কাল পুরুষ উপন্যাস পিডিএফ Download 💖
Book: kalpurush by samaresh majumdar pdf || কাল পুরুষ উপন্যাস পিডিএফ
বই | কালপুরুষ |
লেখক | সমরেশ মজুমদার |
প্রকাশনী | আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) |
ফাইল ফরমেট | পিডিএফ ডাউনলোড |
Edition | 1st Edition, 1985 |
Number of Pages | 431 |
Country | ভারত |
Language | বাংলা |
কালপুরুষ বইটা সমরেশ মজুমদারেউপন্যাসর ধারাবাহিক বই। ৩ টা বই নিয়ে এই সিরিজ। উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ এই সিরিজের তিনটা বই। কালপুরুষ এই সিরিজের শেষ বই। যদিও পড়া শেষের পর মনে হচ্ছিল আরও কিছু থাকলে ভাল হত। এরপর কি হবে জানার খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। ভাল বই এটাই একটা গুণ “শেষ হয়েও মনে হয় না যে শেষ ” । আমি এই সিরিজের তিনটা বই বই পড়ছি। তিনটাই অস্থির লাগছে। সিরিজগুলো লেখক এমনভাবে লিখেছে আগের সিরিজটা না পড়লেও বুঝা যাবে। তবে পড়া থাকলে আরও ভাল।
বই এর শুরু হয়, ঈশ্বরপুকুর লেনের প্রেম কাহিনী দিয়ে। অনুপমা ও তার প্রেমিক দেখা করা নিয়ে শুরু। যদিও আসল নায়ক নায়িকা এরা নয়। গল্পটা মূলত নায়কনির্ভর। অর্ক নায়ক। নায়িকা নাই বললেই চলে। অর্ক আগের সিরিজের নায়ক-নায়িকা অনিমেষ-মাধবীলতার ছেলে।
প্রথমটা শুরু হয়েছে একটা দুঃখজনক কাহিনী দিয়ে। অনুপমার প্রেমিকার সাথে দেখা করার কথা, মোক্ষদা বুড়ি অনুপমা মাকে বলে দেয়। অনুপমার মা এসব শুনে বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। অসুস্থ হয়ে যায়। তারপর হসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়,সেই দিনেই মারা যায়।
অনিমেষ পঙ্গু হয়ে সব সময় ঘরের মধ্যেই থাকে। পুলিশ তাকে পঙ্গু বানিয়েছে নাকশাল করার অপরাধে। মাধবীলতা একটা স্কুলে মাস্টারি করে। তাছাড়া টিউশানি করায়। সেই টাকা দিয়েই তাদের তিন জনের সংসার চলে। তাছাড়া অনিমেষ সুস্থ করতে প্রচুর টাকা খরচ করে। কিন্তু অনিমেষ তেমন সুস্থ হইতে পারে না। অনিমেষের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ঋণ করতে হয়। মাধবীলতা নিজেকে পরিবারের জন্য উজাড় করতে থাকে।
অনুপমার তিনটি ভাই আছে। ২ টা খুব ছোট বাচ্চা। যারা মায়ের মারা যাওয়াও বুঝে না। আর একটা নাম ন্যাড়া। বাবা হরিপদ। হরিপদের মড়া পোড়ানোর মত টাকা নাই। অর্ক ও ঈশ্বরপুকুর লেনের খুরকি, কিলা, বিলু , কোয়া ও ন্যাড়া টাকা তুলতে এলাকার টাকাওলা মানুষের কাছে চাঁদা তুলতে যায়।
কোয়া, খুরকি গাঁজা খাই, সিনেমার টিকেট ব্ল্যাকে বিক্রি করে। অবৈধ ব্যবসা করে, মাস্তানি করে। আর খিস্তি করে বেড়াই। সতীশ সি পি এমের লোকাল সেক্রেটারি। নুকু ঘোষ কংগ্রেস করে। অর্ক চাঁদা তুলার ক্যাশিয়ার। মড়া শ্মশানে পোড়ে ,চাঁদার টাকা দিয়ে খাওয়াদাওয়া করে। তারপরও কিছু টাকা অর্কের কাছে থেকে যায়। সেইদিন বাড়ি ফিরতে দেরি যায়। পথের মধ্যে বিলাস সোম পরিচয় হয়। বিলাস সোম স্ট্রীট গার্ল মিস তৃষ্ণা কাছ থেকে ফিরতেছিল। পথেরমধ্যে বিলাস ভদ্রলোকের গাড়ি নষ্ট হয়। অর্ক সেই গাড়ি ঠেলে দিলে গাড়ি স্টার্ট নেয়। পড়ে বিলাস অর্কে গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়িটি দুর্ঘটনা হয়। বিলাস আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অর্কের তেমন কিছু হয় না। অর্ক বিলাসের গাড়ি থেকে সোনার হার পায়।
অর্কের পড়াশোনা করতে ভাল লাগে না। সারাদিন রকে আড্ডা দায়। খিস্তি করে বেড়াই। বাবার সাথে সরাসরি অনেক কথা বলে। যা ছেলে হিসাবে বাবাকে বলা উচিত না। বিলুর সাথে ব্ল্যাক টিকেট ব্যবসা শুরু করে। অর্ক বিলাস সোমের বাড়ি গিয়ে তার দুর্ঘটনা কথা বলতে যায়। বিলাস সোমের স্ত্রী সুরুচি অর্ক নিয়ে হাসপাতালে যায়। বিলাশ সোম সোনার হারের কথা জিজ্ঞাস করতে অর্ক স্বীকার করে নেয়।
ঈশ্বরপুকর লেন বস্তি এলাকা। টাকার অভাবে মাধবীলতা এইখানে থাকে। এইখানে সি এম ডি পানির একটামাত্র ব্যবস্থা করে। সেইখানে পানির জন্য সিরিয়াল দিয়ে থাকতে হয়। পাড়াই ইচ্ছামত মদ, গাঁজা ,চোরাচালান , খিস্তি চলে। অশ্লীল কথাবার্তা জোরে জোরে সবাই বলে।
অর্ক সোনার হারটি হারিয়ে ফেলে। ঝুমকি সেই হার পায়। হারটি মিস তৃষা কাছে বেচে দেয়। হার খুঁজেতে গিয়ে অর্ক নিষিদ্ধ পিল্লিতে যায়। যেখানে ঝুমকি নিয়িমত দেহ বিক্রি করত। অর্ক এই পল্লি সম্পর্কে জেনে যায়। আর এই বিলাস সোমের মতো ভদ্রলোকেরা নিয়িমিত আসত।
প্রিয়তোষ অনিমেষের চাচা। মস্কোতে থাকে। ইন্ডিয়া এসে অনিমেষকে খুঁজে বের করে। অনিমেষের দুরবস্থা দেখে সাহায্য করতে চায়। কিন্তু অনিমেষ, মাধবীলতা কেউ সেই সাহায্য নেয় না। অনিমেষের আন্দোলনের সাথী সুদীপ মন্ত্রী হয়ে গেছে। সুদীপের কাছ থেকেও একটু সাহায্য নিতে চায় না। পরমহংস অনিমেষ ও মাধবীলতা দুজনের ইউনিভার্সিটির বন্ধু। তার সাথে ভাল সম্পর্ক বজায় থাকে। পরমহংস তাদের ছোটখাটো অনেক সহযোগিতা করে।
বাসের মধ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে। অর্ক একটা ঝামেলায় পড়ে। অর্ক ঊর্মিমালা মেয়েকে উত্ত্যক্তকারীদের হাত থেকে বাঁচায়। সেইজন্যই ঊর্মিমালা ও তার পরিবারের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। ঊর্মিমালাকে অর্কের খুব ভাল লাগে। ঊর্মিমালা ভাল ছবি আঁকতে পারে, বই পড়তে ভালবাসত। অর্ক ভালোবাসার কথা বলার সাহস পায় না। ঊর্মিমালার তুলনাই নিজেকে অযোগ্য মনে করে।
বড়লোক মহিলাদের টাকা থাকলেও শান্তি নাই। সেটা অর্ক সুরুচি বাসায় গিয়ে আরও কিছু মহিলাদের ব্যবহার দেখে বুঝতে পারে। তাদের আচার-আচরণ দেখে ২-১ মধ্যে অর্ক বেশ অসুস্থ হয়ে যায়। মাধবীলতা বুঝতে পারে , অর্ক এই পাড়াই থেকেই দিনদিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। খুরকি ও কিলা পরস্পরকে শেষ করে দেয়।