Books
শকুন্তলা উপন্যাস Pdf Download
শকুন্তলা প্রবন্ধ pdf – pdf শকুন্তলা গল্প উপন্যাস,উপাখ্যান ও কবিতাঃ
itle | কালিদাসের শকুন্তলা |
Translator | ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর |
Publisher | দি স্কাই পাবলিশার্স |
ISBN | 9847014501356 |
Edition | 1st Published, 2017 |
Number of Pages | 64 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা, Pdf Download |
শকুন্তলার রূপের বর্ণনা ও বিদ্যাসাগরের শকুন্তলা চরিত্র –
আদি বাঙ্গালা সাহিত্যের রসাস্বাদন করিবার বাসনায় সাহস করিয়া ‘চর্যাপদ’ হস্তে লইয়াছিলাম। উহা পাঠ করিতে গিয়া দন্তসমূহের কতখানি সৎকার হইয়াছে অনুরূপ সাহসী পাঠকমাত্রেই বোধকরি উপলব্ধি করিতে পারিবেন। অতঃপর গুরুদেব কহিলেন, ‘ওরে গর্দভ! অমন মজ্জা পড়িয়া থাকিতে তুই হাড় লইয়া টানাটানি করিতেছিস ক্যানো!’ বুঝিলাম, রত্নভান্ডার নিজঘরে রাখিয়া মিছামিছি গুদামঘরে মাথা কুটিয়া বেড়াইতেছি।
আজিকার বাঙ্গালা ভাষা আজিকার স্থানে আসিবার পথে ওইরকম অগণিত রত্নভান্ডার পথিমধ্যে ফেলিয়া আসিয়াছে। এই রত্নের কেহ সমঝদার রহিয়াছে, কেহ ঘর্ষণকারী রহিয়াছে, কেহ যত্নকারী রহিয়াছে, কেহ সহদেব রহিয়াছে, কেহ গুরুদেব রহিয়াছে, কেহ ভাস্কর রহিয়াছে তথাপি একজন ঈশ্বরও রহিয়াছে। সেই ঈশ্বরের সন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়া পাঠ করিলাম ‘শকুন্তলা’।
সংস্কৃতমূর্খ হইয়া কালিদাস প্রণিত ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম’-এর রসাস্বাদন করিতে পারিবো না, তাহা বিলক্ষণ জানিতাম। কিন্তু ঈশ্বর তাহা হইতে সর্বাংশে আমাদিগকে বঞ্ছিত করেন নাই। কালিদাসের নাটক হইতে ‘শকুন্তলা’রূপ দিয়া ঈশ্বর যাহা হাতে তুলিয়া দিলেন তাহা এই সংস্কৃতমূর্খের নিকট রত্নভান্ডার ব্যতীত আর কি হইতে পারে!
শকুন্তলা অনুবাদে বিদ্যাসাগরের কৃতিত্ব বিশ্লেষণ করোঃ
আহা শকুন্তলা! রাজা দুষ্মন্তের প্রণয়িনী হইয়া নিজেরে ভুলিয়া গেলে? প্রাচীন নারী হইয়াও আজিকার যুবকের মনে দাগ কাটিয়া গেলে। তুমি হয়তো আমাদিগের মত কথা কহ নাই, তোমার দুষ্মন্তও সাধু ভাষায় কথা কহিয়াছে- তাহতেই বা কি! তোমার ওইরূপ প্রেমের প্রকাশ তো আর আজিকার নারী হইতেও নিষ্ক্রান্ত হয় নাই। আজিকার নারীও তোমারই মত প্রেমের দাবি লইয়া প্রেমিকের নিকটে গিয়া নিত্য ফিরিয়া আসিতেছে। তুমি অভিজ্ঞান খুঁজিয়াছিলে, তোমার অভিজ্ঞান মৎসে নিয়াছিলো। আজিকার নারীর অভিজ্ঞান কি হইবে তুমি কি বলিয়া দিতে পারিবে? এই যে তোমার প্রাণের মহারাজা তোমারে ভুলিয়া গ্যালো, তুমি তাহার বিরহে দিবারাত্রী নির্বাসন করিলে- তুমি কি বাঙ্গালী নারীরও এইরূপ পতিস্বর্বস্ব পরিণতি চাহিয়াছো?
শকুন্তলা চাহিতে পারে, কবি কালিদাস চাহিতে পারে কিন্তু আমি নিশ্চিত করিয়া বলিতে পারি ‘ঈশ্বর’ তাহা চাহেন নাই। বাঙ্গালা দেশের ইতিহাসে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরই সেই ‘ঈশ্বর’। এই মহামানবের কথা না জানিলে আমি ঈশ্বরজ্ঞানে সদামূর্খ থাকিতাম সন্দেহ নাই। শকুন্তলার জীবনের বিরহ কিংবা সবিশেষ পরিণতি বিদ্যাসাগরের হস্তে ছিলো না, থাকিলে নারীর ব্যক্তিত্বের বর্ণনা কিরূপ হইতো তাহা জানি না। তবে, নারীর জীবনের সন্তাপহরণে বিদ্যাসাগরের মত সংগ্রামী আর দ্বিতীয়টি পাওয়া যাইবে কিনা সন্দেহ।
শকুন্তলার পতিগৃহে যাত্রা:
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কালিদাস হইতে ‘শকুন্তলা’ অনুবাদ করিয়া বাঙ্গালা সাহিত্যের ভান্ডারে রত্নতূল্য উপাদানই দিয়াছেন। যাহাদের নিকট ইহার ভাষা দূর্বোধ্য মনে হয়- তাহাদের মনে রাখিতে হইবে ইহা কোন্ সময়ের রচনা। বিদ্যাসাগরের হস্ত ধরিয়া বাঙ্গালা গদ্য মহাসাগর পাড়ি দিতে নামিয়াছিলো- অমন দুঃসাহসিক কর্ম ঈশ্বর কর্তৃকই সম্ভব। তাহার প্রতিভার বর্ণনা করা এই মূর্খের পক্ষে দুঃসাধ্য।
যদি কাহারো বাঙ্গালা গদ্যের আদি রূপ জানিবার ইচ্ছা হয় অথবা মনে যদি এইরূপ জিজ্ঞাসাও উদিত হয় যে- বাঙ্গালী আগে প্রেমে পড়িতো কিনা কিংবা প্রেমে পড়িলে তাহারা কিরূপে তাহা নিবেদন করিতো, তাহা হইলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অনুদিত ‘শকুন্তলা’ পড়িয়া দেখিতে পারেন। আজিকার সময়ে বসিয়া হয়তো বুঝিবেন না, কতখানি প্রতিভার বলে তৎকালে এইরূপ বর্ণনা সম্ভব হইয়াছিলো। বাঙ্গালা সাহিত্য যতদিন থাকিবে, বাঙ্গালী যতদিন বাঁচিবে, বাঙ্গালা ভাষা যত টিকিবে ততদিন ইহারা সকলেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নিটক চিরঋণী থাকিবে। ঈশ্বররূপ এই মহামানবের প্রতি সর্বদা মস্তক নত রহিলো।
কালিদাসের শকুন্তলা pdf download
কালিদাসের শকুন্তলা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর pdf download – View or download This Full Book