একজন কমলালেবু PDF Download (full)
Ekjon Komolalebu PDF download link : – Link :-1 | Link :-2 | Link :-3| Link :-4| Link :-5
book | একজন কমলালেবু |
Author | শাহাদুজ্জামান |
Publisher | প্রথমা প্রকাশন |
ফরমেট | পিডিএফ ডাউনলোড |
Edition | 1st Published, 2017 |
Number of Pages | 240 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
দেখতে পেলেন তার ডান পা’্টা দুমড়ে গেছে, বুকের পাঁজরের হাড়ও গেছে ভেঙে। তারা ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়ে দিলেন তার দুমড়ে যাওয়া পা, বুকের পাজর। তাকে স্যালাইন দেওয়া হলো, নাকে অক্সিজেন দেওয়া হলো, দেওয়া হলো নানা রকম ইনজেকশন । ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের একটা রং ওঠা লোহার খাটে অচেতন শুয়ে রইলেন জীবনানন্দ দাশ, বাংলা সাহিত্যের প্রহেলিকাময় এই মানুষ । জীবনের নানা পাকচক্র জীবনানন্দকে সবুজ ঘাস নদী জোনাকির দেশ বরিশাল থেকে টেনে এনে ফেলেছে কলকাতার বিষাক্ত এই ট্রাম লাইনের ওপর। সেদিন ১৪ অক্টোবর ১৯৫৪ সাল। আরও আট দিন জীবনানন্দ ওই ওয়ার্ডে তন্ডরাচ্ছন্ন, অচেতন শুয়ে থাকবেন । তার চিকিৎসা চলবে । হাসপাতালে আসবেন ার গুটিকয় চেনাজানা মানুষ, আত্মীয়জন। মাঝে মাঝে চেতনা ফিরে আসবে র, দু-একটা কথা বলবেন তিনি । হাসপাতালের করিডরে কবিতায় পাওয়া এক মেডিকেল ছাত্র ভূমেন্দ্র গুহকে ছোটাছুটি করতে দেখা যাবে। বহুকাল পর জীবনানন্দের জীবন নিংড়েই কাটবে ভূমেন্দ্রের জীবন।
একজন কমলালেবু PDF: তিনি এবং তার বন্ধুরা রাত জেগে জীবনানন্দকে পাহারা দেবেন। ডাক্তারদের সঙ্গে উদ্দিপ্ন পরামর্শ করবেন তার ভাই অশোকানন্দ দাশ । জীবনানন্দের স্ত্রী লাবণ্য দাশ এসে বিষগ্ন দাড়াবেন তার বিছানার পাশে। সন্ধ্যা নামলে তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন। জীবনানন্দের বোন সুচরিতা দাশ অবশ্য, ব্রকটা বেতের ঝুড়িতে ফল আর ফ্লাঙ্কে চা নিয়ে হাসপাতালের করিডরের বেঞ্চে জেগে থাকবেন রাতের পর রাত। নার্স ন্তি মুখার্জি তোয়ালে দিয়ে জীবনানন্দের কপালের ঘাম মুছে দেবেন, বিছানার পাশের টেবিলে একটা ফুলদানিতে রাখবেন ফুল। ইমার্জেন্সি রুমটাতে তখন নানা রকম রোগীর ঠাসাঠাসি ভিড় । কেউ চেঁচাচ্ছে, কেউবা শ্বাসকষ্টে বা ব্যথায় গোঙাচ্ছে। কারও মাথা ফেটেছে বলে রক্তের ছোপ লাগা ব্যান্ডেজ মাথায় নিয়ে অসাড় পড়ে আছে। কার এক প্রস্রাবের বোতল উল্টে গিয়ে গড়িয়ে পড়ছে মেঝেতে । এক জেলের আসামি রোগীকে পাহারা দিচ্ছে পাশে বসে থাকা পুলিশ। এক কোনায় একজন রোগী মারা গেছে, তার মৃতদেহ পড়ে আছে তখনো । কয়েকটা দিন আশা-নিরাশার দোলাচলে থাকবার পর ওই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের নানা রকম রোগীর গোঙানোর প্রেক্ষাপটে, ওই রং ওঠা লোহার খাটে মৃত্যুবরণ করবেন জীবনানন্দ। ট্রামের মতো এমন একটা শ্লো মুভিং লকোমোটিভকে এড়িয়ে যাবার টনক মানুষের থাকার কথা । ট্রামের ক্যাচার তৈরি হয়েছিল লাইনের ওপর দীড়িয়ে থাকা পশু তাড়াবার জন্য। কিন্তু জীবনানন্দ দাশই সম্ভবত ট্রামের ক্যাচারে আটকে যাওয়া প্রথম এবং শেষ মানুষ । ফলে আদিম সাপের মতো ছড়িয়ে থাকা ট্রামের চাকার নিচে তার এই মৃত্যু নিয়ে জট থেকে যায় প্রশ্ন জাগে.