সাম্ভালা Pdf Download – samvala bangla book pdf
বইয়ের নাম: সাম্ভালা ট্রিলজি pdf (এক রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা)(সাম্ভালা ট্রিলজি);
লেখক: শরীফুল হাসান;
প্রকাশক: বাতিঘর প্রকাশনী;
ধরন: থ্রিলার
বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রামের মধ্যে অতি সাধারন এক গ্রাম।কাহিনীর শুরু হয় সেখান থেকেই।কিন্তু এই অসাধারন কাহিনী আটকে থাকেনি ঐ সাধারন গ্রামে।আটকে থাকেনি সময়ের বেড়াজালেও।বাংলাদেশের নানা জায়গা থেকে বিশ্বের নানা স্থানে পৌঁছে গেছে কাহিনীর পরিধি,পৌঁছে গেছে বর্তমান থেকে সুদূর অতীতে।
কাহিনী সংক্ষেপ:
একটি শব্দ-যাকে ঘিরে আবির্ভূত হচ্ছে রহস্য।“সাম্ভালা”।কি এই সাম্ভালার অর্থ?এটা কি কোন জিনিসের নাম?কোন জায়গার নাম?কোন মানুষের নাম?কোন জাতির নাম? নাকি অন্য কিছু!বেশ কিছু মানুষ নেমেছে এই সাম্ভালার খোঁজে।তবে প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য ভিন্ন।
সাম্ভালা-
অদ্ভুত এক লোক।হাজার বছর ধরে পথ চলছে সে।অন্যদিকে এক শয়তানের সাধক আর তার একনিষ্ঠ বাহিনী।আর সাধারণ ছেলে রাশেদ।নিজ বন্ধুকে হত্যার মিথ্যা অভিযোগে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে।পিছনে লেগেছে পুলিশ।শুধু পুলিশ নয় তার বন্ধুকে যারা মেরেছে তারাও তাকে খুঁজছে।
সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা-
হাজার বছরের পরিব্রাজক নেমেছেন সাম্ভালার সন্ধানে।তার পিছে লেগেছে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।আবার ডঃ কারসন এবং ডঃ আরেফিনও নেমেছেন সাম্ভালার খোঁজে।অন্যদিকে রাশেদের যেন বিপদ পিছু ছাড়ছে না।জড়িয়ে পড়েছে গুপ্তধন উদ্ধারে।বন্ধুকে বাঁচাতে হলে তাকে খুঁজে বের করতেই হবে ঐ গুপ্তধন।
সাম্ভালা শেষ যাত্রা-
সাম্ভালার খোঁজে তিব্বতে এসে উধাও ডঃ আরেফিন।তাকে খুঁজে বের করতে বন্ধুকে নিয়ে রাশেদও হাজির হল তিব্বতে।কিন্তু সে জানেনা তাদের পিছনে পিছনেই চলেছে বিপদ।পরিব্রাজক লখানিয়া সিংও আছেন সাম্ভালার খোঁজে।কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বীও তার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই।
এই সিরিজটি পড়ার সময় বা পড়া শেষে প্রথম যে ভাবনাগুলো মাথায় আসে তার মধ্যে অন্যতম হল এই সিরিজটাকে কোন জেনারে ফেলা যায়।কখনো মনে হবে ফ্যান্টাসি,কখনো এডভেঞ্চার।আসলে এই সিরিজটি ফ্যান্টাসি,অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার,থৃলার,গুপ্তধন,সিক্রেট সোসাইটি সব কিছুর সংমিশ্রণের একটি অনন্য উদাহরণ।অনেক সময় এতকিছু একত্রে আনতে গিয়ে অনেক লেখক একটা জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেন।কিন্তু এক্ষেত্রে লেখক বিন্দুমাত্র ভুল করেননি।সব মিলিয়ে একটি চরম উপভোগ্য লেখা উপহার দিয়েছেন।
লেখক শরীফুল হাসান এর কয়েকটা গল্প পড়া ছিল শুধু,যেগুলো মূলত থৃলার গল্প সংকলন ১,২ এ ছিল।সেই গল্পগুলো পড়ে ভাল লেগেছিল।আর সাম্ভালা সিরিজের কথা যে কতবার বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছি,কত প্রশংসা শুনেছি তার ইয়ত্তা নেই।তাই সব মিলিয়ে সাম্ভালা পড়ার জন্য বেশ আগ্রহ ছিল।এখন পড়ার শেষে বলতে পারি বিন্দুমাত্র হতাশ হতে হয়নি।
শরীফুল হাসান এর প্রথম মৌলিক উপন্যাস সাম্ভালা।আর প্রথম লেখাতেই তিনি যে জটিল প্লট নিয়ে কাজ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।আসলে এধরনের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের কোন লেখকই আগে লেখেননি।তিনিই প্রথম লিখেছেন।আর কাহিনীর পরিধিও সুবিশাল।একসাথে অনেকগুলো ঘটনা তিনি বর্ননা করে গিয়েছেন।অনেকগুলো চরিত্রের কথা পাশাপাশি বলেছেন।এক কথায় বলতে তিনি একটি বহুস্তরবিশিষ্ট কাহিনী আমাদের শুনিয়েছেন।ভাবতে অবাক লাগে এতসব ঘটনা,চরিত্র তিনি কিভাবে মাথায় রেখে লিখেছিলেন।আমি মাঝেমাঝেই সময়,কাল,চরিত্রের খেই হারাচ্ছিলাম।কিন্তু তিনি খেই হারাননি।যথেষ্ট দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে কাহিনীকে এগিয়ে গিয়েছেন পরিণতির দিকে।
সাম্ভালা প্রথম পর্বে লেখকের লেখনী কিছুটা দুর্বল বলা চলে।কিন্তু দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রার ক্ষেত্রে তা বলা যাবেনা।দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় এসে লেখকের লেখার ভাষা পেয়েছে সাবলীলতা,প্রাঞ্জলতা,আর কাহিনী পেয়েছে গতি।প্রথম পর্বে এছাড়াও তিনি সময় ব্যাবধানে কিছুটা ভুল করেছেন।যেমন এক জায়গায় দেখা যায় একদিনের মধ্যেই তিনি প্রথমে সকালের ঘটনা লিখে,তারপর রাতের ঘটনা লেখার পর আবার ফিরে গিয়েছেন দিনের ঘটনায়।
সিরিজটিতে একই সাথে ঘটে চলেছে অজস্র ঘটনা।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটনাগুলোর পিছনে যে যুক্তি,যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট দুর্বল মনে হয়েছে।কোন কোন ক্ষেত্রে কোন ব্যাখ্যাই দেওয়া হয়নি।যেমন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি রাশেদ কিভাবে তিন তিনবার তিনতলা থেকে লাফ দিয়েও অক্ষত থাকে।শেষবার অবশ্য একটু পা মচকেছিল!সিরিজের আরেকটি খামতির জায়গা হল কিছু কিছু জায়গায় ডিটেইলিংস এর অভাব।
যেমন প্রথম পর্বের এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ সি.এন.জি তে।তাকে ধাওয়া করা হয়েছে।কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে রাশেদ সেখান থেকে রক্ষা পেয়েছে।কিন্তু কিভাবে পেয়েছে সে সম্পর্কে শুধু বলা হয়েছে সি.এন.জি চালকের দক্ষতায় সে বেঁচেছে।আর কিছু বলা হয়নি।
যে ব্যাপারটা পুরো সিরিজে সবচেয়ে চোখে লেগেছে তা হল বেশকিছু অসঙ্গতি।আর অবাক করার ব্যাপার হল প্রথম পর্বে এগুলো খুবই কম ছিল,দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছিল।আমি সবগুলো বলতে গেলে হয়ত স্পয়লার হয়ে যাবে।তাই শুধু ৩ টি উদাহরণ দিচ্ছি।দ্বিতীয় যাত্রার ১৭১-১৭২ পৃষ্ঠা পড়ার সময় এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ মোবাইল বের করে সময় দেখছে।পরের মুহূর্তেই দেখা যাবে সাথে মোবাইল না থাকায় সে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না!!আর বইটির বেশকিছু জায়গায় বিনোদ চরিত্রটিকে আকাশ বলা হয়েছে।আবার শেষ যাত্রায় কিছু জায়গায় একটি চরিত্রের নাম কখনো চরনদাস কখনো রামচরন বলা হয়েছে।
এসব মাইনাস পয়েন্ট দেখে মনে হতে পারে বইটা আমার ভাল লাগেনি।কিন্তু আগেই বলেছি বইটা আমার ভাল লেগেছে,সত্যি বলতে কি দুর্দান্ত লেগেছে।আর এই মাইনাস পয়েন্টগুলো সংখ্যায় নগণ্য।বইটির প্লাস পয়েন্টই বেশি।বইটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল আপনি একবার পড়া শুরু করলে শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য।আপনি প্রথম পর্ব শেষ করলে এটি আপনাকে বাধ্য করবে দ্বিতীয় পর্ব হাতে না আসা পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে।বাধ্য করবে হাতে আসা মাত্র পড়া শুরু করতে।
ট্রিলজিটি সব মিলিয়ে ৮০০ পৃষ্ঠার মত।আমি প্রত্যেকটি বইই এক বসায় শেষ করেছি।কারন একবার শুরু করার পর না শেষ করে উঠতে ইচ্ছে করছিল না।লেখক প্রায় পুরো সময়ই রহস্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।কেউ প্রথম পর্ব শেষ করার পর বিন্দুমাত্র ধারনা করতে পারবে না দ্বিতীয় পর্বে কাহিনী কোনদিকে এগোবে।তবে প্রথম দুইটি পর্ব পড়ার পর মনে বেশ কিছু প্রশ্ন জাগে।ট্রিলজিটা শেষ হবার পর অনেক প্রশ্নের যেমন যথাযথ উত্তর মিলেছে,তেমনি পাওয়া যাবে না জানা অনেক প্রশ্নেরই উত্তর।
সাম্ভালা PDF – শরীফুল হাসান | সাম্ভালা ট্রিলজি | সাম্ভালা সিরিজ ( অখণ্ড সংস্করণ ) | Samvala Trilogy by Shariful Hasan