Books
জ্ঞান মঞ্জুরী বই Pdf Download
জ্ঞান মঞ্জুরী বই Pdf Download লিঙ্কঃ
➤ Download Link 1 (Google Drive)
আরও পড়ুনঃ
◑ বই : আদর্শ হিন্দু হোটেল
❝তুমি যা চাও পৃথিবী তোমাকে তা দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকে।❞
– পাওলো কোয়েলহো
স্বপ্ন, সে তো মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার হাতিয়ার। জীবনে সফল হতে হলে প্রেরণা লাগে আর সেই প্রেরণা জোগায় স্বপ্ন। স্বপ্নের সাথে জড়িয়ে রাখতে হয় উদ্যম, সাহস, আত্মবিশ্বাস ও শ্রম, তাহলেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারবে। স্বপ্নকে সন্তানের মতো লালন করে বড় করতে হয়, তাহলে সে উজ্জ্বল করবে স্বপ্নবাজকে। সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে স্বপ্ন কখনো আটকে থাকতে পারে না। মৃত্যুশয্যায় শুয়ে থাকা মানুষটাও স্বপ্ন দেখতে পারে আগামীদিন সে কী করবে। বয়সের সীমারেখা স্বপ্ন পূরণে অজুহাত হতে পারে না। এসব সীমারেখা অতিক্রম করে স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলা মানুষ কখনো ব্যর্থ হয় না। সীমাবদ্ধতার বেড়াজাল ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারলে যে কোনো মানুষের স্বপ্ন বাস্তব হয়।
❛আদর্শ হিন্দু-হোটেল❜ শুধু স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ছুটে চলা একজন মানুষের গল্প নয়, এখানে ওঠে এসেছে পল্লী প্রকৃতির সৌন্দর্য, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের অর্থনৈতিক ও নাগরিক জীবনের চিত্র। এখানে গ্রামীণ জীবনের সহজ-সরল, স্নিগ্ধ ও বিশ্বস্ত ছবি সুনিপুণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
➤ কাহিনী সংক্ষেপ :-
রাণাঘাটের রেল-বাজারে বেচু চক্কত্তির হোটেল যে রাণাঘাটের আদি ও অকৃত্রিম হিন্দু-হোটেল এ কথা হোটেলের সামনে বড় বড় অক্ষরে লেখা না থাকলেও অনেকেই জানে। এ হোটেলের রান্নার গুণগত মানের কথা সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। খাওয়ার সময় হোটেলে মানুষের ঢল নামে। হোটেলের রাঁধুনি হাজারি ঠাকুরের বেশ নাম ঢাক। তার রান্নার সুখ্যাতি শুনে দূর-দুরান্ত থেকে মানুষ হিন্দু-হোটেলে খেতে আসেন। খদ্দেররা তার রান্নার প্রশংসা করলেও হোটেলের কর্তা বেচু চক্কত্তি আর পদ্ম ঝি’র মুখে সুখ্যাতির কথা সে কখনো শুনেনি। ভালো কথা তো দূরের কথা, পদ্ম ঝি’র দু’চোখের বিষ হাজারি ঠাকুর। সুযোগ পেলে হাজারি ঠাকুরকে অপমান ও লাঞ্চিত করতে ভুলে না পদ্ম ঝি। অথচ পদ্ম ঝিও এ হোটেল তারই মতো একজন কর্মচারী।
তবে হাজারি ঠাকুরের বড় একটা ইচ্ছে আছে, সে নিজে একটা হোটেল খুলবে। এ হোটেলের মতো জুয়াচুরি সে করবে না, মসুরের ডালের সঙ্গে কম দামের খেসারি ডাল বলে চালিয়ে দেবে না, বাজারের কানা পোকাধরা বেগুন, রেল-চালানি, বরফ দেওয়া সস্তা মাছ বেছে বেছে হোটেলের জন্য কিনবে না। খদ্দেরদের সস্তায় আহার ও বিশ্রামের বন্দোবস্ত থাকবে সেখানে। বয়স ছেচল্লিশের ওপর, সারাজীবন কিছু করতে পারে নাই, সাত টাকা মাইনের চাকরি আজও ঘুচল না, ছা-পোষা গরিব লোক। সে ভেবে পায় না, কী করে সে হোটেল খুলবে। পারবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে? নাকি দারিদ্রতার কাছে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে স্বপ্ন?
➤ পাঠ – প্রতিক্রিয়া :-
কিছু কিছু উপন্যাস আছে, যে উপন্যাসগুলোতে কাহিনীর আড়ালে এমন কিছু লুকিয়ে থাকে যা পাঠককে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট করে হৃদয়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি জাগিয়ে তোলে, এমন একটা উপন্যাস ❛আদর্শ হিন্দু-হোটেল❜। যা পাঠককে মোহের বেড়াজালে আটকে রাখবে। গল্পের আড়ালে লুকিয়ে থাকা যে বিষয়গুলো উপন্যাসকে সার্থক করেছে, সেই বিষয়গুলো নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা করতেই হয়।
বয়স কি কখনো স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে? হাজারি ঠাকুরের বয়স পঁয়তাল্লিশ-ছেচল্লিশ বছর হলেও সে বয়সের বাড়ে নুয়ে পড়েনি। স্বপ্ন তার ভেতরে যৌবনের উদ্যম আর সাহস দিয়েছে। “সংসারে উন্নতি করিতে হইলে, দেশের মানুষের কাছে বড়ো মুখ দেখাইতে হইলে, পরের মুখে নিজের নাম শুনিতে হইলে – চেষ্টা করা চাই, খাটুনি চাই।” হাজারির এ কথায় ফুটে ওঠে হার না মানা মানসিকতা। যা স্বপ্ন পূরণে এক ধাপ এগিয়ে দেয় তাকে।
কিছু কিছু সম্পর্ক আছে, যা রক্তের সম্পর্ককেও হার মানিয়ে দেয়। যেখানে থাকে না কোনো স্বার্থ, কোনো লোভ। এক অজানা শক্তি পরস্পরকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখে। ঠিক এমন একটা সম্পর্ক হাজারি ঠাকুর আর কুসুমের। অনাত্মীয় হওয়ার পরও পরস্পরের মধ্যে বাপ-মেয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হোটেলে যেদিন ভালো রান্না হয়, সেদিন নিজের ভাগের খাবার থেকে একটা অংশ কুসুমের জন্য রেখে দিত হাজারি। কখনো কখনো মাছের বড় মাথা, আবার কখনো কখনো মাংস, নিজে না খেয়ে কুসুমকে দিয়ে আসত। আর এদিকে কুসুমও হাজারিকে বাপতুল্য ভক্তি করত। হাজারির স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিজের গহনা পর্যন্ত বন্ধক দিতে দ্বিধাবোধ করেনি বিধবা নারী কুসুম। আহ! রক্তের বাঁধন ছাড়া কত সুন্দর সম্পর্ক।
মায়ার বাঁধন, সে বড় বাঁধন। ছিন্ন করা বড়ই দায়। বেচু চক্কত্তি ও পদ্ম ঝি হোটেল থেকে থালাবাসন চুরির অপবাদ দিয়ে হাজারিকে চাকরিচ্যুত করে জেলে পাঠায়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গোপালনগরে একটা বাড়িতে রাঁধুনি হিসেবে ভালো মাইনে চাকুরি পায় হাজারি। কিছুদিন পর সেটা ছেড়ে দিয়ে আবার বেচু চক্কত্তির হোটেলে সে ফিরে আসে। যে মনিব এত অপমান ও লাঞ্চিত করেছে, সেই মনিবের কাছে সে আবার ফিরে এসেছে শুধু মায়ার বাঁধনে আটকে পড়ায়। এ মায়া হোটেলের প্রতি, তার মনিব বেচু চক্কত্তির প্রতি, যিনি কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়ানো গরীব মানুষটাকে আশ্রয় দিয়েছিল একসময়। এ বাঁধনে আটকে পড়া মানুষ হাজার অপমান সহ্য করতে পারে, তবুও মায়ার বাঁধন ছিন্ন করতে পারে না। এক অদ্ভুত বাঁধন, এ মায়ার বাঁধন।
❛সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা❜ – স্কুলজীবনে কমবেশি সবাই এ ভাবসম্প্রসারণটা পড়েছে। এ গুণ ছাড়া ভালো মানুষ হওয়া, সাফল্য অর্জন করা, এর কোনোটাই সম্ভব নয়। ❛আদর্শ হিন্দু-হোটেল❜ উপন্যাসে যদু বাঁড়ুয্যের হোটেলে দশ টাকা মাইন আর খোরাকি যা বেচু চক্কত্তির হোটেল থেকেও বেশি, বছরে তিনখানা কাপড় দেবে বলেও হাজারি ঠাকুরকে নিয়ে যেতে পারেননি যদু বাঁড়ুয্যে। বেচু বাবু তার ৫ বছরের অন্নদাতা। লোভে পড়ে সে তার অন্নদাতাকে ত্যাগ করেনি। পাঠক গল্পের যত গভীরে প্রবেশ করবে, ততই মুগ্ধ হবে হাজারি ঠাকুরের সততার দৃষ্টান্ত দেখে। প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাওয়া মানুষের মনও সততার গুণে সহজে জয় করে নেওয়া যায়।
বিশ্বাস এমন একটা শব্দ, যে শব্দ দিয়ে মানুষ মহৎ হতে পারে, আবার ঘাতকও হতে পারে। বিশ্বাস অর্জন করার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে যে কোনো অসাধ্য সাধন করা যায়। এ উপন্যাসেও বিশ্বাসের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাওয়া যায়। অপরিচিত এক গোয়ালা বাড়ির বউয়ের সাথে প্রথম পরিচয়ে হাজারি ঠাকুর এমন বিশ্বাস অর্জন করেছেন, যার কারণে বউটি নিঃস্বার্থভাবে হাজারির স্বপ্ন পূরণের জন্য হাজারিকে টাকা দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি।
স্বপ্ন বাস্তব হলে, মানুষের হৃদয়ে অহংকারের দানা বাসা বাঁধতে শুরু করে। অনেকে নিজের আগের অবস্থানের কথা ভুলে যায়। অহংকারের দম্ভে কারো কারো পা মাটিতে পড়ে না। এ উপন্যাসের হাজারি ঠাকুরের স্বপ্ন যদি বাস্তব হয়, তাহলে কি তাকে অহংকারী রূপে দেখা যাবে? তার মনিব বেচু চক্কত্তিকে কি পূর্বের মতো আর সম্মান করবে না? পায়ের ধুলো নেবে না?
আমাদের সমাজে এমন অনেক মা আছেন, যারা তাদের বাবার ঘরেও সুখের মুখ দেখতে পায় না আর বিয়ের পর স্বামীর ঘরেও কখনো সুখের মুখ দেখতে পায় না। তবে তারা নিজেদের সব দুঃখকে বুকের ভেতর চাপা দিয়ে স্বামীর সংসারের জন্য নিজেদের উজাড় করে দেয়। কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করে। মুখ ফুটে কোনদিন স্বামীর কাছে কিছু আবদার করে না। এ উপন্যাসে এমন একজন মা আছেন, তিনি টেঁপির মা (হাজারির স্ত্রী)। গরীব ঘরের মেয়ে। অনেক কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করছে। ছেঁড়া কাপড় সেলাই করে পরে, নিজে আধপেটা খেয়ে ছেলেমেয়েদের জন্য দু’মুঠো বেশি ভাত পানি দিয়ে হাঁড়িতে রেখে দিয়ে সকালে তারা খায়। সেজন্যে বিরক্তি প্রকাশ করে নাই, অদৃষ্টকে নিন্দা করে নাই। একজন আদর্শ মা ও একজন আদর্শ স্ত্রীর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত টেঁপির মা।
রান্না করতে পারা এত সুন্দর একটা গুণ সেটা এ উপন্যাসে লেখক ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। উপন্যাসের হাজারি ঠাকুর রান্নাটাকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। তার রান্না করা চচ্চড়ি, মাংস, মাছের ঝোলের স্বাদ অমৃত। বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের নিজের অজান্তে জিভে জল চলে আসবে।
লেখকের যে দর্শন থেকে ❛আদর্শ হিন্দু-হোটেল❜ রচিত হয়েছে তা যে কাউকে অনেক বেশি মুগ্ধ করবে। আত্ম-উন্নয়নমূলকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এ বই পাঠককে যেমন আশ্চর্যান্বিত করবে, ঠিক তেমনই শুধু উপন্যাসের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও পাঠক একইভাবে আশ্চর্যান্বিত হবে। জীবন দর্শন ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ থাকায় উপন্যাসটা আরও বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক অজানা উত্তেজনা পাঠককে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখবে।
➤ গল্পের পটভূমি :-
হোটেলের একজন রাঁধুনির স্বপ্নকে কেন্দ্র করে এ গল্পের পটভূমি সাজানো হয়েছে। স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পথচলা চলা মানুষটাকে কেন্দ্র করে কাহিনী সাজানো হলেও এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও অনেক গল্প। যে গল্পগুলোর মধ্যেই নিহিত আছে এ গল্পের প্রাণ।
➤ লেখনশৈলী :-
সাধু ভাষাকে এত সহজ ও সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা যায়, সেটা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা না পড়লে বুঝার উপায় নেই। তাঁর লেখায় ভাষার মাধুর্য সহজে ফুটে ওঠে। তাঁর নিখুঁত বর্ণনাভঙ্গি পাঠককে কাহিনীর ভেতর সহজে ডুবিয়ে রাখে। খুব সহজে কাহিনীর দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসিয়ে তোলেন।
➤ চরিত্রায়ন :-
নির্দিষ্ট কিছু চরিত্র নিয়ে এ উপন্যাসের কাহিনী এগিয়েছে। লেখক প্রতিটি চরিত্রকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা জীবন্ত হয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠেছে।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হাজারি ঠাকুর। একজন গরীব ব্রাহ্মণ। বয়স পঁয়তাল্লিশ-ছেচল্লিশ, একহারা চেহারা, রঙ কালো। একজন ভালো মানুষ। রাণাঘাটে বেচু চক্কত্তির হোটেলে রাঁধুনির কাজ করেন। অবসর সময়ে চূর্ণীর নদীর ঘাটে গিয়ে সে সময় কাটায়। সেই সময় তার মনে নানান চিন্তাভাবনার উদয় হয়। স্বপ্ন দেখে একদিন সে একটা হোটেল খুলবে, নাম দেবে আদর্শ হিন্দু-হোটেল।
বেচু চক্কত্তি হিন্দু-হোটেলের কর্তা, হাজারি ঠাকুরের মনিব। “চাকরকে ছোটো করিয়া রাখিয়া মনিবের সুবিধা আছে, তাহাকে বড়ো করিলেই সে পাইয়া বসিবে।” হাজারির বলা এ কথাটার মাধ্যমে ফুটে ওঠে তার মনিব কেমন মানুষ। বেচু চক্কত্তি হোটেলের কর্তা হলেও তিনি পদ্ম ঝি’র মুখের ওপর কোনো বলেন না। পদ্ম ঝি যা বলে তা-ই শুনে বেচু বাবু।
পদ্ম ঝি অতি ভয়ানক চরিত্রের মেয়ে মানুষ, সব পারে। খদ্দেরদের কাপড়ের ব্যাগ চুরি করা, হোটেলের খাবার বাসায় নিয়ে যাওয়া, এমনকি হোটেলের থালাবাসন পর্যন্ত নিজে চুরি করে হাজারির নামে মিথ্যে অপবাদ দেয়। আড়ালে থেকে সে কলকাঠি নাড়ে। আর বেচু চক্কত্তি তার কথায় ওঠবস করে। অবশ্য উপন্যাসের শেষের দিকে এসে পদ্ম ঝি সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা যায়।
কুসুম গরীব ঘরের বিধবা নারী। দুধ বিক্রি করে তার সংসার চলে। রাণাঘাটে তার শ্বশুরবাড়ি। একই পাড়াগাঁয়ের মেয়ে কুসুমকে রাণাঘাটে দেখতে পেয়ে হাজারির বড়ই মায়া হয় কুসুমের প্রতি। সেখান থেকে সম্পর্কটা আস্তে আস্তে বাপ-মেয়ের সম্পর্কে গড়ায়।
অতসী আঠারো-উনিশ বছর বয়সী যুবতী ও শিক্ষিত মেয়ে। সহজ-সরল মেয়ে। জমিদার বাড়ির মেয়ে হয়েও সে অনাড়ম্বর জীবনযাপন করে। হাজারি ঠাকুরকে অনেক শ্রদ্ধা করে। যে তিনজন নারী সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে হাজারিকে তার উচ্চাশার পথে ঠেলে দিতে চেয়েছে তাদের একজন অতসী।
➤ জানা কথা, অজানা কথা :-
বইয়ে বলা আছে – ❝সে ব্রাহ্মণের বিধবা নয়, মাছ-মাংস খাইতে তাহার আপত্তি নাই।❞
হিন্দু ধর্মের একটা প্রথা – শুধু ব্রাহ্মণ গোত্র নয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে যে কোনো বিধবা নারীর আমিষ জাতীয় খাদ্য (যেমন : মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি) আহার করা নিষেধ। কারণ একটা সময় মনে করা হতো, আমিষ কামোত্তেজক জাতীয় খাদ্য। তাই বিধবা নারীর নিজের মধ্যে যেন কামনার উদ্রেক না হয়, তার জন্য আমিষ বর্জন করা হয়। কালের পরিক্রমায় এখন অনেকেই সেই প্রথা অনুসরণ করে না। আবার অনেকে এখনো অনুসরণ করে সেই প্রথা।
➤ প্রচ্ছদ :-
নজরকাড়া প্রচ্ছদ। বিশেষ করে কাহিনীর মূল বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় প্রচ্ছদটা আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।