রমাপদ চৌধুরী গল্প সমগ্র Pdf Download (All)
ওকে কিছু দারুণ বই নিয়ে এসেছি আপনার জন্য Romapod Chowdhury pdf Download – রমাপদ চৌধুরী গল্প সমগ্র pdf Download free
গল্পসমগ্র Pdf Download by রমাপদ চৌধুরী Golpo Somogro pdf Romapod Chowdhury
প্রেম Pdf Download রমাপদ চৌধুরি Prem Romapod Chowdhury pdf
Romapod Chowdhury
উপন্যাস সমগ্র ১ Pdf Download রমাপদ চৌধুরি Upannas Samogro 1 Pdf Download Romapod Chowdhury
Romapod Chowdhury Books
আমার বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠলো । অথচ ওর সঙ্গে এ ব্যাপারটার কি সম্পর্ক ! একজন অজ্ঞাতকুলশীল মানুষ । ভদ্রলোকের মুখ ও কোনদিন দেখেছে কিনা জানে না। ভদ্রলোক যে এ পাড়ায় ছিলেন তাও জানতো না, এবং জানার কোনদিন প্রয়োজনও হয় নি । হয়তো এই মুহুর্তে কে দেখতে পেলে মনে পড়তো কোনদিন আসা-যাওয়ার পথে দেখেছে কিনা । হতে পারে এই রাস্তায়, কিংবা দোকানে-বাজারে ওঁকে প্রায়ই দেখতে পেত । কিন্তু ভিড়ের মধ্যে সকলেই আছে, শুধু ভদ্রলোক নেই । থাকলেও বোধহয় চিনতে পারতো না, কারণ খুব হাঁটাচলার পথে চোখ তুলে বড় একটা কারও মুখের দিকে তাকায় নাযা লোকজনকে এড়িয়ে চলাই ওর চরিত্র ৷ পাড়ার কেউ ডেকে দু’একটা কথা বলতে চাইলেও হাটা না গোছের ক্ষুদ্র বাক্যে ভদ্রতা সারে, বড় জোর মুখে একটু স্মিত হাসি । ওটুকুও বানানো সৌজন্য । আসলে মানুষকে এড়িয়ে চলাই ওর অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে, অথচ লোকে ভাবে এটা ওর অহঙ্কার | ধুব নিজের মনেই হাসে, যখন আত্মীয়স্বজন কেউ এসে তেমন একটা অভিযোগ করে । কি নিয়ে অহঙ্কার করবে ও, কি আছে অহঙ্কৃত হবার মত। লোকটির কোন পরিচয়ই যে জানতো না, তাও এই স্বভাবের দোষে । ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ধুব হনহন করে বাড়ি ফিরছিল, কিছুটা দেরি হয়ে গেছে বলে, কিছুটা চড়া রোদ্দুরের জন্যে । এই গলি দিয়ে এলে পথ অনেকখানি সংক্ষেপ করা যায়, তাই এদিক দিয়েই ওর যাতায়াত । বাস থেকে নেমে বকুলবাগানের বাড়িতে পৌঁছতে সময়ও লাগে, অনেকখানি হাঁটতেও হয়। হনহন করে হেঁটেই আসছিল | হঠাৎ থমকে দাঁড়ালো ৷ নিছক কৌতুহল ছাড়া তখন আর কিছুই ছিল না। শুধু পথচারী দু’একজনের মুখের দিকে তাকালো, তাদের চোখেও কৌতুহল ।
ডানদিক থেকে আরেকটা রাস্তা বেরিয়ে গেছে, সেটুকু পার হওয়ার সময়েই ওর হঠাৎ চোখে পড়লো । সামান্য কিছু লোকজন ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তা দেখে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ার মানুষ ও নয় ।
গীত মত জলা বাতির হি পরার চে করে তা: বরং এসব এড়িয়েই যায় । কিন্তু ওকেও থমকে চু্বকের মত একটা আকর্ষণে ও এগিয়ে গেল। কার: শাটার দিকে চোখ পড়তেই ওর বুকের ভিতরটা ধক্ করে উঠেছে । আকম্মিক কোন
ভয় যেন মুহূর্তে ওকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। দ্রুত পায়ে ও সেদিকে এগিয়ে গেল। এ রাস্তায় ফুটপাথ নেই বললেই চলে, তবে রাস্তাটা গলির মত নিতান্ত সরু নয় । তারই অর্ধেক জুড়ে স্তুগীকৃত হয়ে পড়ে আছে একটি সংসারের যাবতীয় আসবাব 1 কেউ যেন ঘৃণা আর তাচ্ছিল্যে ছুঁড়ে ছুঁড়ে বের করে দিয়েছে। খাট, আলমারি, ড্রেসিং টেবল,বুক কেস। ব্রিভঙ্গ হয়ে পড়ে আছে নারকেল ছোবড়ার় পুরু গদি । আর চারপাশ থিরে বালতি, মগ, হাঁড়িকুড়ি, রাশি রাশি মসলাপাতির কৌটো । একটা পুরোনো টিন টলে পড়েছে, তা থেকে গড়িয়ে পড়ছে সরষের তেল । একজন কে গিয়ে সেটা সোজা করে বসিয়ে দিল। ধুব ততক্ষণে ভিড়ের ফাঁকে উকি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে । ওর বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠলো | নিজেরই মনে হ’ল ওর মুখ কি এক অজানা আতঙ্কে বিবর্ণ হয়ে গেছে। সেই মুখ অন্যকে দেখাতেও যেন ভয়। বিস্ময়ের চোখে ও তন্ন তন্ন করে জিনিসগুলোর ওপর দৃষ্টি বুলিয়ে যাচ্ছিল। অস্ফুটে বলে উঠলো, ইস্ ! এক কোণে একটা তোলা উনোন, কেউ জ্বলন্ত উনোনে জল ঢেলে দির তা জাল্গোলে ছিরে লাদেন এ তরিতরকারি, আ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়িটা কাত হয়ে পড়ে আছে, তা থেকে ভাত গড়িয়ে পড়েছে ফুটপাথে ।
রমাপদ চৌধুরী এর বই গুলো কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না।