Books
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সমগ্র Pdf Download (৭মার্চ)
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সমগ্র Pdf ভিডিওটি দেখুন আশা করি ভাল লাগবে।
- বইয়ের নাম : বঙ্গবন্ধুর ভাষণ (bongobondhur-vason)
- লেখক: ড. আনু মাহমুদ (সম্পাদক)
- ধরন:ভাষণ, বক্তৃতা ও উপদেশ সংকলন
- প্রকাশনী: ন্যাশনাল পাবলিকেশন
- রিভিউয়ারঃ শরিফ হাসান খান
- পৃষ্ঠা: ৩৬৭
- মুদ্রিত মূল্য: ৫০০ টাকা মাত্র
- রেটিংঃ[ ৯ /১০]
৭ মার্চের ভাষণ PDF link-
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উচ্চারণগুলোই যেন অমর বাণী। মহান এই নেতার কণ্ঠে বিভিন্ন সময় দেশের গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িকতা, রাজনৈতিক সমঝোতা ও সহনশীলতা, দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে যে কথাগুলো উচ্চারিত হয়েছে, তা যেন এখনো সাম্প্রতিক। তাঁর এমন কিছু অমর, কালোত্তীর্ণ উচ্চারণই রইল এখানে।
গণতন্ত্র, বিরোধী দল, বাক্ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রশ্নে
দেশে কোর্ট-কাচারি আছে, আছে প্রচলিত আইন এবং কাউকে শাস্তি দিতে হলে যথাযোগ্য বিচারের মাধ্যমে সেটা দিতে হবে। আমরা জানি যে বিগত সাত বছর এই পবিত্র সংসদের অনেক সদস্যকে বিনা বিচারে জেলে নেওয়া হয়েছে। একজন মাননীয় সদস্য পূর্ববঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁকে পাকিস্তানের স্বার্থে জননিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়।
—২১ জানুয়ারি ১৯৫৬
পাকিস্তান গণপরিষদের করাচি অধিবেশনে ইসলামিক রাষ্ট্রের সব নাগরিকের সম-অধিকার বিষয়ে আলোচনায়
আমাদের টেলিফোন টেপ করা হয় এবং চিঠিগুলো পুনরায় সেন্সর করা হয়। আপনারা বলে থাকেন যে বাক্স্বাধীনতা মানেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। আপনি কি জানেন যে পূর্ববঙ্গে সম্পাদকদের ডেকে বলা হয় আপনারা এটা ছাপাতে পারবেন না; আপনারা ওটা ছাপতে পারবেন না। স্যার, তাঁরা সত্য কথা পর্যন্ত লিখতে পারেন না এবং আমি সেটা প্রমাণ করে দিতে পারি। পূর্ব বাংলা সরকার লিখুক আর একজন কেরানি লিখুক, সেটা বড় কথা নয়। নির্দেশটা যায় সচিবালয় থেকে যে আপনি বিষয়গুলো সম্পর্কে লিখতে পারবেন না। সরকারের তরফ থেকে একজন ইন্সপেক্টর গিয়ে নির্দেশনা দেন যে আপনি একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে লিখতে পারবেন না।
—৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬
পাকিস্তান গণপরিষদের করাচি অধিবেশনে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতা বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে
অসাম্প্রদায়িকতা
শাসনতন্ত্রে লিখে দিয়েছি যে কোনো দিন আর শোষকেরা বাংলার মানুষকে শোষণ করতে পারবে না ইনশা আল্লাহ। দ্বিতীয় কথা, আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোটে জনগণের প্রতিনিধিরা দেশ চালাবে, এর মধ্যে কারও কোনো হাত থাকা উচিত নয়। তৃতীয়, আমি বাঙালি। বাঙালি জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই সম্মানের সঙ্গে। চতুর্থ, আমার রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ। মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান তার ধর্ম-কর্ম পালন করবে, হিন্দু তার ধর্ম-কর্ম পালন করবে, বুদ্ধিস্ট তার ধর্ম-কর্ম পালন করবে। কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না। তবে একটা কথা হলো, এই ধর্মের নামে আর ব্যবসা করা যাবে না।
—২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩
সিরাজগঞ্জে দেওয়া এক জনসভার ভাষণ
তিনি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানিতিনি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি
বৈষম্যের বিরোধিতা, স্বাধীনতার সংগ্রাম
কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে তোমরা ৮৫ জন, আমরা ১৫ জন। সামরিক বিভাগে তোমরা ৯০ জন, আমাদের দিয়েছ ১০ জন। বৈদেশিক সাহায্যের তোমরা খরচ করেছ ৮০ ভাগ, আমাদের দিয়েছ ২০ ভাগ। মহাপ্রলয়ে দক্ষিণ বাংলার ১০ লাখ লোক মারা গেল। লাখ লাখ লোক অসহায় অবস্থায় রইল। রিলিফ কাজের জন্য বিদেশ থেকে হেলিকপ্টার এসে কাজ করে গেল—অথচ ঢাকায় একখানা মাত্র সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার ছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আর কোনো হেলিকপ্টার আসলো না। আমরা এসব বেইনসাফির অবসান করব।
—৩ জানুয়ারি ১৯৭১
রেসকোর্স ময়দানে দেওয়া জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সদস্যদের জনগণের সামনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান
কারও ওপর আমাদের কোনো আক্রোশ নাই। আমরা স্বাধিকার চাই। আমরা চাই আমাদের মতোই পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বেলুচ, পাঠানরা নিজ নিজ অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকুক। কিন্তু তার মানে এই না যে সাত কোটি বাঙালি কারও গোলাম হয়ে থাকবে। ভ্রাতৃত্বের অর্থ দাসত্ব নয়—সম্প্রীতির, সংহতির নামে বাংলাকে আর কলোনি বা বাজার হিসাবে ব্যবহার করতে হবে না।
আলোচ্য বইটি সম্পর্কে পাঠককে ধারণা দিতে অনুচ্ছেদগুলোর নাম আলোকপাত করছি।
অনুচ্ছেদসমূহ:
__________________
বঙ্গবন্ধু প্রস্তাবিত আওয়ামী লীগের ৬-দফা
আমাদের বাঁচার দাবি ৬ দফা কর্মসূচি
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে শেখ মুজিবের জবানবন্দি।
ইন শা আল্লাহ সাফল্যের সাথে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবো
এই নির্বাচনে বাংলার ভাগ্য নির্ধারিত হবে
আমরা যাতে নিজেদের ভাগ্যনিয়ন্তা হতে পারি
শেখ মুজিবুর রহমানের নির্বাচনী আবেদন
প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় চাই নির্ভেজাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা
জনসাধারণের প্রথম মহান বিজয়
সাত কোটি বাঙালির জয়
৬-দফা ভিত্তিক শাসনতন্ত্রেই সুবিচারের নিশ্চিতি
৬-দফা কর্মসূচির পক্ষে ঐতিহাসিক রায়
জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে
উস্কানিমূলক হত্যাকান্ড সত্বেও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান
বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশে আত্মনিয়োগ করুন
জনগণের রায় আমরা পেয়েছি
বাংলা ও বাঙালির প্রকৃত ইতিহাস রচনা করুন
আমার দলই বাংলাদেশের একমাত্র মুখপাত্র
শিল্পীদের স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতি এগিয়ে আসবে
চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে সফল হওয়া যাবে না
জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর বিঘ্নিত করার চেষ্টা
পাকিস্তানে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চলছে
আওয়ামী লীগের নীতি ও লক্ষ্য স্পষ্ট
ভাষা আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ফল বাংলা একাডেমি
শহীদের রক্ত যেন বৃথা না যায়
বাংলাদেশের মাটি থেকে গনবিরোধী শক্তিকে উৎপাটিত করুন
শোষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলবে
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা দুর্ভাগ্যজনক
৩ মার্চ শোক দিবস হিসেবে পালিত হবে
হত্যা করে এ আন্দোলন থামানো যাবেনা
প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ নিষ্ঠুর তামাশা
বীর জনগণকে
অভিনন্দন
জানাচ্ছি
৭ মার্চ ১৯৭১ঃ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ
আমাদের অহিংস অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে
উস্কানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করুন
হুমকির কাছে মাথা নত করি না
আওয়ামী লীগের নির্দেশসমূহ পালনের জন্য
অভিনন্দন
জানাই
সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত
দাবির প্রশ্নে কোন আপোষ নেই
বাংলায় মুক্তির জন্য শেষ সংগ্রাম
অশুভ শক্তির চক্রান্ত সফল হবেনা
স্বাধীনতার ঘোষণা
এই মুহূর্তে আমি জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই
অশুভের বিরুদ্ধে শুভের বিজয় হয়েছে
ফাঁসির মঞ্চে যাবার সময় বলবো,আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ।
বাংলা আমার ভাষা
আসুন সমবেতভাবে বাংলার গড়ি
স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কিত প্রস্তাব
১৯৭২ সালের মহান মে দিবসে জাতির উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু
আমার কর্তব্য আমি করবো
আমরা চোষনের চাবিকাঠি ধ্বংস করে দিয়েছি
সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষা করতে নিজেদেরও আত্মসমালোচনা করুন
সংবিধানের আদর্শের ভিত্তিতে বাংলার সমাজ গড়ে উঠবে
চারটি মৌলিক আদর্শের উপর শাসনতন্ত্র রচিত হয়েছে
বাংলার দুঃখী মানুষের নিকট থেকে সরে যেও না
ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা গড়া প্রয়োজন
কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়াতে হবে
পুলিশ এখন জনগণের
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাতে হবে
বাংলাদেশ এসেছে বাংলাদেশ থাকবে
বিনা কারণে সিস্টেম পরিবর্তন করিনি
আপনারা কিন্তু সবাই এক
বইটা কোন শ্রেণির পাঠকের জন্য কার্যকরী?
বইটা মোটাদাগে যুবক এবং মধ্যবয়সী সবার জন্যেই বেশ কার্যকরী।যারা ভাষণ, উপদেশ শুনতে পছন্দ করে তাদের জন্য বইটা জ্ঞানের পরিধিকে প্রসারিত করবে নিসন্দেহে।
.
বইটা আমার কাছে এইজন্য ভালো লেগেছে অনুচ্ছেদগুলো একটার পর একটা বিন্যস্ত ছিলো।গল্পের প্লটের খাতিরে আপনি বইটা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শেষ না করে উঠতে পারবেন না। বিশ্বাস করেন একটুও বাড়িয়ে বলছিনা যা সত্যি তা না বললে লেখকের সাথে অবিচার করা হবে।বইয়ের ভাষাশৈলীও ভালো লেগেছে। বিন্যাসও ভালো।
.
আর বইয়ের অসঙ্গতির কথা যদি বলি তাহলে বলবো যেহেতু এইটা লেখকের ৩৬৭ পৃষ্ঠার বই সেই হিসেবে সমালোচনা করার মতো বানান ভুল চোখে পড়েনি। দু’একটা যে নেই একেবারে তা না!
.
সর্বোপরি, বইটি লেখকের হৃদয়ের খুব কাছাকাছি থেকে লেখা বলে মনে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চর্চা করলেই কেবল সম্ভব এমন বই পাঠকদেরকে উপহার দেওয়া।
ড. আনু মাহমুদ স্যারের জন্য
শুভ কামনা
C-
শরিফ হাসান খান
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বইটা কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না.