কর্মশিক্ষা বই Pdf Download
মাধ্যমিক কর্মশিক্ষা বই Pdf Download free link: click here
আরও পড়ুন:-
উইলিয়াম গ্যাডিস বলেছিলেন, “Justice? you get justice in the next world, in this world you have the law”.
ন্যায়বিচার? এটা আপনি পরবর্তী পৃথিবীতে পাবেন। এই পৃথিবীতে শুধু আইন আছে।
টিভি খুললেই জাস্টিস জাস্টিস বলে মুখে ফেনা তুলতে দেখা যায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের। তাদের মতে, তারাই নাকি পৃথিবীর একমাত্র শান্তির দূত এবং পৃথিবীতে একমাত্র তারাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে।
অথচ এই আমেরিকাই বিশ্বের তাবত মানবাধিকার কর্মী আর সাংবাদিকদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি গোপন কারাগার নির্মাণ করে রেখেছে। ইরাকের কুখ্যাত ‘আবু গারিব’ এবং কিউবার ‘গুয়ানতানামো বে’ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমেরিকার চোখে যারা ভয়ংকর অপরাধী এবং যারা আমেরিকার স্বার্থের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় তাদের বিচার করার জন্য এসব কারাগার তৈরি করে রেখেছে আমেরিকার সরকার।
গোপনে পরিচালিত এসব কারাগারে বন্দীদের উপর কি নির্মম নির্যাতন চালানো হয়; শুধুমাত্র সন্দেহের বসে একজন মানুষকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আটক রেখে কিভাবে শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণায় জর্জরিত করা হয় তার কিছুটা বর্ণনা পাওয়া যায় লতিফুল ইসলাম শিবলীর ‘আসমান’ বইয়ে।
বইয়ের প্রধান চরিত্র ওমার একদিকে যেমন আপনাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে ঢাকা শহরের অলি গলি, বুড়িগঙ্গা নদী, ধানমন্ডি লেক, টিএসসি থেকে। ঠিক তেমনি ঘুরিয়ে আনবে ধানমন্ডি লেকের পাশের মসজিদ থেকে শুরু করে পাকিস্তানের রাইওয়াইন্ড হয়ে আফগানিস্থানের কাবুল থেকে কিউবার গুয়ানতানামো বে থেকে।
◼️লেখক পরিচিতিঃ-
‘আমি কষ্ট পেতেই ভালোবাসি’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘কেউ সুখী নয়’ সহ অসংখ্য গানের রচয়িতা লতিফুল ইসলাম শিবলী মূলত গীতিকবি হিসেবেই অধিক পরিচিত। পাশাপাশি একজন সফল নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক। ৯০ দশক জুড়ে তার লেখা গান গুলো একটা জেনারেশনের দৈন্দদিন দুঃখ সুখের ডায়েরি হয়ে আছে। যা তাকে এদেশের ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি গীতিকবিতে পরিণত করেছে।
স্বভাবজাত বোহেমিয়ান শিবলী ঘুরেছেন এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার পথে প্রান্তরে।করেছেন সাহিত্যে মাস্টার্স। নাটক, গান, কবিতা, উপন্যাস সহ সাহিত্যের অনেক শাখায় রেখেছেন সফলতার ছাপ। ‘দারবিশ’ এবং ‘দখল’ তার বেস্টসেলার উপন্যাস।
◼️মূলভাবঃ-
সময়টা ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস, দীর্ঘ ৪ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে আফগানিস্থানের অধিকাংশ অঞ্চল নিয়ে ‘আফগানিস্তান ইসলামী আমিরাত’ প্রতিষ্ঠা করেছে তালেবানরা। একইসাথে ওসামা বিন লাদেন এবং আল কায়েদার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে তারা। দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।
তালেবানের প্রতিপক্ষ নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। প্রাথমিকভাবে তারা বাদাখশন প্রদেশের উত্তর-পূর্ব কোণের নিয়ন্ত্রণ দখল করে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাদেরকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ন্যাটো এবং আমেরিকা। দুপক্ষের মধ্যে চলছে তুমুল সংঘর্ষ।
আফগানিস্থানে যখন এমন উত্তপ্ত অবস্থা, সেই একই সময়ে কাবুল থেকে ২৩৭৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঢাকা শহরের ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডের জামে মসজিদের বৃদ্ব ইমাম মাওলানা ইসহাকের কাছে বসে আছে উপন্যাসের নায়ক ওমার রেজওয়ান। উপন্যাসের শুরু এখান থেকেই।
বৃদ্ধ ইমাম ওমারকে বললেন,
“হৃদয় আল্লাহর ঘর। মানুষের হৃদয়টা তৈরি হয়েছে এই জন্য যে সেখানে শুধুমাত্র আল্লাহ থাকবেন। সে ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্যকিছু ঢুকালেই শুরু হবে জাগতিক অশান্তি”।
সেপ্টেম্বরের শেষ দুপুরে বৃদ্ধ ইমামের কাছে বসে থাকা ওমার রেজওয়ান কি জানতো, নিয়তি তাকে নিয়ে যাবে কিউবার দক্ষিণ পূর্বে ক্যারিবীয় সাগরের গুয়ানতানামো উপসাগরে নির্মিত গুয়ানতানামো বে কারাগারে। যে গুয়ানতানামো তার জীবন থেকে কেড়ে নিবে পরবর্তী ১২টা বছর!
◼️কাহিনী সংক্ষেপঃ-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনোমিক্সে ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছাত্র ওমর রেজওয়ান। ইন্টারমিডিয়েটে ঢাকা বিভাগের মধ্যে বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন ওমার ১৫ দিনের জন্য ইন্দোনেশিয়া যায় ইউনাইটেড এশিয়া ডিবেটিং কমপিটিশনে অংশ নিতে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে ফিরে এসে বদলে যায় ওমারের জীবন। প্রেমিকার বিচ্ছেদের বেদনায় হতাশাগ্রস্ত ওমার ড্রাগ আর সংগীতের মাঝে ডুব দেয়। জীম মরিসনের অন্ধ ভক্ত দ্যা উইন্ডো ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট রুশো তার একাকিত্বের একমাত্র সঙ্গী। রুশোর কাছে আছে ড্রাগস, সংগীত, ফিলোসফি, অ্যাডভেঞ্জার।
ড্রাগ শরীরকে নিস্তেজ করে দেয় কিন্তু মনের অতল স্পর্শ করতে পারেনা। আর সংগীত মনে আগুনে জ্বালানি কাঠের মতো আগুনটাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। সে মুক্তির কোনো পথ খুঁজে পায়না। কষ্ট থেকে বাঁচতে দিকবিদিকশুন্য হয়ে তেজগাঁওয়ের রেললাইনের নিচে চাপা পড়ে আত্নহত্যা করতে যায়। একটি অসুস্থ কুকুরের ভক্তি দেখে তার মনে বেঁচে থাকার আগ্রহ জন্মে। একটা ফুল, একটা পাখি, একটা ঘাসফড়িয়ের জন্য সে বেঁচে থাকতে চায়।
এসময় তার জীবনে পরম বন্ধু হিসেবে আবির্ভাব হয় ইমাম ইসহাকের। যার সাহচর্য তাকে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। ইমামের প্রজ্ঞা দূরদর্শিতায় মুগ্ধ ওমার একসময় নিয়মিত মসজিদে থাকতে শুরু করে।
একপর্যায়ে পরিচয় হয় তাবলীগ জামাতের আনোয়ারের সাথে। আনোয়ার তাকে নিয়ে যায় পাকিস্থানের লাহোরে। সেখানে বাগ্মী তালেবান নেতা খালিদের সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে পাড়ি জমায় আফগানিস্তানে।
এখান থেকে আবারও বদলে যায় ওমারের জীবন। ৩ সপ্তাহের ট্রেনিং সমাপ্ত করে ওমার হয়ে উঠে একজন গেরিলা যোদ্ধা। তালেবানের হয়ে সম্মুখ সমরে নামে ওমার। অপরিসীম বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে আহত হওয়া ওমারের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে সবুজ চোখের মায়াবিনী আফগান মেয়ে ‘আসমা’।
এর মাঝে পুরো পৃথিবীকে স্তব্ধ করে ঘটে যায় নাইন ইলেভেনের ঘটনা। টুইন টাওয়ার হামলার জের ধরে ২০০১ সালে আমেরিকা এবং ব্রিটেন মিলে ‘ওয়ার অন টেরর’ নামে সামরিক অভিযান চালায়। সে অভিযানে
গুরুত্বপূর্ণ আসামী হিসেবে গ্রেফতার করা হয় ওমারকে। যার কাছে রয়েছে সিআইএ এর মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তি ওসামা বিন লাদেনের খবর। ভয়ংকর আসামী হিসেবে তার স্থান হয় গুয়ানতানামো বে কারাগারে।
যেখানে বিনা বিচারে কেটে যায় ওমারের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ১২ টি বছর। হারিয়ে যায় প্রাণপ্রিয় মা আর দুঃসময়ে পাশে থাকা অর্ধাঙ্গিনী। এই বারোটি বছর তার সাথে কি হয়েছিলো? কেমন করে সে আসমাকে হারালো? গুয়ানতানামো বে থেকে সে কি ছাড়া পেয়েছিলো? ওসামা বিন লাদেনের সাথেই বা তার সম্পর্ক কি? সবকিছু জানতে হলে পড়তে হবে আসমান বইটি।
◼️পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ-
প্রথমেই বলতে চাই বইটির নামকরণ নিয়ে। ‘আসমান- যে গল্প জীবনের চেয়েও বড়’ বইটির শিরোনামে নির্ঘাত আপনার নজর আটকে যাবে।
লেখক ইতিহাসের সাথে তার ব্যক্তিগত সূক্ষ্মদর্শনের সংযোগ ঘটিয়ে সৃষ্টি করেছেন আসমান নামক উপাখ্যানটি। বইটির পরতে পরতে সাজানো অসংখ্য ভালোলাগার উক্তি পড়তে পড়তে এক পর্যায়ে লেখককে দার্শনিক মনে হয়েছে।
এছাড়া লেখক সব রকম বাহুল্যতা এড়িয়ে গিয়েছেন। শুধু শুধু গল্পকে টেনে বড় করার চেষ্টা কোথাও দেখা যায়নি। ঠিক যতটুকু লেখা প্রয়োজন ততটুকুই লিখেছেন।
উপন্যাসটির সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হচ্ছে এতে উল্লিখিত স্থান, কাল, ইতিহাস সবই সত্য। শুধু এর চরিত্রগুলো কাল্পনিক। আফগান যুদ্ধের ময়দান, গুয়ানতানামো বে কারাগারের লোমহর্ষক বর্ণনা এসব ঘটনা পড়ে পাঠকমাত্রই শিহরিত হবেন।
আমার মতে একটা বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ভাষার প্রাঞ্জলতা। প্রাঞ্জলতার অভাবে একজন পাঠক বইটি পড়েন ঠিকই কিন্তু অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়। আসমান বইটিতে লেখক প্রাঞ্জলতার যথার্থ প্রয়োগ ঘটিয়েছেন কিছু সহজ সরল বাংলা শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে।
‘আসমান’ আমার পড়া লতিফুল ইসলাম শিবলীর প্রথম বই। এর আগে লেখকের আর কোনো বই পড়া হয়নি। তাই লেখকের লেখার ধরণ সম্পর্কে পূর্বে কোনোরকম ধারণা ছিলোনা। তবে এ বইতে লেখক ইতিহাসকে আশ্রয় করে কাল্পনিক চরিত্রের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যেভাবে একটি ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস রচনা করেছেন তাতে
একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, অন্তত আসমানের জন্য হলেও বাংলা সাহিত্য জনাব শিবলীকে অনেকদিন মনে রাখবে।
◼️নামকরণঃ-
‘আসমান – যে গল্প জীবনের চেয়ে বড়’।
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে একটা গল্প থাকে। ভালো মন্দ, ঘাত প্রতিঘাত, উত্থান-পতনের ছোট ছোট গল্প নিয়েই মানুষের জীবন। এরপরও কিছু কিছু ব্যতিক্রমী গল্প ছাপিয়ে যায় আমাদের জানা শোনার গন্ডিকে। সেই গল্পগুলো জীবনের চেয়েও বড়। আর এমন গল্প নিয়েই লিখিত উপন্যাস আসমান। বইয়ের বিষয়বস্তুর সাথে নামকরণে শতভাগ মিল রয়েছে। আমার যুক্তিতে উপন্যাসের নামকরণে লেখক ষোলআনাই সফল হয়েছেন।
◼️প্রচ্ছদঃ-
আসমান বইটির প্রচ্ছদ আহামরি সুন্দর নয়। একেবারেই সাদামাটা প্রচ্ছদ। Don’t judge a book by its cover অথবা “চক চক করিলেই সোনা হয়না” এ প্রবাদ প্রবচনটির প্রমাণ পাবেন বইটি পড়ার পর।
◼️চরিত্র বিশ্লেষণঃ-
১। ওমার রেজওয়ানঃ- উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। প্রেমিকার বিশ্বাসঘাতকতায় হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত এক তরুণ। খুব খুঁজে বেড়াচ্ছে এক আলোর উৎস যা তাকে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। তুখোড় মেধাবী এই ছেলেটা যুক্তি দিয়ে পরখ করতে চায় সবকিছু। যুদ্ধের ময়দানে তার সাহসিকতা, শত্রুপক্ষের মুখে কালেমা শুনে তাদেরকে মারতে নিষেধ করা এসব বৈশিষ্ট্য ওমারকে উপন্যাসের অন্যতম শক্তিশালী চরিত্রে পরিনত করেছে।
২। ইমাম ইসহাকঃ- ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডের জামে মসজিদের বৃদ্ব ইমাম। তবে তিনি কোনো সাধারণ ইমাম নন। সবকিছুর পেছনে লজিক দেখিয়ে ধর্মকে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের
মাধ্যমে ওমারের সামনে তুলে ধরেন। আমার কাছে উপন্যাসের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র মনে হয়েছে ইমাম ইসহাককে। তার প্রত্যেকটি কথা চুম্বকের মত আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে।
৩। আসমাঃ- কষ্টসহিষ্ণু মমতাময়ী নারীর প্রতীক। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ওমারের অর্ধাঙ্গিনী। বইতে আসমার চরিত্রকে মনে হয়েছে ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল এবং মাদার তেরেসার আফগান ভার্সন।
৪। খালিদঃ- বাগ্মী তালেবান নেতা। জ্ঞানী, সুদর্শন, একাধিক ভাষায় পারদর্শী খালিদ বক্তৃতা দিয়ে সহজেই মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারে। দেশপ্রেম আর জিহাদ খালিদের জীবনের মূলমন্ত্র।
৫। রুশোঃ- জীম মরিসনের পাগলা ভক্ত, দ্যা উইন্ডো ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট। বন্ধুত্বের এক মূর্তিমান নিদর্শন। গুয়ানতানামো বে কারাগারে ওমার যখন বিনা বিচারে নির্যাতিত হচ্ছিল তখন গান গেয়ে তার পক্ষে জনমত গড়ে তুলে রুশো প্রমাণ করেছে কঠিন সময়ে পাশে থাকার নামই বন্ধুত্ব।
এছাড়াও ওমারের মা, আনোয়ার এবং লামিয়া, এনায়েত চরিত্রগুলো সময়ের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চরিত্রগুলো অল্প কিছুক্ষণের জন্য এসে উপন্যাসের গতিপথ পালটে দিয়েছে।
◼️সমালোচনাঃ-
কিছু কিছু জায়গায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার হয়েছে। যেমন – লোনলিনেস। এর সুন্দর বাংলা শব্দ ব্যবহার করা যেত।
◼️প্রিয় উক্তিঃ-
১। তোমার হাতে তোমার কোনো প্রিয় জিনিসই নিরাপদ নয়। যেকোনো সময়ে সেটা কেড়ে নেওয়া হবে, এমনকি তোমার প্রিয় জীবনটাও। তাই শিক্ষা হলো, যা পেয়েছ তার জন্য এত উল্লাসের কিছু নেই, যা হারিয়েছ তার জন্য এত বিষাদের ও কিছু নেই।
২। বৃষ্টির আগে পিঁপড়ারা টের পায়, ঝড় বা ভূমিকম্পের আগে পাখিরা টের পায়, আর যত আড়াল করে যতদূরেই থাকে সন্তানের কষ্ট মা’রা ঠিকই টের পায়।
৩। এই বিশ্বজগৎ একটা পাঠশালা। এখানে প্রতিটি ঘটনার ভেতরেই একজন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষক মানে কোনো ব্যক্তি বা অদৃশ্য কিছু নয়। সেই ঘটনাটা নিজেই একজন শিক্ষক।
৪। উড়ে উড়ে আপনি আর কতদূর যাবেন, আপনি ওমার যদি পাখি হতে পারেন তবে আমি আসমা, আসমান হয়ে যাব। কোথায় যাবে, কতদূরে যাবে পাখি আসমান ছেড়ে! আমি সে পাখির জন্য আসমান হয়ে থাকব।
◼️বইটি কেনো পড়বেনঃ-
১। যারা জীবনের কোনো লক্ষ্য খুঁজে পাননা, হতাশা ব্যর্থতায় ডিপ্রেশনে পড়ে আত্নহত্যা করতে যান তাদেরকে জীবনের মানে শিখাবে এ বই।
২। ভালোবাসা মূলত কার জন্য?কাকে ভালোবাসা যাবে, কাকে যাবেনা। আল্লাহ তায়ালার এই পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, বান্দার প্রতি আল্লাহর হক এসব কিছু যুক্তি দিয়ে স্বল্প পরিসরে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক।
৩। বইটি পড়ে পাঠক জানতে পারবে আফগান জাতির ইতিহাস, তালেবান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, নাইন ইলিভেনের ঘটনার সংক্ষিপ্ত সার।
৪। গল্পের চলে লেখক আপনাকে শিখাবে ধর্ম, বিজ্ঞান, জিহাদ, পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ইত্যাদি সম্পর্কিত নানান তথ্য।
সবশেষে বলতে চাই, আসমান নিঃসন্দেহে একটি সুখপাঠ্য বই। এ বই পড়ে যেমন আপনার মন শান্ত হবে ঠিক তেমনি আপনার চোখ প্রশান্তি পাবে। ভাবছেন একথা কেনো বলছি? বইটি পড়েই দেখুন!