(All Books) অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় Pdf Download
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় Pdf Download – Atin Bandyopadhyay Bangla pdf book free download link:
২ নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে PDf link
আকাশের গায়ে একটা লণ্ঠন জ্বলছে। ঈশম জানত, এ সময়ে জেলেনৌকা থাকবে-বর্ষার জল খাল বিল ধরে নেমে যাচ্ছে। যে জল এ অঞ্চলে উঠে এসেছিল জোয়ারে-আধুন মাসের টানে তা নেমে যাবে । জলের সঙ্গে মাছ এবং কচ্ছপ। জেলেরা এসেছে, খড়া জাল নিয়ে খালের ভিতর জাল পেতে অন্ধকারে ঘাপটি মেরে বসে আছে। ঈশম খালের পাড়ে সেই লণ্ঠনের আলো পর্যন্ত হেঁটে গেল। পাড়ে গিয়ে দাঁড়াল । ডাকল, আমি ঈশম। আমারে পার কইরা দ্যাও। আমি যাইতাছি এক খবর নিয়া। ধনকর্তার পোলা হইছে। তারপর সে কেন যে হঠাৎ ডাকল, বড়মামা আছেন, বড়মামা! বড়মামি আপনের লাইগা জাইগা বইসা আছে, বাড়ি যান। কোনও উত্তর এল না। শুধু একটা নৌকা ওপার থেকে ভেসে এল। বলল, ধনকর্তার পোলা হইছে ? ঈশম বলল, হ।
-তবে কাইল যামু, একটা গরমা মাছ লইয়া যামু। মাছ দিয়া একটা পিরান চাইয়া নিমু। বলে সে পাটাতন তুলে অন্ধকারে একটা বড় মাছ টেনে বের করল। ঈশম লণ্ঠনের আলোতে নীল রঙের তাজা মাছটা পাটাতনে লাফাতে দেখল। চোখ দুটো বড় অবলা। যেন এক পাগল মানুষ নিরন্তর এইসব মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফুল-ফল পাখি দেখে বেড়াচ্ছে—এই চোখ দেখলে, পাগল মানুষটার চোখ শুধু ভাসে। বড়মামি বড় বড় চোখ নিয়ে প্রত্যাশায় বসে আছে, কখন ফিরবে মানুষটা । সে বলল, বড়মামারে দ্যাখছ ?
মানুষটা বলল, বড়কর্তারে আইজ দেখি নাই । ঈশম আর কোনও কথা বলল না। এই সব মাঠে পাগল মানুষ দিনরাত ঘুরে বেড়ান। কোন অন্ধকারে, কোথায় তিনি কার উদ্দেশে হেঁটে যান ঈশম টের করতে পারে না। তাকে খাল পাৰ করে দিলে, সে মাঠ ধরে হাঁটতে থাকল শুধু। | এখন সে পাটের জমি ভাঙছে । এখানে এখন কোনও ফসল নেই। কলাই, খেসারি এসব থাকার কথা—কিন্তু কিছুই নেই । শুধু ফসলহীন মাঠ ! শুধু খোঁচা খোঁচা দাড়ির মতো পাট গাছের গোড়া উঁকি মেরে আছে। যোগী-পাড়াতে এত রাতেও তঁাত বোনা হচ্ছে । মাঠেই সে তঁাতের শব্দ পেল। সে গ্রামে উঠে যাবার মতলবে কোনাকোনি হাঁটছে। জেলেদের নৌকাগুলি এখন আর দেখা যাচ্ছে । শুধু খড়া জালের মাথায় বাঁশের ডগাতে লণ্ঠনের আলো প্রায় যেন এক ধ্রুবতারা-~~ওকে পথের নির্দেশ দিচ্ছে । সে কতটা পথ হেঁটে এল, এবং কোনদিকে উঠে যেতে হবে~-অন্ধকারে সেই এক আলো তাকে সব বলে দিচ্ছে। এ মাঠের শেষেই সেই বুড়ো শিমুল গাছটা যেন ক্রমে অবয়ব পাচ্ছে। দিনের বেলাতে এ-জমি থেকে গাছটা স্পষ্ট দেখা যায়। সেই গাছটার পাশের গ্রামে একবার মড়ক লেগেছিল—ঈশম কেমন ভয়ে ভয়ে হাঁটছে ! শিমুলগাছটার দূরত্ব ঈশমকে কিছুতেই ভয় থেকে রেহাই দিচ্ছে না। সে যত দুর দিয়ে যাচ্ছে তত মনে হচ্ছে গাছটা ওর দিকে হেঁটে আসছে । ডান পাশে প্রায় আধ ক্রোশ হেঁটে গেলে সেই গাছ এবং নিচে তার কবরভূমি–যেহেতু টিলা জমি থেকে একবার সে গাছটাকে দেখতে পেয়েছিল, একদিন হাট ফেরত রাতে গাছটার মাথায় সে আলো জ্বলতে দেখেছিল—সেজন্য ঈশম ভয়ে ভয়ে দ্রুত পা চালিয়ে যোগীপাড়াতে উঠে এল। কেউ দেখে ফেললেই বলবে, এলাম সেই কবর ভেঙে-কারণ ঈশমের মতো সাহসী পুরুষ হয়–এ তল্লাটে সে এমন একজন সাহসী মানুষ। কিন্তু ঈশম কোনওকালে তার ভয়ের কথা খুলে বলে না। সাহসী বলে সে রাতেবিরেতে পরাণের ভিতরে ভয় লুকিয়ে রেখে চোখ বুজে চলে যেতে থাকে। যোগীপাড়াতে উঠতেই মানুষের শব্দে, চরকার শব্দে এবং শানা মাকুর শব্দে ভয়টা কেটে গেল। তারপর পরিচিত মানুষের গলা পেয়ে বলল, আমীর চাচার গলা পাইতাছি। .
~~-তুমি… ? ~~-আমি ঈশম। -~এত রাইতে !
যামু মুড়াপাড়া। ধনকর্তার পোলা হইছে-খবর লইয়া যাইতাছি। আপনার শরীর ক্যামন ? –ভাল নারে বাজান। ভাল না। একটু থেমে বলল, বড়কর্তার মাথাটা আর ঠিক হইল না ? —মা চাচা । ~-শোনলাম বুড়া কর্তা চক্ষে দেখতে পায় না।________________
নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে ১৩
–না । সারাদিন ঘরে বইসা থাকে। বড়মামি, বুড়া ঠাইরেন দেখাশুনা করে। -পোলাটা পাগল হইল আমার কর্তার-অ চক্ষু গেল। -হ চাচা। -তা একটু বইস। তামাক খাও।
—আর একদিন চাচা। আইজ যাইতে দ্যান । ঈশম কথা বলতে বলতে সৈয়দ মিস্ত্রির শোলার মাচান অতিক্রম করে রামপদ যোগীর আমবাগানে ঢুকে গেল। তারপর গ্রামের মসজিদ পার হয়ে মাঠে পড়তেই শিমুল গাছটার কথা মনে হল । সে জোরে জোরে মনের ভিতর সাহস আনার জন্য বলল, এলাহী ভরসা । গাছটা যেন ক্রমে শয়তান হয়ে যাচ্ছে। শয়তানের মতো পিছু নিয়েছে । মাঝে-মাঝে হাতের লাঠিটা লণ্ঠনটা ভয়ানক ভারী-ভারী মনে হচ্ছে। সে ভাবল—এমন তো হবার কথা নয়। সে ভাবল, অনেক রাত, অনেক দূরে সে কত মানুষের সুসংবাদ, দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে গেছে—অথচ আজ এখনও সে ফাওসার চক ভাঙতে পারেনি ।শিমুল গাছটা বড় কাছে মনে হচ্ছে। কখনও পেছনে তাড়া করছে, কখনও সামনে ! সে দু’বার লাঠিটা মাথার উপর বন বন করে ঘোরাল। ওর পাইক খেলার কথা মনে হল-লাঠি খেলায় ওস্তাদ ঈশম এই মাঠে গাছটাকে প্রতিপক্ষ ভেবে মাঝে মাঝে লাঠি ঘোরাতে থাকল। লণ্ঠনটা সে বাঁ হাতে রেখে ডান হাতে লাঠি মাথার উপর ঘোরাচ্ছে এবং নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। যখন ধানগাছগুলো পা জড়িয়ে ধরেছে, সে লাঠি দিয়ে ধানগাছ সরিয়ে ফের হাঁটছে । সে লাঠি দিয়ে মাঝে মাঝেই ধান গাছ সরাচ্ছিল—কিছুটা নিজেকে অন্যমনস্ক করার জন্য, কিছুটা পথ পরিষ্কার করার জন্য। মাঠে নেমেই শরীরটা ঠাণ্ডা মেরে যাচ্ছে। ভয়ানক শ মর্থ শরীর ঈশমের । এই বুড়ো বয়সেও সে ঘাড়-গলা শক্ত রাখতে পেরেছে। অথচ এই রাত, অন্ধকার, বিশাল বিলেন মাঠ এবং যে শিমুল গাছটা এতক্ষণ ওকে তাড়া করছে—এই সব মিলে তাকে কেমন গোলমালের ভিতর ফেলে দিয়েছে। ঈশম লণ্ঠনের আলোতে যেন পথ দেখতে পাচ্ছে না। এই বিল ভেঙে উঠতে পারলেই ফের গ্রাম, ফের গ্রামের পথ, গোলাকান্দালের ভুতুড়ে পুল এবং পুরীপূজার মাঠ । ফের গ্রামের পর গ্রাম, তারপর বুলতার দিঘি এবং নমশূদ্রপাড়াপেড়াব পোনাব, মাসাব গ্রাম।
অন্ধকার বলেই আকাশে এত বেশি তারা জুলজুল করছিল। বিলেন জমি নিচে নামতে নামতে যেন পাতালে নেমে গেছে। আলপথগুলি এখনও ঠিক মতো পড়েনি, অঘ্রান গেলে, পৌষ এলে এবং ধানকাটা হলে পথগুলি স্পষ্ট হবে। এই বিলে পথ চিনে অন্য পারে উঠে যাওয়া এখন বড় কষ্টকর।
অনেকক্ষণ ধরে ঈশম একটি পরিচিত আলপথের সন্ধান করল । যারা মেলাতে যায়, অথবা বান্নিতে, তারা এই আলপথে বিলের অন্য পাড়ে উঠে যায়, ধানজমির ফঁাকে ফাকে কোথায় যেন পথটা লুকিয়ে আছে। সে সন্তর্পণে গাছ তুলে তুলে দেখছে আর এগুচ্ছে। এই বুঝি সেই পথ, কিছু দূরে গেলেই মনে হচ্ছে, না সে ঠিক পথে আসেনি—পথটা ওকে নিয়ে বিলের ভিতর লুকোচুরি খেলছে। তারপর ভাবল, বিলের জমির ধারে ধারে হাঁটতে থাকলে সে নিশ্চয়ই পাশের গ্রামে গিয়ে উঠতে পারবে। মনে মনে আবার উচ্চারণ করল, এলাহী ভরসা। তাকে এ-রাতে, এ-বিল, এ-মাঠ অতিক্রম করতেই হবে । অন্ধকারে পথ যত অপরিচিত হোক, শয়তানের চোখ যত ভয়ঙ্কর হোক– সে এ-মাঠ ঠেলে অন্য মাঠে গিয়ে পড়বেই । ধনকর্তাকে খবর দেবেই ।
সে কখনও দৃঢ় হল । অথবা কখনও সংশয়ে ভুগে সে কেমন দুর্বল হয়ে পড়ছে। সে যেন ক্রমে এই বিলের ভিতর ডুবে যাচ্ছে। এবং মনে হচ্ছে তার, সে একই জায়গায় ঘুরে ঘুরে ফিরে আসছে। সে আদৌ এগুতে পারছে না। সে এবার বলল, খুদা ভরসা । সে যে ঘুরে ফিরে একই জায়গায় ফিরে আসছে পরখ করার জন্য হাতের লাঠিটা ধানগাছ সরিয়ে কাদামাটিতে পুঁতে দিল । সে সেই নির্দিষ্ট স্থানটি চিনে রাখার জন্য কিছু গাছ উপড়ে ফেলল। একটা কাকতাড়ুয়ার মতো করে গাছগুলিকে বেঁধে রাখল লাঠিতে । তারপর গোলমতো চারপাশে একটা দাগ দিল।
অনেকক্ষণ ধরে এই বিল এবং পথ ওর সঙ্গে রসিকতা করছে । সে একটু সময় বসল।বিশ্বচরাচর নিঝুম । মনে হয় ঠিক যেন এই বিল সেই পাগল ঠাকুরের মতো রহস্যময় । সে নিজের মনে হাসবার চেষ্টা করল। অথচ গলা শুকননা । ওব সামান্য কাশি উঠে এল গলা থেকে। দ্রুত সেই শব্দ________________
১৪ নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে
বিলের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছিল। অপরিচিত শব্দ কোথাও। সে কান পেতে রাখল। এখন এই মাঠ আর তার কাছে পাগল ঠাকুরের মতো রহস্যময় নয়, নিঃসঙ্গ মাঠ অঘ্রানের শিশিরে ভিজে ওর পঙ্গু স্ত্রীর মতো ঘুমাচ্ছে অথবা রাতের কীটপতঙ্গ সকল, ঝিঝিপোকা সকল শীতের মরসুমের জন্য আর্তনাদ করছে। কবে শীত আসবে, কবে শীত আসবে, মাঠ ফাকা হবে, শস্যদানা মাঠে পড়ে থাকবে, আমরা উড়ে উড়ে খাব, ঘুরব-ফিরব, নাচব-খেলব । সে যত এইসব শুনতে থাকল, যত এইসব চিন্তায় বিষন্ন হতে থাকল তত সেই ভয়াবহ শিমুল গাছটা মাথায় আলো জ্বেলে ওর দিকে যেন এগিয়ে আসছে। | শিমুল গাছটার মাথায় আলোটা জ্বলছে আর নিভছে । অথবা নিভে গিয়ে আলেয়া হয়ে যাচ্ছে । দূরে দূরে যেন বিলের এ-মাথা থেকে অন্য মাথায় আলেয়াটা ওকে নেচে নেচে খেলা দেখাচ্ছে। সে বলল, ভালরে ভাল ! এভাবে বসে থাকলে ভয়টা ওকে আরও পঙ্গু করে দেবে। সে দ্রুত উটো মুখে ছুটতে পারলেই কোন-না-কোন গ্রামে উঠে যেতে পারবে।
সুতরাং সে হাতের লণ্ঠন নিয়ে দ্রুত ছুটতে থাকল। হাতের লণ্ঠনটা দু’বার দপদপ করে জ্বলে উঠল । লণ্ঠনটা নিভে যাবে ভয়ে সে দ্রুত ছুটে যেতে পারল না। সে দু’হাঁটুতে আর শক্তি পাচ্ছে না। বার বার কেবল পিছনের দিকে তাকাচ্ছে। সে এবার দেখল, স্পষ্ট দেখতে পেল, শিমুল গাছটা যথার্থই এগিয়ে আসছে। সে দেখল গাছের মাথায় আলো আর ডালে ডালে মড়কের মৃ৩দেহ ঝুলছে। সে ধানগাছ দিয়ে কাকতাড়ুয়া জায়গাটায় ফিরে এসেছে। শিমুল গাছটা সহসা ভাৰম্ভ হয়। গেল । এতক্ষণ তবে সে একই বৃত্তে ঘুরছে ! ভয়ে বিবর্ণ ঈশম দস্যুর মতো লাথি মারল কাকতাড়ুয়াকে। উপড়ানো গাছগুলি অন্ধকারে বিলের প্রচণ্ড হাওয়ায় উড়তে থাকল।
সে বলল, শয়তানের পো ভাবছটা কি শুনি ! বিলের পানিতে আমারে ডুবাইয়া মারতে চাও। বলেই সে লাঠিটা তুলে উপরের দিকে ঘোরাল । যেমন সে মহরমের দিন বাজনার সঙ্গে সঙ্গে সামনে-পিছনে অথবা উপরে-নিচে, ডাইনে-বাঁয়ে লাঠি ঘোবাতো, লাঠি এগিয়ে দিত, পিছিয়ে আনত, সে উপরের দিকে উঠে যাবার সময় তেমন সব খেলা দেখাতে থাকল । এই বিলের জমি এবং শিমুল গাছটার ভয়ে সে এখন মরিয়া। কিন্তু খেলা দেখালে হবে কি—কারা যেন ওকে পেছনে টানছে । চারপাশে হাঁটছে কারা । মনে হচ্ছে সারা বিলে মানুষের পায়ের শব্দ ভেসে বেড়াচ্ছে। একদল অবয়বহীন শয়তান ওর সঙ্গে হাঁটছে অথচ কথা বলছে না। অন্ধকারে সে কেবল উপরে উঠাল পরিবর্তে নিচে নেমে যাচ্ছে। এবারে সে চিৎকার করে উঠল, খুদা এইটা কি হইল ! ধনকর্তাগ, আমারে কানওলায় ধরছে। সে লণ্ঠন ফেলে লাঠি ফেলে বিলের আলে আলে ঘুরতে থাকল। ধানপাতা লেগে পা কেটে যাচ্ছে। সে বার বার একই জায়গায় ঘুরে ঘুরে এসে হাজির হচ্ছে। আর এ সময়ই সে দেখল ভূতুড়ে আলোটা একেবারে চোখের সামনে জুলছে নিভছে । সেই আলোর হাজার চোখ হয়ে গেল, অন্ধকারের ভিতর ভূতের মতো চোখগুলো জ্বলছে। ঈশম আব লড়তে পারল না, ধীরে ধীরে আলের উপর সংজ্ঞাহীন হয়ে গেল ।
শরীরটা আমার ভাল বড় কাছারি বাড়িতে চিঠি দিছে ।
আগে সুন্দরআলি লণ্ঠন হাতে । পিছনে ধনকর্তা। তিনি চারদিন আগে ধনবৌর চিঠি পেয়েছেন। ধনবে লিখেছে—-শরীরটা আমার ভাল যাচ্ছে না, এ সময় তুমি যদি কাছে থাকতে । ধনবোর চিঠি পেয়ে চন্দ্রনাথ আর দেরি করেন নি। বড় কাছারি বাড়িতে মেজদা থাকেন, তার কাছে গিয়ে বললেন, দাদা, আমি একবার বাড়ি যামু ভাবছি । আপনের বৌমা চিঠি দিছে। অর,শরীর ভাল না-একবার তবে ঘুইরা আসি । ভূপেন্দ্রনাথ তার সঙ্গে সুন্দরআলিকে দিয়েছেন। রাত হয়ে যাবে | যেতে । সেরেস্তায় কাজের চাপ পডেছে-নতুবা তিনি নিজেও বাড়ি যেতেন। ছেলে হয়েছে এমন খবর জানা থাকলে চন্দ্রনাথ এতটা বোধহয় উদ্বিগ্ন হতেন না। তিনি দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটছেন। সুন্দরআলিকে নিয়ে লণ্ঠন হাতে নেমে এসেছেন। শীতলক্ষ্যার পাড়ে পাড়ে এসে বাজার বাঁয়ে ফেলে মাসাব পোনাৰ হয়ে বুলতার দিঘি ধরে ক্রমশ এগিয়ে চলেছেন ।পেয়াদা সুন্দরআলি মাঝে মাঝে কাশছিল । নির্ভয়ে নিঃশব্দে তাঁরা এ মাঠে এসে নেমেছেন। মাঠ পার হলেই ফাওসার খাল, তারপর দু’ক্রোশ পথ। বাড়ি পৌঁছাতে দেরি নেই। এমন সময়ে সুন্দরআলি চিৎকার করে উঠল, নায়েব মশাই, খুন। হাত থেকে লণ্ঠনটা পড়ে যাবে যাবে ভাব হল সুন্দরআলির। সুন্দরআলি________________
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় আর কোন বই পিডিএফ ডাউনলোড লিঙ্ক লাগলে কমেন্ট করবেন.