঃ ‘আমি সৈনিক’ রচনাটি কবি নজরুল ইসলামের কোন গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত।
উত্তরঃ দুর্দিনের যাত্রী।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী এবং কত সালে প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ অগ্নিবীণা, ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয়।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলামের দুটি অনুবাদ গ্রন্থের নাম করুন।
উত্তরঃ রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ (১৯৩০) ও রুবাইয়াৎ-ই- ওমর খৈয়াম (১৯৬০)।
প্রশ্নঃ এ পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলামের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা কত?
উত্তরঃ ৫১টি
প্রশ্নঃ কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কোন গ্রন্থটি উৎসর্গ করেন?
উত্তরঃ সঞ্চিতা।
প্রশ্নঃ কাজী নজরুলের ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ লাঙ্গল।
প্রশ্নঃ নজরুল সাহিত্যের লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ সংস্কার ও বন্ধন মুক্তি
প্রশ্নঃ কত সালে কাজী নজরুল ইসলাম আশালতা সেন গুপ্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ
হন?
উত্তরঃ ১৯২৪ সালে
প্রশ্নঃ ১৯২২ সালে ধূমকেতুর শারদীয় সংখ্যায় কী কী প্রকাশের জন্য কাজী নজরুল ইসলামকে এক
বৎসর কারাবণ করতে হয়?
উত্তরঃ আনন্দময়ীর
আগমনে কবিতা এবং ‘বিদ্রোহীর কৈফিয়াৎ’ প্রকাশের জন্য।
প্রশ্নঃ নজরুল ইসলামের কবিতা সর্বপ্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
উত্তরঃ বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পত্রিকায়।
প্রশ্নঃ বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে দুটি বৃক্ষ আছে। তার একটি রবীন্দ্রনাথের নামে অপরটি কার নামে?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের নামে।
প্রশ্নঃ ‘যাকে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নি’- এই
বিখ্যাত গানের চরণটি নজরুল কাকে উদ্দেশ্য
করে রচনা করেছেন?
উত্তরঃ নার্গিসকে।
প্রশ্নঃ নার্গিসের বাড়ি কোথায়?
উত্তরঃ কুমিল্লা জেলার দৌলতপুরে।
প্রশ্নঃ নজরুল ইসলামের রচনা দুটো ঐতিহ্য একই মিলন মোহনায় এসে মিসেছে। ঐতিহ্য দুটো কী?
উত্তরঃ মুসলিম ঐতিহ্য এবং হিন্দু ঐতিহ্য।
প্রশ্নঃ মুসলিম ও হিন্দু এতিহ্যকে একীভূত করার উদ্দেশ্যে তিনি তাঁর ছেলের নাম কী রাখেন?
উত্তরঃ কৃষ্ণ-মোহাম্মদ
প্রশ্নঃ নজরুল মায়ের মত সম্মান করতো কোন মহিলাকে?
উত্তরঃ বিরজা সুন্দরী নামে কুমিল্লার এক হিন্দু মহিলাকে।

কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে টা নিয়েও এখানে বিস্তারিত জানব- 

তখন দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। নজরুল কুমিল্লা থেকে কিছুদিনের জন্য দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে থেকে আবার কুমিল্লা ফিরে যান ১৯ জুনে- এখানে যতদিন ছিলেন ততদিনে তিনি পরিণত হন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মীতে। তার মূল কাজ ছিল শোভাযাত্রা ও সভায় যোগ দিয়ে গান গাওয়া। তখনকার সময়ে তার রচিত ও সুরারোপিত গানগুলির মধ্যে রয়েছে “এ কোন পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙ্গিনায়, আজি রক্ত-নিশি ভোরে/ একি এ শুনি ওরে/ মুক্তি-কোলাহল বন্দী-শৃঙ্খলে” প্রভৃতি। এখানে ১৭ দিন থেকে তিনি স্থান পরিবর্তন করেছিলেন। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে আবার কুমিল্লায় ফিরে যান। ২১ নভেম্বর ছিল সমগ্র ভারতব্যাপী হরতাল- এ উপলক্ষে নজরুল আবার পথে নেমে আসেন; অসহযোগ মিছিলের সাথে শহর প্রদক্ষিণ করেন আর গান করেন, “ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী“- নজরুলের এ সময়কার কবিতা, গান ও প্রবন্ধের মধ্যে বিদ্রোহের ভাব প্রকাশিত হয়েছে। এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বিদ্রোহী নামক কবিতাটি। বিদ্রোহী কবিতাটি ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতিলাভ করে। এই কবিতায় নজরুল নিজেকে বর্ণনা করেন:-

আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,

আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ জ্বালা, চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের

আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়,

চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!

আমি গোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা অনুখন,

আমি চপল মেয়ের ভালবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন।

মহা-বিদ্রোহী রণক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত।

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,

অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-

বিদ্রোহী রণক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত।

……………………..

আমি চির বিদ্রোহী বীর –

বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!

পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো। পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২২ সংখ্যায় নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হয়। এই রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই দিনে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দি প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে এই জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তার এই জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে। এই জবানবন্দীতে নজরুল বলেছেন:

১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। নজরুলকে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে যখন বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন তখন (১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি ২২) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। এতে নজরুল বিশেষ উল্লসিত হন। এই আনন্দে জেলে বসে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কবিতাটি রচনা করেন।

বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

জী নজরুল ইসলাম। সমগ্র বাংলায় খ্যাতি পেয়েছেন বিদ্রোহী কবির। অভিষিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায়। তার সৃষ্টিকর্ম বাঙালি মুসলমানদের জীবনে আজও জুগিয়ে চলেছে নিরন্তর প্রেরণা। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গান, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা এবং সাংবাদিকতা করলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই খ্যাতিমান। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন যুগ সৃষ্টি করেন। বলা চলে, ইসলামি সঙ্গীত তথা বাংলা গজল রচনার পথিকৃৎ তিনি। নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং সুর করেছেন। সঙ্গত কারণেই তার কবিতার বিশাল অংশজুড়ে স্থান পেয়েছে ইসলাম প্রসঙ্গও।
নজরুল তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’ দিয়েই বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন করে নেন। এ কাব্যগ্রন্থের অর্ধেক কবিতাই ছিল ইসলামি কবিতা। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘রণভেরী’, ‘খেয়াপারের তরুণী’, ‘মোহররম’, ‘কোরবানী’, ‘শাত-ইল-আরব’ ‘কামালপাশা’, ‘আনোয়ার’ প্রভৃতি কবিতা। এছাড়াও ‘বিশের বাঁশী’, ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজদহম’ ‘জিঞ্জির, ‘ঈদ-মোবারক’, ‘আয় বেহেশতে কে যাবি আয়’, ‘চিরঞ্জীব জগলুল’, ‘খালেদ’, ‘ওমর ফারুক’, ‘সুবহে সাদেক’, ‘আমানুল্লাহ’ এবং হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবননির্ভর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘মরু-ভাস্কর’ ও ‘নবযুগ’সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং কাব্যগ্রন্থসমূহের আরো অনেক উজ্জ্বল কবিতা ইসলামি ঐতিহ্য, ইসলামি ভাব, ইসলামি জাগরণ, আল্লাহ ও রাসূল ভক্তি নির্ভর প্রচুর কবিতা রয়েছে।
মানবতাবাদী, সৌন্দর্যদীপ্ত, প্রকৃতিনির্ভর যেকোনো নিটোল কবিতাই ইসলামি কবিতা। ইসলাম মূলত শান্তি ও সৌন্দর্যের ধর্ম। তাই শান্তি ও সুন্দরকে উপজীব্য করে সে কেউ যে কবিতা রচনা করবে তাই ইসলামি কবিতা। এ অর্থে নজরুলের প্রায় সব কবিতাই ইসলামি কবিতা। সত্য ও সুন্দরের পক্ষে মানবতার পক্ষে যে কবিতা তৌহিদবাদ অর্থাৎ একত্ববাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, এমন কবিতাই ইসলামি কবিতা।
কবি নজরুল ধ্যানে-জ্ঞানে, নিঃশ্বাসে-বিশ্বাসে, চিন্তাচেতনায় ছিলেন পুরোদস্তুর মানবতাবাদী মুসলিম কবি। কবিতায়, গানে, গদ্যে সর্বত্র তার এই দৃষ্টিভঙ্গি উৎকীর্ণ। শোষিত বঞ্চিত মানুষকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন সাম্য ও ন্যায়ের বন্ধনে এক হয়ে শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হতে।
১৩০৬ থেকে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ। অঙ্কের হিসাবে তার জীবনকাল ৭৭ বছরের। সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। এই ২৩ বছরের সাহিত্যজীবনে তার বিপুল সৃজনকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। তার ছড়ানো দ্রোহী চেতনা কাঁপিয়ে দেয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভিত।
ইসলামি ঐতিহ্য কাজী নজরুল ইসলামকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল। ইসলামের পুনর্জাগরণ বা মুসলিম ঐতিহ্য নজরুলের কবিতায় বিপুলভাবে সংবর্ধিত হয়েছিল। তিনি সুফিতত্ত্ব বা সুফিবাদ দ্বারাও প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। ইসলামকে নজরুল তার বিশ্বাসে মণ্ডিত করে প্রকাশ করেছেন।
কাজী নজরুল ইসলাম যেমন শোষিত মানুষের কবি, বিদ্রোহের কবি, মানবিকতার কবি, তেমনি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস ও ইসলামি সাম্যবাদেরও কবি। ইসলামকে কবি মনে প্রাণে গ্রহণ করেছেন। ‘আবির্ভাব’ ও ‘তিরোভাব’ এই দু’টি কবিতার সমন্বয়ে তিনি রচনা করেন ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজদহম’ কবিতাটি। ইসলামি জোশ সঞ্জীবিত রাখার ক্ষেত্রে নজরুল তার কবিতা ও অন্যান্য রচনার মাধ্যমে অভাবনীয় ভূমিকা রেখেছেন। ইসলামের ঝাণ্ডাকে নজরুল সবার ঊর্ধ্বে ঠাঁই দিয়েছিলেন। আন্তরিক উচ্চারণে তিনি ছিলেন আল্লাহর রাহে নিবেদিত।
নজরুল কাব্যে অধ্যাত্মবাদ এবং ইসলামি সাম্য সূচিত হয়েছে মানবিকতায়। তার ইসলামি কবিতা মানবাত্মার বিকাশ ও মানবিকতার উদ্বোধন। আধ্যাত্মিক শক্তি তার আপন আত্মার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। মানবিক ধর্ম হচ্ছে আত্মত্যাগ। এই আত্মত্যাগে ইসলাম আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। ভোগীদের সংহার করার প্রেরণা নজরুল কবিতায় উচ্চারিত।
নজরুলের ইসলামি গানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য আমাদের দারুণভাবে মুগ্ধ করে এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আপ্লুত করে। তার ইসলামি চৈতন্য আমাদের আলোড়িত করে। তিনি তার বিশ্বাসকেই মণ্ডিত করেছেন ইসলামি গানে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও কর্মভাষিক কাঠামো পেয়েছে তার কবিতায়—
‘কত যে রূপে তুমি এলে হযরত এই দুনিয়ায়।
তোমার ভেদ যে জানে আখেরি নবী কয় না তোমায়।
আদমের আগে ছিলে আরশ পাকে তার আগে খোদায়।
আদমের পেশানীতে দেখেছি তব জ্যোতি চমকায়।
ছিলে ইব্রাহিমের মধ্যে তুমি ফুল হলো তাই নমরুদের আগুন।
নুহের মধ্যে ছিলে তাই কিশতী তার ডুবলো না দারিয়ায়’
নজরুল তার কবিতায় দেখিয়েছেন যে, ইসলামের যে ধর্মীয় অনুশাসন, সেই অনুশাসনই প্রকৃত পক্ষে মানুষের ধর্ম। নজরুলের কবিতায় যে আত্মোপলব্ধি, সেই আত্মোপলব্ধিই হচ্ছে অধ্যাত্মবাদের মূল কথা; যা ইসলাম ধর্মের শান্তির উপলব্ধির সাথে একাত্ম।
ইসলাম অন্তঃসলিলা ফল্গুধারার মতো কাজী নজরুল ইসলামের অন্তরের অন্তঃস্তলে প্রবহমান ছিল। আর তাই ইসলামের অনুশাসনে তিনি তার যাপিত জীবনের আলো হিসেবে ভেবেছেন। আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলার অঙ্গীকার ও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বিশ্বাসে, কর্মে তার জীবনে ইসলাম ছিল অবিকল্প।
‘খেয়াপাড়ের তরণী’ কবিতায় নজরুল তাই উচ্চারণ করেন—
‘কাণ্ডারী এ তরীর পাকা মাঝি মাল্লা
দাড়ি মুখে সারি গান লা-শরিক আল্লাহ।’
‘মহররম’ কবিতায় নজরুল উচ্চারণ করেন-
১. ‘ফিরে এলো আজ সেই মহররম মাহিনা,
ত্যাগ চাই, মর্সিয়া ক্রন্দন চাহি না।’
২. ‘লাল শিয়া আসমান লালে লাল দুনিয়া,
আম্মা লাল তেরি খুন কিয়া খুনিয়া।’
পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার প্রতি প্রত্যয়ী হওয়াই নজরুলের ইসলামি গানের বৈশিষ্ট্য। নজরুলের কাব্যজীবন স্বভাব ও সচেতনতায় অসাধারণ স্বচ্ছ। কোনো অবস্থাতেই তিনি স্বজাতি ও স্বধর্মকে ভুলে যাননি। বরং রেনেসাঁসী মানুষ হিসেবে নজরুল মুসলিম রেনেসাঁর জন্য অকৃপণভাবে কবিতা ও গান রচনা করেছেন।
নজরুল হামদ ও নাত অসংখ্য রচনা করেছেন। আল্লাহর নৈকট্য লাভের ইচ্ছা, প্রার্থনা ও ক্ষমা ভিক্ষাই হচ্ছে হামদের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য। ক্ষমা ভিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি যে বিচিত্র কৌশল প্রয়োগ করেছেন, তা আমাদের দৃষ্টি এড়ায় না। হামদে নজরুল নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছেন পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার কাছে। এ ক্ষেত্রে তার মনে বিন্দুমাত্র দ্বিধা ও সংশয় ছিল না। কায়মনোবাক্যে নজরুল আল্লাহতায়ালার কাছে আত্মসমর্পণ করে উচ্চারণ করেন—
  • ১. ‘করিও ক্ষমা হে খোদা আমি গোনাহগার অসহায়।’
  • ২. ‘ইয়া আল্লাহ, তোমার দয়া কত, তাই দেখাবে বলে রোজ-হাশরে দেখা দেবে বিচার করার স্থলে।’
  • ৩. ‘দীন-ভিখারী বলে আমি ভিক্ষা যখন চাইবো স্বামী, শূন্য হাতে ফিরিয়ে দিতে পারবে নাকো আর।’
মুসলমানদের সামাজিক তামুদ্দুনিক মননের ঐতিহ্যভিত্তিক রূপায়ণে অনির্বাণ প্রেরণার মশাল জ্বালিয়েছেন নজরুল। মুমূর্ষু সমাজের নিপীড়িত মানুষের আলেখ্য রচনার পাশাপাশি সমকালীন যুগসমস্যা ও ইসলামের আদর্শকে সমুন্নত করেছেন তিনি কবিতায়। কালের করালস্রোতে যা কোনো দিনই ভেসে যাওয়া তো দূরে থাক, ম্লানও হবে না। নজরুল তার ঈমান রক্ষা ও সুদৃঢ় করার জন্য সমর্পিতচিত্তে ও আন্তরিক উচ্চারণে ইসলামি গান রচনা করেছেন—
১. ‘বাজিছে দামামা বাঁধরে আমামা
শির উঁচু করি মুসলমান।
দাওয়াত এসেছে নয়া জমানার
ভাঙা কিল্লায় ওড়ে নিশান।
মুখেতে কলেমা হাতে তলোয়ার
বুকে ইসলামী জোশ দুর্বার
হৃদয়ে লইয়া এশক আল্লাহর
চল আগে চল বাজে বিষাণ।’
নবীর শহর ও প্রেমের শহর পবিত্র মদিনা মোনওয়ারা। সেই মদিনা নজরুলের কাছে কল্পনার প্রতীক নয়, আকাঙ্খা ও স্বপ্নের প্রতীক। তিনি আল্লাহকে নৌকা ভেবে সেই নৌকায় চড়ে মদিনায় যাবার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেছেন—
‘আল্লাহ নামের নায়ে চড়ি যাব মদিনায়
মোহাম্মদের নাম হবে মোর
ও ভাই নদী পথে পূবাল বায়।।
চার ইয়ারের নাম হবে- মোর সেই তরণীর দাঁড়
কলমা শাহাদাতের বাণী হাল ধরিবে তাঁর।
খোদার শত নামের গুণ টানিব
ও ভাই নাও যদি না যেতে চায়।’
মদিনাকে নিয়ে নজরুলের গুণগানের শেষ নেই। দ্বীনের দাওয়াত, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় মদিনার রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) সে দেশে হিজরত করছিলেন। নবী দৌহিত্র হজরত হাসান-হোসাইন (রা.) ও নবী কন্যা হজরত ফাতেমা (রা.) সহ অসংখ্য সাহাবির পুণ্যস্মৃতিময় এই মদিনায় ভেসে বেড়ায় তৌহিদের বাণী। নজরুল তার কবিতায় এভাবেই মদিনাকে লালন ও ধারণ করেছেন।
নজরুলকে বাংলার মুসলিম রেনেসাঁর প্রাণপুরুষ বলা হয়। রেনেসাঁর একটা প্রধান ধর্ম হলো- যাবতীয় কুসংস্কার, ভন্ডামি, গোঁড়ামি, নিষ্প্রাণ গতানুগতিক আনুষ্ঠানিকতা ও সকল প্রকার সঙ্কীর্ণতাকে আক্রমণ করে তার জায়গায় সত্য, ন্যায়, উদার মানবিকতা ও চিন্তার স্বাধীনতার জয় ঘোষণা করা। নজরুল তার কবিতায় এটা করে দেখিয়েছেন অত্যন্ত সফলভাবে। তাই তো আমরা দেখি, কবির বহু ইসলামি গান ও কবিতায় এর বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের ক্ষুরধার তরবারি বারবার ঝলসে উঠেছে।
ইসলামি অনুষঙ্গ নিয়ে লেখা নজরুলের কবিতাবলী অবশ্য সব সমান উচ্চমানের নয়। প্রত্যেক কবির ক্ষেত্রেই একথা সত্য। মাঝে মাঝে নজরুল একটু বেশি উচ্চকক্ত, একটু বেশি প্রচারধর্মী। কবি এ সম্পর্কে অসচেতন ছিলেন না, কিন্তু চারদিকের অন্যায়-অবিচার, শঠতা-ধূর্ততা, দুর্বলের ওপর অত্যাচার নির্যাতন, ধর্মের নামে অধর্ম তাকে অস্থির ও চঞ্চল করে তুলতো। এ জন্যই তার রচনায় মানের উত্থান-পতন ও অসমতা। কিন্তু এসত্ত্বেও তার সামগ্রিক সাহিত্যকর্মে একটা মৌলিক ঐক্যবদ্ধ সুর নিরন্তর অনুরণিত।
এভাবে নজরুল শুধু কবিতায় নয়, তার গীতি কবিতা, হামদ-নাত, গজল, ভক্তি সঙ্গীত ও ইসলামি সৌন্দর্যরসে পরিসিক্ত ছিল। নজরুলের ইসলামি কবিতা রচনার মূলে ছিল খোদাপ্রেম এবং রাসূলপ্রেম। আল্লাহ ও রাসূলপ্রেমে পাগল ছিলেন বলেই তার পক্ষে এমন অসাধারণ সব ইসলামি কবিতা রচনা করা সম্ভব হয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলাম প্রবন্ধ

কবিতা

গ্রন্থ প্রকাশকাল (বঙ্গাব্দ) প্রকাশকাল (খ্রিস্টাব্দ) বিষয়বস্তু
অগ্নিবীণা কার্তিক ১৩২৯ বঙ্গাব্দ ২৫শে অক্টোবর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ এই গ্রন্থে মোট বারোটি কবিতা আছে। কবিতাগুলি হচ্ছে – ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘বিদ্রোহী’, ‘রক্তাম্বর-ধারিণী মা’, ‘আগমণী’, ‘ধূমকেতু’, কামাল পাশা’, ‘আনোয়ার ‘রণভেরী’, ‘শাত-ইল-আরব’, খেয়াপারের তরণী’, কোরবানী’ ও মোহররম’। এছাড়া গ্রন্থটির সর্বাগ্রে বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ-কে উৎসর্গ করে লেখা একটি উৎসর্গ কবিতাও আছে।
সাম্যবাদী পৌষ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ ২০শে ডিসেম্বর ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ বইটিতে মোট ১১ টি কবিতা রয়েছে । সবগুলোতেই মানুষের সমতা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে ।
ঝিঙে ফুল চৈত্র ১৩৩২ বঙ্গাব্দ ১৪ই এপ্রিল ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ ছোটদের কবিতা
সিন্ধু হিন্দোল ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ এই কাব্যগ্রন্থে মোট ১৯টি কবিতা রয়েছে।
চক্রবাক ভাদ্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ, ১২ই আগস্ট ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ এই কাব্যে নজরুল বেদনার ছবি তুুুলে ধরেছেন; এতে রয়েছে প্রেমের অনুুুভূতি এবং অতীত সুুখের স্মৃতিচারণা।
নতুন চাঁদ চৈত্র ১৩৫১ বঙ্গাব্দ মার্চ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ। এতে রয়েছে নজরুলের ১৯টি কবিতা।
মরুভাস্কর ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ হজরত মোহাম্মদ সঃ এর জীবনী নিয়ে চারটি সর্গে ১৮ টি খণ্ড-কবিতা নিয়ে এই কাব্যগ্রন্থ।
নজরুল ইসলাম: ইসলামী কবিতা ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ নজরুল ইসলামের ইসলামী কবিতা সংকলন

 

কবিতা ও গান

গ্রন্থ প্রকাশকাল (বঙ্গাব্দ) প্রকাশকাল (খ্রিস্টাব্দ) বিষয়বস্তু
দোলন-চাঁপা আশ্বিন ১৩৩০ বঙ্গাব্দ অক্টোবর ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দ প্রথম সংস্করণ এই কাব্যগ্রন্থে ১৯টি কবিতা ছিল। সূচিপত্রের আগে মুখবন্ধরূপে সংযোজিত কবিতা “আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে” ১৩৩০ বঙ্গাব্দের (১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) জ্যৈষ্ঠ মাসের কল্লোল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের পরবর্তী সংস্করণে ৫০ টি কবিতা সংকলিত হয়।
বিষের বাঁশি শ্রাবণ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ ১০ই আগস্ট ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ এই গ্রন্থে ২৭ টি কবিতা রয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের বাজেয়াপ্ত ৫টি গ্রন্থের মধ্যে এটি অন্যতম।
ভাঙ্গার গান শ্রাবণ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ আগস্ট ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দ বিদ্রোহাত্মক কাব্যগ্রন্থ। ১১ নভেম্বর ১৯২৪ তারিখে তৎকালীন বঙ্গীয় সরকার গ্রন্থটি বাজেয়াফত করে ও নিষিদ্ধ করে। ব্রিটিশ সরকার কখনো এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেননি।
চিত্তনামা শ্রাবণ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ আগস্ট ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
ছায়ানট আশ্বিন ১৩৩২ বঙ্গাব্দ ২১শে সেপ্টেম্বর ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ এতে রয়েছে নজরুলের ৫০টি কবিতা।
পুবের হাওয়া মাঘ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ ৩০শে জানুয়ারি ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ
সর্বহারা আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ ২৫শে অক্টোবর ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ সর্বহারা কাব্যগ্রন্থে ১০ টি কবিতা রয়েছে
ফণী-মনসা শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ ২৯শে জুলাই ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ জিঞ্জীর কাব্যগ্রন্থে ১৬টি কবিতা রয়েছে
সঞ্চিতা আশ্বিন ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ, ১৪ই অক্টোবর ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ আটাত্তরটি কবিতা ও সতেরোটি গান মিলে একটি কাব্য-সংকলন।
জিঞ্জীর কার্তিক ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ, । ১৫ই নভেম্বর ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ভাদ্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ ১২ই আগস্ট ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ ২৪টি কবিতা আর গান নিয়েই এই গ্রন্থ। বাংলাদেশের রণসংগীত “চল চল চল, উর্ধ গগণে বাঝে মাদল” এই বই থেকে নেয়া হয়েছে।
প্রলয় শিখা অগ্রহায়ণ ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ আগস্ট ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ
নির্ঝর মাঘ ১৩৪৫ বঙ্গাব্দ ২৩শে জানুয়ারি ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ এই গ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ২৫টি। নজরুল ইসলামের নির্ঝর বইকে অনেক সমালোচকের কাছে একটি ভাগ্যবিড়ম্বিত বই বলে মনে হয়েছে।
সঞ্চয়ন ১৩৬২ বঙ্গাব্দ ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ
শেষ সওগাত বৈশাখ ১৩৬৫ বঙ্গাব্দ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ
ঝড় মাঘ ১৩৬৭ বঙ্গাব্দ জানুয়ারি ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ এতে রয়েছে নজরুলের ২৪টি কবিতা।

 

সংগীত

  • বুলবুল (গান) ১৯২৮
  • সন্ধ্যা (গান) ১৯২৯
  • চোখের চাতক (গান) ১৯২৯
  • নজরুল গীতিকা (গান সংগ্রহ) ১৯৩০
  • নজরুল স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৩১
  • চন্দ্রবিন্দু (গান) ১৯৩১
  • সুরসাকী (গান) ১৯৩২
  • বনগীতি (গান) ১৯৩১
  • জুলফিকার (গান) ১৯৩১
  • গুল বাগিচা (গান) ১৯৩৩
  • গীতি শতদল (গান) ১৯৩৪
  • সুর মুকুর (স্বরলিপি) ১৯৩৪
  • গানের মালা (গান) ১৯৩৪
  • স্বরলিপি (স্বরলিপি) ১৯৪৯
  • বুলবুল দ্বিতীয় ভাগ (গান) ১৯৫২
  • রাঙ্গা জবা (শ্যামা সংগীত) ১৯৬৬

গল্পগ্রন্থ

গ্রন্থ প্রকাশকাল (বঙ্গাব্দ) প্রকাশকাল (খ্রিস্টাব্দ) বিষয়বস্তু
ব্যথার দান ফাল্গুন ১৩২৮ বঙ্গাব্দ ১লা মার্চ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দ এটি নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। এই গ্রন্থের গল্পগুলোর ভাষা আবেগাশ্রয়ী, বক্তব্য নরনারীর প্রেমকেন্দ্রিক।
রিক্তের বেদন পৌষ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ ১২ই জানুয়ারি ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ মোট ৮টি গল্প আছে এতে। উল্লেখযোগ্য – রাক্ষুসী
শিউলি মালা কার্তিক ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ ১৬ই অক্টোবর ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ এই গ্রন্থে মোট ৪টি গল্প আছে। উল্লেখযোগ্য – পদ্ম-গোখরো, জিনের বাদ্‌শা
হক সাহেবের হাসির গল্প হাসির গল্প
সাপুড়ে আখ্যান

 

উপন্যাস

উপন্যাস প্রকাশকাল (বঙ্গাব্দ) প্রকাশকাল (খ্রিস্টাব্দ) বিষয়বস্তু
বাঁধন হারা শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ, আগস্ট ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ এটি একটি পত্রোপন্যাস। বাঁধন হারা নজরুল রচিত প্রথম উপন্যাস। করাচিতে থাকাকালীন তিনি ‘বাঁধন হারা’ উপন্যাস রচনা শুরু করেন।
মৃত্যুক্ষুধা মাঘ ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ জানুয়ারি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দ লেখক এতে তুলে ধরেছেন তৎকালিন দারিদ্র্য, ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষের পরিপ্রেক্ষিতে সপরিবার মেজ-বৌয়ের মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ। নারী জীবনের দুবির্ষহ অন্ধকার এবং সমাজের বাস্তবচিত্র এই উপন্যাসে তুলে ধরা হয়।
কুহেলিকা শ্রাবণ ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ ২১শে জুলাই ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ। ই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে নজরুলের রাজনৈতিক আদর্শ ও মতবাদ প্রতিফলিত হয়েছে।
  • [১]

নাটক

  • ঝিলিমিলি (নাট্যগ্রন্থ) ১৯৩০
  • আলেয়া (গীতিনাট্য) ১৯৩১[৩]
  • পুতুলের বিয়ে (কিশোর নাটক) ১৯৩৩
  • মধুমালা (গীতিনাট্য) ১৯৬০
  • ঝড় (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬০
  • পিলে পটকা পুতুলের বিয়ে (কিশোর কাব্য-নাটক) ১৯৬৪

প্রবন্ধ এবং নিবন্ধ

  • যুগবানী ১৯২২
  • ঝিঙ্গে ফুল ১৯২৬
  • দুর্দিনের যাত্রী ১৯২৬
  • রুদ্র মঙ্গল ১৯২৭
  • ধূমকেতু ১৯৬১
  • রাজবন্দির জবানবন্দি

অনুবাদ এবং বিবিধ

  • রাজবন্দীর জবানবন্দী (প্রবন্ধ) ১৯২৩
  • দিওয়ানে হাফিজ (অনুবাদ) ১৯৩০
  • কাব্যে আমপারা (অনুবাদ) ১৯৩৩
  • মক্তব সাহিত্য (মক্তবের পাঠ্যবই) ১৯৩৫
  • রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম (অনুবাদ) ১৯৫৮
  • নজরুল রচনাবলী (ভলিউম ১-৪,বাংলা একাডেমী)১৯৯৩

সঙ্গীত গ্রন্থাবলী

নজরুল সঙ্গীতের স্বরলিপি গ্রন্থের প্রচ্ছদ চিত্র। নজরুল নিজেই স্বরলিপি করেছিলেন।

  • বুলবুল (১ম খন্ড-১৯২৮, ২য় খন্ড-১৯৫২)
  • চোখের চাতক (১৯২৯)
  • চন্দ্রবিন্দু (১৯৪৬)
  • নজরুল গীতিকা (১৯৩০)
  • নজরুল স্বরলিপি (১৯৩১)
  • সুরসাকী (১৯৩১)
  • জুলফিকার (১৯৩২)
  • বনগীতি (১৯৩২)
  • গুলবাগিচা (১৯৩৩)
  • গীতিশতদল (১৯৩৪)
  • সুরলিপি (১৯৩৪)
  • সুর-মুকুর (১৯৩৪)
  • গানের মালা (১৯৩৪)

কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। তার রচিত “চল্‌ চল্‌ চল্‌, ঊর্ধগগনে বাজে মাদল” বাংলাদেশের রণসঙ্গীত হিসেবে গৃহীত। নজরুলের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী প্রতি বছর বিশেষভাবে উদযাপিত হয়। নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালে (বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়) ২০০৫ সালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় নামক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় কবির স্মৃতিতে নজরুল একাডেমি, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ও শিশু সংগঠন বাংলাদেশ নজরুল সেনা স্থাপিত হয়। এছাড়া সরকারিভাবে স্থাপিত হয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান নজরুল ইন্সটিটিউট– ঢাকা শহরের একটি প্রধান সড়কের নাম রাখা হয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!