তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনী pdf লিংক ছাড়াও তসলিমা নাসরিনের নিষিদ্ধ কবিতা ও তসলিমা নাসরিনের খারাপ কবিতা গুলোও এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা পেয়ে যাবেন। তসলিমা নাসরিনের ১৮+ কবিতা বই গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি বই হচ্ছে তসলিমা নাসরিনের আমার মেয়েবেলা উপন্যাসটি।
এখানে কয়েকটি তসলিমা নাসরিনের বিখ্যাত বই লিস্ট পিডিএফ ডাউনলোড লিংক সহ দেওয়া হলঃ
আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ Pdf Download, ২০০৬
নেই, কিছু নেই Pdf Download, ২০১০
নির্বাসন Pdf Download, ২০১২
নিচের লিংক গুলো থেকে তসলিমা নাসরিন এর বইগুলো ডাউনলোড করুন।
আপনার পছন্দ মতো ডাউনলোড করুন।
তসলিমা নাসরিন উপন্যাস Pdf Download | taslima Nasrin uponnas Pdf Download
নির্বাসিত এক লেখিকার নাম তসলিমা নাসরিন
অপরপক্ষ Pdf Download ১৯৯২
শোধ Pdf Download, ১৯৯২
নিমন্ত্রণ Pdf Download, ১৯৯৩
ফেরা Pdf Download, ১৯৯৩
লজ্জা Pdf Download, ১৯৯৩
ভ্রমর কইও গিয়া, Pdf Download ১৯৯৪
ফরাসি প্রেমিক Pdf Download ,২০০২
শরম Pdf Download,২০০৯
তসলিমা নাসরিন কবিতা Pdf Download | Taslima Nasrin Kabita Samagra Pdf Download
শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা, ১৯৮১ Pdf Download
নির্বাসিত বাহিরে অন্তরে, ১৯৮৯ Pdf Download
আমার কিছু যায় আসে না Pdf Download , ১৯৯০
অতলে অন্তরীণ Pdf Download, ১৯৯১
বালিকার গোল্লাছুট Pdf Download, ১৯৯২
বেহুলা একা ভাসিয়েছিল ভেলা Pdf Download, ১৯৯৩
আয় কষ্ট ঝেঁপে, জীবন দেবো মেপে Pdf Download, ১৯৯৪
নির্বাসিত নারীর কবিতা Pdf Download, ১৯৯৬
জলপদ্য Pdf Download, ২০০০
খালি খালি লাগে Pdf Download, ২০০৪
কিছুক্ষণ থাকো Pdf Download, ২০০৫
ভালোবাসো? ছাই বাসো! Pdf Download, ২০০৭
বন্দিনী Pdf Download, ২০০৮
তসলিমা নাসরিন প্রবন্ধ সংকলন Pdf Download
নির্বাচিত কলাম Pdf Download, ১৯৯০
যাবো না কেন? যাব Pdf Download, ১৯৯১
নষ্ট মেয়ের নষ্ট গল্প Pdf Download, ১৯৯২
ছোট ছোট দুঃখ কথা Pdf Download, ১৯৯৪
নারীর কোন দেশ নেই Pdf Download, ২০০৭
নিষিদ্ধ Pdf Download, ২০১৪
তসলিমা নাসরিনের গদ্য পদ্য Pdf Download, ২০১৫
তসলিমা নাসরিন এর উক্তিঃ
সংস্কৃত ভাষায় একটি কথা আছে,
“জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী”।
অর্থাৎ জননী এবং জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও বড়। কথাটি আমাদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রে একটি চরম সত্য। একটা মানুষ শৈশব থেকে যে স্থানে বেড়ে ওঠে, সেখানকার আশেপাশের পরিবেশ, ভাষা, সংস্কৃতি সবকিছুই তার দেহের প্রতিটি অনুচক্রিকায় মিশে যায়। জন্মভূমির শ্যামল মাটির মিষ্টি গন্ধ তার হৃদয়ে উচ্ছ্বাসের ঢেউ তোলে। সেই মানুষটির জীবন সবচেয়ে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তখন, যখন তাকে নিজের জন্মভূমি ছেড়ে চিরজীবনের জন্য নির্বাসিত হয়ে চলে যেতে হয় ভিনদেশে। ভাবুন তো, জন্মভূমির সেই সুজলা সুফলা প্রকৃতি একটিবার দেখার জন্য হৃদয় ছটফট করবে, কিন্তু কখনো আসতে দেয়া হবে না জন্মভূমির সেই অমৃত স্বর্গরাজ্যে। ঠিক এমন নিষ্ঠুর পরিণতি বরণ করে নিতে হয়েছে নির্বাসিতা লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে।
তসলিমা নাসরিনের শৈশব কেটেছ বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তাঁর অবস্থান তৃতীয়। বাবা রজব আলী ছিলেন পেশায় একজন শল্য চিকিৎসক। বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী তাঁর মা ঈদুল ওয়ারা ছিলেন একজন গৃহিণী। ১৯৭৬ সালে তিনি ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন এবং ১৯৭৮ সালে তিনি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৮৪ সালে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর দীর্ঘদিন তিনি চিকিৎসা পেশায় নিয়জিত ছিলেন।
তাঁর লেখালেখির হাতেখড়ি হয় শৈশবে। স্কুলে পড়াকালীন সময়ে তাঁর লেখা বহু কবিতা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ছাত্রাবস্থায় তিনি “সেঁজুতি” নামে একটি ম্যাগাজিন পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনার দায়িত্ব নেন। এই পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করতে করতে পরিচয় হয় বাংলাদেশের এখনকার স্বনামধন্য কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লার সাথে। তসলিমা তাঁর প্রেমে পড়ে যান এবং সকলের অজ্ঞাতসারে পালিয়ে ১৯৮১ সালের ২৯ শে জানুয়ারি তাঁর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সত্য, রুদ্রের প্রতি এত গভীর প্রেম থাকা সত্ত্বেও তাঁদের দাম্পত্যজীবন স্থায়ী হয়নি। ১৯৮৮ সালে রুদ্রকে ছেড়ে দেন তসলিমা নাসরিন। সেই শোক সামলানোর জন্য রুদ্র মাত্রাতিরিক্তভাবে মাদক সেবন শুরু করেন। সেই শোক নিয়েই ডিভোর্সের তিন বছর পর ১৯৯১ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর বেশকিছু জনপ্রিয় কবিতা ও গান রয়েছে। তুমুল জনপ্রিয় একটি বাংলা গান—
“ভালো আছি ভালো থেকো,
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো”
এই গানটির রচয়িতা তিনি। ধারণা করা হয়, এই গানটি তিনি তসলিমা নাসরিনকে উৎসর্গ করে লিখেছিলেন।
এরপর তসলিমা নাসরিন ১৯৯০ সালে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তার সে বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর তিনি মিনার মাহমুদকে বিয়ে করলেও, সে বিয়েও তাঁর বেশিদিন টিকেনি। এরপর তিনি আর বিয়ের সম্পর্কে না জড়ালেও বেশ কিছু প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এমন গুঞ্জন শোনা যায়।
এসবের মধ্যেই তিনি ‘শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা’, ‘আমার কিছু যায় আসে না ‘, ‘অতলে অন্তরীণ’, ‘বেহুলা একা ভাসিয়েছিল ভেলা’, ‘বালিকার গোল্লাছুট’ সহ বেশ কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস ও জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ করে ফেলেন। এগুলোর মধ্যে ১৯৮৬ সালে ‘শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। এরপর তাঁর খ্যাতি দ্রুত গতিতে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে, দুঃখজনক বিষয় এখানে, তিনি যতটা খ্যাতি অর্জন করেছেন তার চেয়ে বেশি হয়েছেন তিনি সমালোচিত। তাঁর লেখার মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত যৌনতা ও ধর্মকে কটাক্ষ করে আঘাত হানার কারণে তিনি পৃথিবীব্যাপী নিন্দিত ও সমালোচিত হন। সবচেয়ে করুণ পরিণতি বরণ করতে হয় ১৯৯৩ সালে তাঁর পঞ্চম উপন্যাস “লজ্জা” প্রকাশিত হওয়ার পর। পরের বছর ইসলাম ধর্মকে আঘাত করার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ সরকার বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর তাঁর আরও কয়েকটি বই বাংলাদেশ ও ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে গোটা বাংলাদেশ, এমনকি সে সময় একটি ধর্মীয় সংস্থা কর্তৃক তাঁর মাথার দামও নির্ধারণ হয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে গোপনে দেশ থেকে পালিয়ে যান এবং তারপর থেকে তিনি নির্বাসিত জীবন অতিবাহিত করছেন।
এরপর তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে থেকেছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় তিনি ভারত, আমেরিকা, জার্মানি ও সুইডেনে কাটিয়েছেন।
২০০২ সালে তাঁর বাবা মারা গেলে বাংলাদেশ সরকারে কাছে দেশে আসার আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু তবুও তাঁকে দেশে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
তবে, তাঁর লেখার গতিকে রুদ্ধ করতে পারেনি কেউ। তিনি নির্বাসনে থেকেই তাঁর লেখালেখি তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, তিনি ভূয়সী প্রশংসিত হলেও সমালোচিতও হয়েছেন। তিনি বেশ কিছু লেখক ও আর্টিস্ট সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করে সবার সামনে আসেন। তাঁর একটি জীবনী গ্রন্থে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক সম্পর্কে অপ্রীতিকর কথা লেখার জন্য সৈয়দ শামসুল হক তসলিমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা পর্যন্ত করেন।
এছাড়া, সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবানা ও সংগীতশিল্পী এ.আর.রহমানের মেয়ে খাতিজাকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন। শাবানা এ ব্যাপারে নির্বাক থাকলেও খাতিজা তাঁর কথার উত্তরে দাঁতভাঙা জবাব দেন। এর কারণেও তাঁর বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে।
পরিশেষে বলব, সবাই হয়তো তাঁর মতবাদের সাথে একমত নন। কিন্তু তিনি সকল আলোচনা সমালোচনার ঊর্ধ্বে একজন নারীবাদী লেখক। নারীর কল্যাণের চিত্র আলোকপাত করা হয়েছে তাঁর অধিকাংশ রচনায়। আজকের পৃথিবীতে বহু নারী আছেন নির্যাতিতা। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ থাকে না। কিন্তু তসলিমা নাসরিনের লেখা সেইসব উৎপীড়িতা নারীদের বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগায়। এভাবে লেখা দিয়ে কারো মর্মকে স্পর্শ করা, একজন লেখকের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। এছাড়া, তিনি আনন্দ পুরস্কার সহ বাংলাদেশে ও বাংলাদেশের বাইরে বহু পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন।
আজ এই মহীয়সী লেখিকার জন্মদিন। জন্মদিনে তাঁর জন্য রইলো নিরন্তর শুভকামনা এবং শ্রদ্ধার্ঘ্য।