Booksবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় PDF Download (সব বই links)
পথের পাঁচালী Pdf Download (বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়)
Pather Panchali pdf free download link with epub format – পথের পাঁচালী উপন্যাস pdf book Download
বই : পথের পাঁচালী
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রিভিউ : মোঃ আতিয়ার রহমান
পথের পাঁচালী রিভিউ ও পথের পাঁচালী উপন্যাসের সারমর্ম:
পথের পাঁচালী উপন্যাসের বিষয় ও চরিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ পথের পাঁচালী একটি প্রকৃতি নির্ভর উপন্যাস।বিভূতিভূষনের প্রকৃতির প্রতি যথেষ্ট প্রেম থাকায় তৎকালীন সকল বিষয় উপেক্ষা করে চিরস্থায়ী, চিরসাক্ষী এবং একটি পরিপূর্ণ সত্তা নিসর্গ প্রকৃতিকে অবলম্বন করে লিখতে বসে গেলেন পথের পাঁচালী। হ্যাঁ, পাঁচালীই বটে, জীবন পথের চলমান সংগিত। বলা হয়ে থাকে পথের পাঁচালীতে প্রকৃতির বর্ননায় জীবনানন্দ দাশের কাব্যময়তা না থাকলেও আছে ছন্দময়তা।
রাংচিতা, গুড়কলমী, রঙ্গিন মাকালফল, গ্রাম্য বধূর ভিজে পায়ের ছাপ, কাশবন, পদ্মঝিল এসব প্রকৃতির নিখুঁত বর্ননার সাথে যুক্ত হয়েছে দরিদ্র কবলিত এক পরিবারের উপাক্ষান।নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ব্রাম্মন রায় পরিবারের দারিদ্রের সংগ্রাম, গ্রামীন সংস্কারের আড়ম্বরতা, এরোই মাঝে সপ্রতিভ এক বালকের জন্ম হতে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা আর নিষ্ঠুর বাস্তবতায় পাঠশালায় হাতেখড়ি নেয়া। বোন দূর্গার হাত ধরে ছোট্ট অপু প্রকৃতিকে চিনতে শিখেছিল এবং সেই প্রকৃতির মাঝেই যেন জরিয়ে গিয়েছিল তার অস্তিত্ব।
পথের পাঁচালী পুরো গল্প উপন্যাসে সবচেয়ে প্রাণ সঞ্চারী খন্ড হচ্ছে আম আঁটির ভেপু। এতে তিলে তিলে বড় হয় অপু। দূর্গা ও অপু নামক কিশোর-কিশোরি তাদের অপার বিস্ময়, দুরন্তপনা আর তাদের অনুসন্ধিৎসু চোখের অবাক করা নিশ্চূপ দৃষ্টি দিয়ে মাতিয়ে রাখে প্রকৃতিকে। পাঠক অপুর নিষ্পাপ মন ও কৌতূহলি চোখ দিয়ে দেখে সমাজের কঠিন কিছু প্রথা, কিছু রঙ্গিন সপ্নবিলাসিতা, কিছু আহ্লাদি অভিমান। সর্বপরি অপুর চোখে ধীরে ধীরে উম্মোচিত হয় কঠিন বিশ্ব। গ্রামের আনাচে কানাচে ঘুরে বেরানো, দুজন মিলে সময় করে রেলগাড়ি দেখতে যাওয়া, কাশবনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা এসব করতে করতে তাদের সময় কাটে।
অপর দিকে তাদের বাবা মায়ের চলে অফুরন্ত জীবন সংগ্রাম। জীবন সংগ্রামে তারা সপ্ন দেখে, আশাহত হয়, আবার নতুন করে আশার বীচ বোপন করে। দারিদ্রের কড়াল গ্রাসে বারবার আহত হয় আত্মমর্যাদা, তবু যুদ্ধ থামে না।
পথের পাঁচালী শেষ লাইন উপন্যাসে সময়েতে প্রতিবেশীর কঠিন ব্যবহার আবার খারাপ সময়ে সেই প্রতিবেশীরোই করুনাময় ব্যবহার দেখিয়ে ভালোবাসাময় এক সমাজ তুলে ধরা হয়েছে। বিভূতিভূষণ নিজেই বলেছেন, করুনা হলো ভালোবাসার সবচেয়ে মূল্যবান মসলা, তার গাঁথুনি বড় পাকা। এখানে করুনা মানে দরদ, মমতা। উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্রে রয়েছে যার জাকহীন বহিঃপ্রকাশ।
তিনটি যুগ-স্থান-পাত্র যথাযথ বুঝানোর জন্য ইন্দির ঠাকুরুনের পরিনতি, এর পর দূর্গার সাথে আপুর ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা আর ইতিতে গ্রামের পাঠ শেষ করে শহুরে নতুন পরিবেশে এক নির্বোধ বালকের উপলব্ধি সবকিছুই ধারাবাহিক ও যুগপৎ আকর্ষণ।
উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক খুঁজে পাবেন অপরাজিত এক স্পৃহা। যেটার সৃষ্টি হয়েছে অপুর মনে বনদেবতার অভয়বাণী সামনে এগিয়ে যাওয়া জীবন থেকে। উপন্যাসটি শেষ করে পাঠক গভীর জীবনবোধ আর বিষন্ন মমতায় ভেজা চোখে খুঁজবে পরের খন্ড অপরাজিত অপুকে।