Jafar iqbal Books

অপারেশন নীলাঞ্জনা Pdf Download মুহম্মদ জাফর ইকবাল

operation nilanjona pdf muhammod zafar iqbal | অপারেশন নীলাঞ্জনা মুহম্মদ জাফর ইকবাল Pdf Download link-

বইয়ের নাম: অপারেশন নীলাঞ্জনা
লেখকের নাম: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
ক্যাটাগরি: কিশোর উপন্যাস
ফাইল ফরম্যাট: Pdf free Download(পিডিএফ ডাউনলোড)
প্রকাশনী: অনুপম প্রকাশনী
১ম প্রকাশঃ 2021 সাল
মোট পেজ সংখ্যাঃ 120 পৃষ্ঠা

 

আমি ওদের সবার কষ্ট বুঝি তবে কারো জন্য কিছু করতে পারি না। প্রতি রাতেই শুয়ে ভাবি, আমার যদি অনেক টাকা থাকত তাহলে মা আর ভাইবোনকে কোন কাজ করতে দিতাম না। ওদের সব কষ্ট দূর করে দিতাম। আমার মনের ভাবনাগুলি মনেই থাকে । দুঃখ-কষ্ট, অভাব-অনটন আর হাজারো সমস্যা নিয়ে দিন কাটতে থাকে। একদিন বাসায় ফিরে দেখি রিমি নেই। নেই তো নেই, কোথাও নেই। অনেক খৌজাখুঁজির পরও রিমিকে পেলাম না।

মায়ের মনের কষ্ট বুঝতে পারছিলাম কিন্তু সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তখন আমার বয়স তের অথচ মনে হচ্ছিল আমার বয়স তেইশ। বাবার ফেলে যাওয়া এই সংসারের জন্য আমার কিছু করা উচিত। নিজে পড়ালেখা করতে পারি নাই বলে ভাইগুলিও লেখাপড়া করতে পারবে না তাতো হতে পারে না।

যেভাবে হোক ভাইগুলিকে মানুষ করতে হবে। বাসায় থেকে ওরা দিন দিন খারাপ পথে যাচ্ছে বুঝতে পেরে মায়ের সাথে পরামর্শ করে দু’জনকেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেই। মা আর আমি যে যার মত কাজে চলে যাই। সঙ্জু-মঞ্জু বাসায় থেকে লেখাপড়া করে আর বাসার টুকটাক কাজ করে। কিছুদিন যাওয়ার পর. খেয়াল করলাম, সন্তু আর আমাদের আগের সঙ্তু নেই। সে নিয়মিত বিডি-সিগারেট খায়। মাঝে মাঝে বোধ হয় গাজাতেও টান দেয়। বস্তি এলাকায় থাকি বলেই এমনটা হচ্ছে বুঝতে পারছিলাম । কিন্তু টাকার অভাবে বাসা পরিবর্তন করতে পারছিলাম না। ভাইদের মানুষ করতে গেলে একটু ভাল পরিবেশের দরকার মনে করে অন্য কিছু না ভেবে আমার মালিকের আলমারিতে হাত দেই। চুরি করে নিয়ে আসি বেশ কিছু টাকা । আমি বাসায় পৌছার আগেই পুলিশ পৌছে যায়। টাকা সহ হাতেনাতে ধরে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি জেলে কাটাই কিছুদিন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে দেখি আমার ভালবাসার সব মানুষ ছন্রছাড়া।

কেউ আর আগের মত একত্রে নেই। মা আবার বিয়ে করেছে, সপ্ত গুন্ডাপান্ডাদের সাথে ঘ্বুরছে আর মঞ্জু আমাকে জড়িয়ে ধরে কীদছে। মায়ের সাথে দেখা করতে গিয়ে আরো বিপদে পড়েছি। তাদের সাথে একত্রে থাকার জন্য সৎ বাবা আমাকে যত্ব করতে লাগল আর মা আমাকে দূর দূর করে তাড়াতে লাগল। সাত বছরের মঞ্জ্রর কথা শুনা ছাড়া তখন আর মাথায় কিছু আসছিল না।  আপা, আমরা এখানেই থাকি।  এতদিন তোরা ছিলি, এখন আমি থাকলে সমস্যা হবে।  সমস্যা হবে না আপা । আব্বা খুব ভালো মানুষ ।

 

অচেনা লোকটাকে কত সহজেই আপন করে নিল মঞ্জু। ওর মুখে আব্বা ডাক শুনে আমি ডুকরে কেঁদে উঠলাম । আমার কান্না দেখে মা বোধহয় কিছুটা নরম হয়েছিল তাই তাদের সাথেই আমারও থাকার জায়গা হলো। এছাড়া উপায়ও ছিল না কারণ আমার মত যুবতি মেয়ে সারাদিন কপাল ঠুকে মরলেও কোথাও একটু জায়গা 3 পেতাম না।  আপন মা আর সৎ বাবার ঘরে শুরু হয় আমার বসবাস। বেশ ক’দিন ভালই কাটছিল । মা গর্ভধারণ করাতে হঠাৎ একদিন আমার কপালে দুর্যোগ নেমে আসে । শরীর চেক-আপ করানোর জন্য মা ক্লিনিকে গেছে। সাথে মঞ্জ্ুকেও নিয়ে গেছে। সৎ বাবা বাসায়, ছিল না। আমি রান্না করছিলাম । মায়ের অনুপস্থিতিতে কোথা থেকে জানি ঝড়ের বেগে সৎ বাবা এসে হাজির হয়।

মিমি, মা একটু পানি দে তো। আমি পানি নিয়ে যাই। উনি তখন বিছানায় শুয়েছিল।  আমার শরীরটা খুব খারাপ। মা, মাথার চুলটা একটু টেনে দে তো। আমার খুব লজ্জা লাগছিল। উনি আমাকে যতই মা মা ডাকুক আসলে সে আমার আপন বাবা নয়।  মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথ্যা করছো -আমার কপালে একটু বাম’লাগিয়ে দে তো মা। পনের বছরের যুবতির যতটুকু লজ্জা,লাগার কথা বা খারাপ লাগার কথা তার চেয়েও বেশি খারাপ লাগছিল আমার । পাথরের মত দীড়িয়ে ছিলাম আমি ।  কী রে মা, দে না একটু কপালটা টিপে । সেদিন সত্বাবার কপাল টিপতে গিয়ে আমার কপালে এতবড় দুর্যোগ নেমে আসবে এটা জানতাম না। উনার কপালে হাত রাখা মাত্রই পশুর মত আচরণ করে আমাকে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয় । আধমরার মত বিছানায় পড়ে থাকি আমি।  খবরদার, কাউকে কিছু বলবি না। বললে তোকে তো মেরেই ফেলব তোর ভাই মঞ্জুকেও মেরে ফেলব। নিজের মৃত্যু নিয়ে ভয় হচ্ছিল না তবে মঞ্জুর জন্য খুব মায়া লাগছিল। মঞ্জুর কথা ভেবেই হয়তো চুপ থাকি আর আড়ালে চোখের পানি ফেলি।

কোথাও যে চলে যাব সে জায়গাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। মায়ের অনুপস্থিতিতে সতবাবার পাশবিক অত্যাচার সহ্য করেই দিন কাটাতে লাগলাম। মায়ের একটি ছেলে হয়। বেশ হাসি-খুশি ভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল তার। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন আমিই মায়ের শক্র হয়ে দীড়ালাম । আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাই। আমার এই সমস্যার কথা কারো বুঝতে দেরি হল না।

অপারেশন নীলাঞ্জনা Pdf Download: Click here

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!