৪৫+টি মনস্তাত্ত্বিক বই Pdf Download
হ্যালো বন্ধুরা, তোমাদের জন্য মনস্তাত্ত্বিক বইগুলোর Pdf Download লিংক দেওয়া হলঃ-
- মনোবিজ্ঞান – পুস্প অধিকারী Pdf Download ডাউনলোড লিংক: click here
- অপরাধ তত্ত্ব Pdf Download by ডাঃ পঞ্চানন ঘোষাল ডাউনলোড লিংক: click here
- বিচার ও তদন্ত কাহিনী Pdf Download ডাউনলোড লিংক: click here (mediafire link)
- মাইন্ড রিডার – অনুবাদ : Click_Here
- দ্য পাওয়ার অব ইউর সাবকনশাস মাইন্ড – অনীশ দাস অপু(জোসেফ মারফি) : Click_Here
- দ্য আর্ট অব থিংকিং ক্লিয়ারলি -রোলফ ডোবেলি : Click_Here
- বডি ল্যাংগুয়েজ – অনুবাদ : Click_Here
- অপরাধ তত্ত্ব pdf – PDF Download ১ – PDF Download ২ – PDF Download ৩ – PDF Download ৪
একটি মনস্তাত্ত্বিক আত্মহনন এবং তার পুতুলকাব্যিক প্রতিবেদন
বইটির একাংশঃ-
ভোরবেলায় মুঠোফোনের কর্কশ শব্দে বুকে কীপন ধরে গেলো প্রেমার। প্রেমা যতোটাই নম্র কোমল, তার ফোন ততোটাই উগ্ন শব্দ করে বেজে চলে, বাজতে থাকে। ইচ্ছা করেই অমন একটা কুৎসিত শব্দ ফোনে দিয়ে রেখেছে সে। তার ধারণা এর ফলে ফোনের ঘণ্টা বাজার সাথে সাথে ওপ্ান্তের ব্যক্তিটিকে ভীষণ প্রয়োজনীয় মনে হবে, তা সে যতোই অপ্রয়োজনীয় হোক না কেনো । মধুর বার্তা কিংবা জীবনের আলো নিভিয়ে দেয়া বিভীষিকাময় কোনো ঘটনার অস্তিত্ব । আধবোজা চোখে সে ফোনের পর্দায় তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ । পর্দাজুড়ে নেচে চলেছে অনল | থেকে,থেকে নামটা নানান ভঙ্গিতে ওঠানামা করছে। প্রেমার ঘুমন্ত মস্তিষ্ক তখনও সচল হবার সংকেত পায়নি । সে মনেও করতে পারছে না ফোন বাজলে কী করতে হয় কিংবা তার এই শ্রুতিকটু অসহ্য শব্দটা কী করলে বন্ধ হয়। একটা ঝাঁকুনি দিয়ে জেগে উঠলো প্রেমা। এখন পৃথিবীর অনেক রহস্যই তার জানা । সে জানে কোন বোতাম চাপলে পৃথিবীর সাথে সংযুক্ত হওয়া যায়।
“শুভ সকাল প্রিয়তমা”, চঞ্চল কণ্ঠে অনল। এবার প্রেমা কৌতৃহল কাটিয়ে খানিকটা দৃঢ় , “এতো সকালে, কী
ব্যাপার?”
অনল এবার চঞ্চলতর, “আমার ঘুম ভেঙে গেলো, ভাবলাম তোমাকেই বা ঘুমাতে দেবো কেনো? তারচেয়ে তোমার মধুর কণ্ঠটা শুনে কর্ণকৃহর ধন্য হোক।”
হো হো করে হাসতে লাগলো অনল ৷ অনলের হাসির শব্দটা কি সবসময়ই এতো বিশ্রী শোনায়? নাকি কখনো সে মন দিয়ে লক্ষ্যই করেনি আজকের মতো, মনে করার চেষ্টা করে প্রেমা।
অনলের ছেলেমানুষি আজকাল আর আগের মতো আনন্দ দেয় না প্রেমাকে। প্রেমা সৃষ্টিশীল মানুষ । সাহিত্যচর্চায় বুঁদ হয়ে থাকে সে। তার ভাবনায় আপাতত সাহিত্যের বাইরে অনল জায়গা পেয়েছে। অনলের সাথে তার প্রণয়ের সূত্রটাও সাহিত্য । সাহিত্য বিষয়ে ভালোই ধারণা অনলের। প্রেমার প্রিয় লেখক কবিদের তালিকার সাথে তারটা বেশ ভালোই মেলে।
প্রেমা মনে করে তার প্রেয়স অনল নয়, বরং অনলের প্রয়াত বাবা । তিনি ছিলেন একজন মনীবী। তীর প্রজ্ঞা ছিলো হিমালয়ের মতো। তীর দূরদর্শিতা শৈশব থেকেই কীপিয়ে দিতো প্রেমার ভাবনার জগণকে। সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতি, জীবন, দর্শন এই:সৰ কিছু নিয়ে তিনি ভাবতেন একেবারে অন্যভাবে। তাই অনলের বাবাই ছিলো প্রেমার স্বগ্রপুরুষ। অনলের সাথে পরিচয়ের পর যেদিন তার বাবার পরিচয় জানা হলো প্রেমার, সেদিন থেকেই প্রেমের জালে জড়িয়ে গেলো অলৌকিকভাবে। তবে চারিত্রিক দৃঢ়তায় বাবার ধারেকাছেও নয় অনল । তার বাবা ছিলো স্বচ্ছ স্পষ্ট। অনলের মধ্যে বেশ অস্পষ্টতা আছে। অনলকে মাঝে মাঝে খুব রহস্যময় মনে হয় তার, মনে হয় ছেলেটা কী যেনো আড়াল করে রাখে । প্রেমার মনে হয়, যেনো তার খুব কাজ্ফিত কোনো বই তার হাতে দেয়া হলো ঠিকই, সে সুযোগ পেলো নেড়ে শুরু করার আগেই তা ছিনিয়ে নিলো কেউ । ভিতরে কী ছিলো তা আর জানা হলো না। একটা পত্রিকায় নিয়মিত লেখে প্রেমা। সাহিত্য অঙ্গনে তার লেখা নিয়ে আলোচনা হয়৷ বোদ্ধাদের কাছে বড় এক সম্ভাবনার নাম প্রেমা । অনল মূলত প্রেমাকে চেনে তার লেখা দিয়েই। একদিন এক সাহিত্য সভায় উপস্থিত হয়ে প্রেমাকে আবিষ্কার করে সে। প্রেমা প্রথম দিকটায় খুব একটা গুরুত্বের সাথে নেয়নি অনলকে । ওর মতো কতোজনই তো প্রতিদিন এসে বলে আমি আপনার লেখার অনুরাগী । কিন্ত অনল এসেছিলো অন্যভাবে । তার বাবার বিশাল এক ছবি বীধিয়ে নিয়ে এসছিলো প্রেমাকে উপহার দেবে বলে । সেই ছবি উপহার পেয়েই প্রেমাকে কী এক মোহ পেয়ে বসে । এতো বিদুষী একটা মেয়ে সাত-পাচ না ভেবে নিজের জীবনে জড়ায় অনলকে । জীবনে সব ঘটনাই
যদি হিসাব করে ঘটাতে হয় তাহলে জীবন চমক দেয়ার সুযোগ পাবে কী করে, অনল বিষয়ে প্রেমার ব্যাখ্যাটা এমন । অনল আর প্রেমার প্রেমটা একেবারেই নির্বর্চাট, কোনো অনিশ্চয়তা নেই। কোনো রোমাঞ্চ ছাড়াই কেটে যাচ্ছে ওদের প্রেমপর্ব। অনলের ব্রত সে নিজেকে আয়নায় পরিণত করবে প্রেমার।
ওর যা পছন্দ, যা অপছন্দ সবটা মিলেই প্রেমার ছাচে গড়তে চায় অনল নিজেকে । এতোটা নিশ্চিন্ত একটা সম্পর্ক প্রেমাকে ঠিক আনন্দ দেয় কিনা প্রেমা নিশ্চিত হতে পারে না । বিরহ বিচ্ছেদহীন প্রেম ওকে দেয় না কোনো কাব্য, দেয় না কোন ভাবনা । জীবনে সহনীয় মাত্রার সংকটের মধ্য দিয়ে যতোবারই প্রেমা গেছে ভর্তি হয়ে-থেছে-তার লেখার খাতা । অনলের সঙ্গে যে কয়েকবার সাময়িক সম্পর্কচ্ছেদের পরিস্থিতি এসেছে প্রতিবারই সে তা থেকে পেয়েছে সৃষ্টির কীচামাল। ওর’মধ্যকার এরকম আশ্চর্য প্রবণতার কথা সে অনলকে জানায় না। সে হয়তো তখন প্রেমার প্রেমের খাঁটিত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। অনলের মধ্যে প্রেমা ঠিক কিভাবে বিরাজ করে প্রেমা বুঝতে চেষ্টা করে। সে প্রচণ্ডভাবে বিশ্বাস করে সে-ই অনলের অভিলাষ । প্রেমার ইচ্ছে করে অনলের পৃথিবীটা ঘুরে আসতে ছদ্মবেশে । যেখানে প্রেমাকে খুশি করার বাড়তি কোনো আড়ম্বর থাকবে না। অন্য কোনো পরিচয়ে প্রেমা জেনে নেবে অনলের কাছে সে কী । প্রেমা জানে শুধু মেয়েরাই নয়, ছেলেরাও রহস্য বলয়ের মধ্যে নিজেদের রাখতে ভালোবাসে । প্রেয়সীর কাছে নিজের আদ্যোপান্ত উন্মোচন করার মতো নির্বুদ্ধিতা অনেক ছেলেই করে না। প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরেই অনল গল্পের ঝুলি খুলে বসে প্রেমার সাথে । নিজের রোজনামচার গল্প একটু বেশিই বিশদে শোনায় অনল । শুনতে বেশ উপভোগ করে প্রেমা। সবটুকু যে সত্য শুনছে না সেটুকু মেনে নিয়েই গল্প শোনে অনলের। অনল অনেক বলে, তবে প্রেমার ধারণা অনল ঠিক সেটুকুই বলে যেটুকু দিয়ে একটা নিরাপদ আড়াল তৈরি করে রাখা সম্ভব।